শনিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

রুয়েট থেকে বহিষ্কার হলেও রোকেয়ার ভিসি বলছেন ‘ভালো ছেলে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) বিতর্কিত ও অযোগ্য এক প্রার্থীকে নির্বাহী প্রকৌশলীর পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য উপাচার্য পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই প্রার্থীর নাম জাহাঙ্গীর আলম। তাকে ২০০৯ সালের ২২ জুলাই রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) থেকে অপসারণ করা হয়েছিল। অভিযোগের ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম নুর উন নবী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘জাহাঙ্গীর ভালো ছেলে।’ অতীতের আবেদনে অভিজ্ঞতা ও অভিজ্ঞতা সনদে সামঞ্জস্য না থাকায় আবেদন বাতিল হওয়া এবং বর্তমানে প্ল্যানিং কমিটির মিটিং না দিয়ে তাকে নিয়োগের চেষ্টা করছেন কি-না এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি। জানা গেছে, নিয়ম অমান্য করে আবেদন যাচাই-বাছাই ছাড়াই আজ সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে ওই প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি উপাচার্যের এমন কর্মকাণ্ডে নাখোশ। সমিতির সভাপতি আর এম হাফিজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছেন, বিতর্কিত ও অযোগ্য এ প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে উপাচার্য কেন উঠেপড়ে লেগেছেন তা আমরা জানি না। তিনি বলেন, সামনে ভর্তি পরীক্ষা। তাই ক্যাম্পাসে কোনো আন্দোলন করে উত্তপ্ত করতে চাই না। তবে উপাচার্য যদি এ নিয়োগ থেকে সরে না আসেন তবে আমরা ইউজিসিতে লিখিতভাবে অভিযোগ জানাব। পরবর্তীতে বড় কর্মসূচি দেওয়া হবে। এ আন্দোলন কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা বলা দায়। তিনি আরও উল্লেখ করেন, রুয়েট থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম কীভাবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পান এ প্রশ্নের উত্তর জানা নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষক নেতা জানান, উপাচার্য যদি নিজ ইচ্ছায় অযোগ্য এ প্রার্থীকে নিয়োগ দেন তবে আমরা এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করব।

সূত্র জানায়, ইউজিসির অনুমোদিত উপ-প্রধান প্রকৌশলীর পদে জনবল নিয়োগ না দিয়ে জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়োগদানের উদ্দেশে উপ-প্রধান প্রকৌশলী পদের বিপরীতে নির্বাহী প্রকৌশলী পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় গত বছর। এ সময় জাহাঙ্গীর আলম আবেদন করেন। রুয়েটে সহকারী প্রকৌশল হিসেবে ২০০৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০০৯ সালের ২১ জুলাই পর্যন্ত কাজ করাকে আবেদনে অভিজ্ঞতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু অভিজ্ঞতার তারিখ ও অভিজ্ঞতা সনদের মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকা ও রুয়েটের চাকরির ছাড়পত্র না থাকায় তার আবেদন বাতিল করে প্ল্যানিং কমিটি। তখন উপাচার্য প্ল্যানিং কমিটিই বিলুপ্ত করে দেন। এরপর ১৪ অক্টোবর একই পদে আবারও নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এতেও আবেদন করেন জাহাঙ্গীর আলম। তবে নিয়োগের জন্য প্ল্যানিং কমিটি গঠন করা হলেও এ কমিটির কোনো মিটিং করতে দেওয়া হয়নি। জাহাঙ্গীরের আবেদন পুনরায় বাতিল হওয়ার শঙ্কায় উপাচার্য প্ল্যানিং কমিটির মিটিং ছাড়াই তাকে নিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন। জানা গেছে, আজ সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই এ নিয়োগ চ‚ড়ান্ত করা হবে। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে অযোগ্য, তুলনামূলক কম যোগ্য প্রার্থী অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগের ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ইউজিসির উচিত এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া।

সর্বশেষ খবর