মাঝেমধ্যেই পিঠে হয়। হঠাৎ করে পায়ের পেশিতে টান পড়ে। এতেও তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। তাছাড়া দ্রুত গতিতে কোনো কাজ করতে গেলেও মাঝেমধ্যে ব্যথার সৃষ্টি হয়। এসব কেন হয়? পেশি যদি বেশ কিছুদিন নিষ্ক্রিয় থাকে, তবেই এমন হতে পারে। একজন মানুষ অলস ঘরে বসে থাকলেই কেবল পেশি নিষ্ক্রিয় হয় না। এমনকি নিয়মিত অফিস করেন, পরিশ্রম করেন, এমন ব্যক্তিদের পেশিও নিষ্ক্রিয় থাকতে পারে। এর কারণ হচ্ছে, পরিশ্রম করলেও দেহের সব পেশি সেই পরিশ্রমে অংশ নেয় না। এতে শরীরের অধিকাংশ পেশিই থাকে নিষ্ক্রিয়। পেশিগুলোকে সক্রিয় রাখার প্রধানতম উপায় হচ্ছে ব্যায়াম করা। মেরুদণ্ড এবং পেটের পেশি সক্রিয় রাখার জন্য যোগশাস্ত্রে নানা ব্যায়ামের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, সুপ্ত কুর্মাসন। এ আসনটি বেশ কয়েকটি পদ্ধতিতে করা যায়।
এ আসন করার জন্য প্রথমে সামনে দুই পা ছড়িয়ে বসুন। এবার ধীরে ধীরে কোমর থেকে শরীরের ঊধর্্বাংশ সামনের দিকে নামিয়ে হাত দুটো দুই হাঁটুর নিচ দিয়ে দুই দিকে বের করে নিয়ে হাত দিয়ে দুই দিক থেকে পা দুটোকে ঘাড়ের ওপর তুলে দিন। কপাল মাটিতে লেগে থাকবে। এখন হাত দুটো পেছনের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে কোমর পেঁচিয়ে এক হাত দিয়ে আরেক হাত শক্ত করে ধরে রাখুন এবং শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০ সেকেন্ড থেকে ৩০ সেকেন্ড এ অবস্থায় থাকুন। এভাবে ২-৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজন মতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
এ আসন করার দ্বিতীয় পদ্ধতিতে প্রথমে সামনের দিকে পা ছড়িয়ে বসুন। এবার দুই হাত দিয়ে ডান পায়ের ঠিক গোড়ালির ওপর ধরে পা-টি উঁচু করে টেনে এনে কাঁধের ওপর রাখুন। একই পদ্ধতিতে বাঁ পা-টিও এনে কাঁধের ওপর রাখুন। এ অবস্থায় দুই হাতের তালুর ওপর ভর করে আস্তে আস্তে দেহটাকে যতটুকু সম্ভব ওপরে তুলুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০ সেকেন্ড থেকে ৩০ সেকেন্ড এ অবস্থায় থাকুন। এভাবে ২-৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজন মতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
এ আসন নিয়মিত অভ্যাসে শরীরের সব অংশের কম-বেশি উপকার হয়। মেরুদণ্ড ও পেটের জন্য বিশেষ উপকারী। আসনটি অভ্যাস রাখলে মেরুদণ্ডের হাড়ের সংযোগস্থল নমনীয় থাকে এবং মেরুদণ্ড সংলগ্ন স্নায়ুমণ্ডলী ও দুই পাশের পেশি সবল ও সক্রিয় থাকে। পেট ও কোমরের অপ্রয়োজনীয় মেদ কমিয়ে দেহের গড়ন সুন্দর করে।
তবে এ আসন করার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে যাদের হার্নিয়া বা এপেন্ডিসাইটিস রোগ আছে এবং যারা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন, রোগ নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এ আসন করা উচিত নয়। আর যাদের প্লীহা, যকৃত রুগ্ন বা অত্যধিক বড়, তাদের অতি সতর্কতার সঙ্গে আসনটি করা উচিত। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ না নিয়ে ঝুঁকি নেওয়া ঠিক নয়।