ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানেই খুশি। আর কর্মজীবী মানুষ এই ঈদের সময়েই একটু আনন্দ করার ছুটি পান। তবে এ বছরে ছুটিটা একুট লম্বা হওয়ায় তাদের আনন্দও একটু বেশি।
আজ থেকেই চায়ের রাজধানী প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি পর্যটন শহর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল আসতে শুরু করেছেন পর্যটকরা। ছুটি কাটাতে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অসংখ্য ভ্রমণ পিপাসুরা এখানকার রির্সোট হোটেল, মোটেলগুলোতে অগ্রিম বুকিং দিয়ে রেখেছেন।
আর এখানে আসা পর্যটকদের বরণ করতে শহরের প্রবেশমুখ মুছাই বাজারের পাশে আলীয়াছড়া পান পুঞ্জির সামনে দাঁড়িয়ে আছে চা কন্যা ভাস্কর্য। ‘চায়ের দেশে স্বাগতম’ লেখা দৃষ্টিনন্দন এই ভাস্কর্যটি ২০০৯ সালে স্থাপন করা হয়েছিল।
এই ভাস্কর্যটি শ্রীমঙ্গলে আসা পর্যটকদের শহরে প্রবেশ পথেই চায়ের শহরের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। পাহার আর হাওর বেষ্টিত এই শ্রীমঙ্গলে যতদূর চোখ যায়, সবুজে ঘেড়া উচু-নিচু টিলা, উপরে নীল আকাশ। এদিক ওদিক তাকালেই চোখে পরে সবুজ বনানী আর বর্নিল পাক-পাখালি।
অন্যদিকে পাহাড়ের চূড়া থেকে নিসৃত জলপ্রপাত-ঝর্ণাধারা, নদ-নদী, খাল-বিল আর দিগন্ত বিস্তৃত হাইল হাওরের নীল জলরাশী। চা বাগান, লেক, পাহাড়, ঘন জঙ্গল, খনিজ গ্যাসকুপ, লেবু, আনারস, পান আর আগর বাগান দিয়ে অদ্ভুত সাজানো এখানকার প্রকৃতি। যুগ যুগ ধরেই প্রকৃতির এই অপরুপ সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ করে তুলছে এখানে আসা ভ্রমণপিপাসুদের। দেশের সবচেয়ে বেশী চা বাগান এ উপজেলায় থাকায় দেশ-বিদেশে 'চায়ের রাজধানী' নামেও শ্রীমঙ্গলের পরিচিত রয়েছে।
চা-বাগানের নায়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ছাড়াও এখানে রয়েছে লাউয়াছড়া জাতিয় উদ্যান, বন্যপ্রাণী সেবা আশ্রম, ডিনস্টন সিমেট্রি, মাগুরছড়া পরিত্যক্ত গ্যাসকূপ, খাসিয়াপুঞ্জি, নির্মাই শিববাড়ি, বধ্যভূমি ৭১’র মনুমেন্ট, লেবু, আনারস ও রাবার বাগান। পর্যটকদের রাত্রিযাপনের জন্য এখানে ব্যক্তিমালিকানাধীন কয়েকটি হোটেল, রিসোর্ট, রেস্টহাউজ, কটেজ গড়ে উঠেছে। চা বাগানগুলোতেও রয়েছে কোম্পানী বাংলা। যেখানে পর্যটকরা রাত্রিযাপন করে প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে অবলোকন করার সুযোগ পান। এছাড়া রয়েছে খাসিয়া, মণিপুরী, টিপরা, উড়িয়া, সাঁওতালসহ আদিবাসীদের বৈচিত্র্যময় জীবনচিত্র।
চা বাগানে শ্রমিকদের চা পাতা তোলার কৌশল, কারখানায় চা উৎপাদন প্রক্রিয়া, এসব কিছুই যেন পর্যটকদের মুগ্ধতায় ভরিয়ে দেয়। বাগানে রয়েছে ম্যানেজারদের দৃষ্টিনন্দন বাংলো। চা বাগানগুলোর বুক চিরে বয়ে গেছে চোখ জুড়ানো লেক।
এখানে পাওয়া যাবে রমেশ রাম গৌরের এক গ্লাসে জাদুকরী সাত কালারের চা। এছাড়া শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে ডিনস্টর চা বাগানে রয়েছে ৪৬ জন বৃটিশ নাগরিকের সমাধীস্থল ‘ডিনস্টন সিমেস্ট্রি’।
গ্র্যান্ড সুলতান টি রির্সোট এন্ড গল্ফ এর এজিএম আরমান খাঁন বলেন, ঈদে তাদের ভালোই বুকিং রয়েছে। আগামী ৯ তারিখ পর্যন্ত তাদের সবগুলো রুম বুকিং হয়ে আছে।
ট্যুরিষ্ট পুলিশের এএসপি আহসনি হাবিব জানান, পর্যটকদের জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল