প্রথম ইনিংসে পুল খেলতে ফাইন লেগে আলতো ক্যাচ দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। টাইগার সহ অধিনায়কের ক্যাচটিকে মার্জনা করতেই পারেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে? রঙ্গণা হেরাথকে অযথা 'ডাউন দ্য উইকেট' খেলে গালিতে যেভাবে ক্যাচ অনুশীলন করান এই বাঁ হাতি ওপেনার, তাতে বিস্মিত হওয়া ছাড়া আর কিছুই বলার নেই। দেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটারকে দুই ইনিংসে এমনভাবে উইকেট বিলাতে দেখে প্রশ্ন উঠেছে তার কমিটমেন্ট নিয়ে। অন্য টেস্ট খেলুড়ে দেশ হলে হয়তো ভিন্ন পথে হাঁটতো। কিন্তু বাংলাদেশ বলেই ভিন্ন কিছু ভাবছেন না টিম ম্যানেজম্যান্ট। কাল মিডিয়ার মুখোমুখিতে একাদশে তামিমের জায়গা নিয়ে কথা উঠতেই প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে ফেলেন টাইগার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। অবশ্য ইঙ্গিত দিয়েছেন একাদশে একাধিক পরিবর্তনের। সে হিসেবে মার্শাল আইয়ুবের জায়গায় ইমরুল কায়েশ ও রবিউল হোসেন শিবলুর পরিবর্তে ব্যাটিং গভীরতা বাড়াতে দেখা যেতে পারে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে। রবিউলকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে কব্জির ব্যথার জন্য।
মিরপুরে মাত্র সাড়ে তিন দিনে ইনিংস ও ২৪৮ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। ব্যাটিং উইকেটে বাড়তি ব্যাটসম্যান না খেলিয়ে তিন পেসার খেলানোয় তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হয় টিম ম্যানেজম্যান্ট। মিরপুরের লজ্জা এড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয় প্রাণহীন উইকেটের। যেখানে থাকবে না বাড়তি বাউন্স। সুবিধা পাবেন স্পিনাররা। চট্টগ্রামের উইকেট দেখে সে রকমই মনে করেছেন টাইগার অধিনায়ক, 'চট্টগ্রামের উইকেটে সব সময়ই লো বাউন্স থাকে। এবারও আশা করছি কম থাকবে। এছাড়া এখানে বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন স্পিনাররা। এবারও পাবেন। এখানে সাকিব, সোহাগের ভালো রেকর্ড রয়েছে।' টাইগার অধিনায়কের মন্তব্যই পরিষ্কার করে দিয়েছে তিন পেসারের একজনকে সাজঘরে বসে থাকতে হবে। কিন্তু কে সে?
মিরপুরে তিন পেসারের মধ্যে উইকেট পেয়েছেন আল-আমিন। দুর্ভাগ্য সঙ্গী না হলে উইকেটের সংখ্যা আরও বাড়তে পারতো। ৩২ ওভারের স্পেলে ১১৮ রানের খরচে উইকেট নেন একটি। বাকি দুই পেসারের একজন রুবেল হোসেন ২০ ওভারে রান দেন ৮৪ এবং রবিউল হোসেন শিবলু ২৯ ওভারের রান দেন ১০৯। এই তিন পেসারের মধ্যে ইনজুরির জন্য রবিউলকে বসে থাকতে হচ্ছে। তার জায়গায় লেট মিডল অর্ডারকে শক্তিশালী করতে সুযোগ পেতে পারেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। অবশ্য এক পেসার নিয়েও খেলতে পারে মুশফিকবাহিনী। তাহলে ফিরতে পারেন বাঁ হাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক রাজকে। ওয়ান ডাউনে মার্শাল আইয়ুব টেস্ট খেলেছেন তিনটি। রান করেছেন ১২৫; সর্বোচ্চ ৪১। তবে মিরপুরে দুই ইনিংসে যেভাবে আউট হয়েছেন, তাতে তার টেস্ট খেলার মানদণ্ডে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে দ্বিতীয় ইনিংসে যেভাবে ক্যাচ দেন ব্যাকওয়ার্ড শর্ট লেগে, তাতেই অনেকটা নিশ্চিত চট্টগ্রামে তার খেলা হচ্ছে না। মিরপুরের দুই ইনিংসে তিনি রান করেছেন ১ ও ১৮। ফলে তার জায়গায় দেখা যেতে পারে ইমরুলকে। গত দুদিন ধরে দলীয় অনুশীলনের বাইরেও বাড়তি অনুশীলন করছেন ১৬ টেস্টে ৫৪৯ রান করার ইমরুল। দলের পরিবর্তন নিয়ে মুশফিক বলেন, 'দলে খুব বেশি পরিবর্তনের সুযোগ নেই। আর যদি হয়ও, তাহলে সেটা হবে সেরা কম্বিনেশন। অবশ্য তা হবে উইকেটের বিবেচনা করেই। কন্ডিশনের ওপর চিন্তা করেই আমরা একটা দলীয় পরিকল্পনা করছি, সে অনুযায়ী দল বাছাই করব।'