গায়ের রং বা অনুষ্ঠানের ধরনের উপর নির্ভর করে মেক আপ কেমন হবে। মেক আপের ক্ষেত্রে সবচে' জরুরি হলো শেড নির্বাচন। যেমন: আইশ্যাডোর রং কী হবে? পিচ, গোলাপি, ব্রাউন, রোজ, সাদা হাইলাইটার, ব্লু, হাল্কা সবুজ, বেগুনি, হাল্কা গ্রে, হলুদ হাইলাইটার—এসবের মধ্যে একটাকে বেছে নিতে হবে। ফাউন্ডেশনও গায়ের রং হিসেবে বেছে নেওয়া উচিত। কনসিলারও বাছতে হবে গায়ের রং অনুসারে। গায়ের রঙের টোন অনুসারে রং বাছতে হবে যেমন গোলাপি, না পিচ, নাকি ব্রাউন! লিপস্টিকও বাছতে হবে বুদ্ধি করে। গোলাপি, অরেঞ্জ, গোল্ড, পিচ, মেরুন, ব্রাউন রঙের মধ্যে একটা। যাতে লাউড না দেখায়। অর্থাৎ মেক আপ হবে সুন্দর, লাউড নয়।
মেক আপের কিছু নিয়ম
বিশ বছর বয়সীদের জন্য — ওয়াটার বেস মেক আপ ও কনসিলার দরকার। এটা ব্রণ বা মুখের অন্য চিহ্ন ঢাকতে সাহায্য করবে। কিন্তু খুব হাল্কা হওয়া উচিত। লিপ অবশ্য এক্সাইটিং হতে পারে।
তিরিশে —এই সময়ের ত্বকের জন্য লাইট ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা উচিত। গাল, চোখ, ঠোঁট হাইলাইট করা দরকার।
চল্লিশে — এই বয়সে ফাউন্ডেশন, কনসিলার আবশ্যিক। চকচকে উজ্জল লালিমা ফিরিয়ে দেবে ত্বকের যৌবন।
পঞ্চাশে— এই সময় ত্বক নিজস্ব রং হারায়। জৌলুস কমে যায়। তাই একটু ভারী ফাউন্ডেশন, কনসিলার, ফলস আইল্যাশ, ব্রাইট শেড ব্লাশ বেশি করে করা দরকার। আর্থ শেডের লিপস্টিক ও লিপলাইনার ব্যবহার করা উচিত।
নো-মেক আপ লুক
ইদানিং টপ ফ্যাশন হচ্ছে নো-মেক আপ লুক। কিন্তু এই মেক আপের কালার বাছতে হবে খুব সাবধানে।
- ফর্সা ত্বকের জন্য ফাউন্ডেশনে ন্যাচারাল শেড ব্যবহার করুন। শ্যামবর্ণ হলে গাঢ় বা গোল্ডেন ট্যান শেড বেছে নিন।
- গায়ের রং ও ত্বক অনুযায়ী ব্লাশার বাছতে হবে।
- আই শ্যাডোর রং হবে হালকা খয়েরি, হালকা ব্রোঞ্জ বা ধূসর।
- ন্যাচারাল কালার বা রাস্ট, খয়েরি, গোলাপি রং হতে পারে।
- গায়ের রং শ্যামবর্ণ হলে কপার মেক আপ করা দরকার।
- চোখের অর্ধাংশে ব্রাউন ও বাকি অংশে গোল্ড বা সিলভার শ্যাডো ব্যবহার করা উচিত। সঙ্গে ডার্ক ব্রাউন আই ল্যাশ লাগালে চোখ হয়ে উঠবে মোহময়ী।
- ব্রাউন ব্লাশারের সঙ্গে ব্লেন্ডার ব্যবহার করুন।
ফাউন্ডেশন
প্রথমে মেক আপ প্রাইমার লাগিয়ে তার পর ফাউন্ডেশন লাগালে মেক আপ ন্যাচারাল দেখায়। মুখে গাঢ় ও হাল্কা দু’ধরনের শেডই ব্যবহার করা উচিত।
কমপ্যাক্ট: ফাউন্ডেশনের ওপর কমপ্যাক্ট লাগালে মেক আপ অনেকক্ষণ স্থায়ী হয়।
আইশ্যাডো
- এমনভাবে আইশ্যাডো ব্যবহার করতে হবে যাতে চোখের পাতার সঙ্গে মসৃণভাবে মিশে যায়।
- এ রকম শেড সৃষ্টি করার জন্য কাছাকাছি শেডের দু’রকম রং পছন্দ করতে পারেন। বা একই রঙের গাঢ় ও হাল্কা শেড বেছে নিতে পারেন।
- ভুরুর নিচে আর ওপর পাতায় যে শেড তৈরি করতে চান সেটা সমগ্র বা অল্প অংশে ব্রাশের সাহায্যে লাগান এবং বাইরের দিকে টেনে টেনে মিলিয়ে দিন।
- নিচের পাতায় হাল্কা বা গভীর করে আইশ্যাডো লাগিয়ে চোখের কোণ বরাবর মিলিয়ে দিন।
আইলাইনার
- চোখের ওপরে ও নীচের পাতার কোল ঘেঁষে আইলাইনার লাগাতে হবে।
- সরু তুলি দিয়ে চোখের উপরের পাতার ভিতর কোণ থেকে মাঝবরাবর একটানে একটি রেখা টানুন।
- পরের টানে মাঝখান থেকে বাইরের কোণ পর্যন্ত রেখা টানুন।
- একইভাবে নিচের পাতায় রেখা টানুন। দেখবেন যেন হাত না কেঁপে যায়।
- ইচ্ছে হলে নিচের পাতায় কাজল বা আইপেন্সিল ব্যবহার করতে পারেন।
- আইলাইনার মোটা করেও পরা যায়।
মাশকারা
চোখের পাতার রোমে প্রথমে আইল্যাস কার্লার দিয়ে আউটসাইড কার্ল করে নিতে হবে। তার পর সরাসরি ব্রাশ দিয়ে মাশকারা লাগাতে হবে। রোমের শুরু থেকে ডগা পর্যন্ত ব্রাশ চালাবেন। ওপর ও নিচের পাতায় এভাবে লাগিয়ে শুকিয়ে নিন। দু’মিনিট পর আবার মাশকারা লাগান। এই পদ্ধতিতে চোখ হয়ে উঠবে সবচেয়ে মোহময়ী।
ঠোঁট
- ঠোঁটের সীমারেখা বরাবর লিপ পেনসিলের সাহায্যে আউটলাইন এঁকে নিতে হবে।
- লিপব্রাশে লিপস্টিক লাগিয়ে আউটলাইন আঁকা যায়। এর পর লিপস্টিক দিয়ে ঠোঁট ভরাট করুন। রং যেন আউটলাইনের বাইরে না যায়।
গ্লিমার ও টিপ: প্রয়োজন অনুযায়ী টিপ পরুন। তবে পশ্চিমা পোশাকের সঙ্গে টিপ নয়। প্রসাধনের শেষে ইচ্ছে হলে আঙুলের ডগায় সামান্য পরিমাণ গ্লিমার নিয়ে চোখের কোণ, চিবুক, কপাল বা গালে লাগাতে পারেন। তবে একমাত্র রাতের পার্টিতেই গ্লিমার ব্যবহার করবেন। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
বিডি-প্রতিদিন/ ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ