কানাডায় করোনার গতি কমায় নতুন মাত্রা ও আয়োজনে বিভিন্ন প্রদেশে পালিত হয়েছে ঈদ-উল-আজহা। দীর্ঘ বিরতির পর পবিত্র ঈদের দিন পরিণত হয় বাঙালির মিলনমেলা।
কানাডায় গতবছর সর্বপ্রথম ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তারপর থেকে কানাডা সরকার, সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং সর্বোপরি কানাডিয়ানদের সহযোগিতায় করোনাভাইরাস এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১২ বছর বা তার বেশি বয়সী ৭৮ শতাংশ কানাডিয়ান অন্তত এক ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন। আর পুরোপুরি ভ্যাকসিনেটেড হয়েছে ১২ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রায় ৪৪ শতাংশ কানাডিয়ান।
অন্যদিকে, আলবার্টা প্রদেশে চলতি বছর ১ জুলাই থেকে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখানে ইতোমধ্যেই ৭০ শতাংশ নাগরিককে টিকা দেওয়া হয়েছে। কানাডার জনস্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, টিকার দুই ডোজ গ্রহণকারীরা এখন আলিঙ্গন করতে পারবে।
কানাডা সরকারের বেঁধে দেয়া কঠোর নিয়মনীতি এবং কানাডিয়ানদের তা মেনে চলার ফলশ্রুতি ও ভ্যাকসিনেটেড এর ফলেই কানাডা আজ করোনার নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে।
কানাডাপ্রবাসী বাংলাদেশিরা ঈদের নামাজ শেষে চলে যান কোরবানি দিতে। কানাডায় নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানি দেয়া বাধ্যতামূলক। নির্ধারিত ফার্মগুলোতেই কোরবানি দিয়েছেন প্রবাসীরা। মসজিদে নামাজ শেষে পরিবার পরিজন নিয়ে বের হন। ঘুরতে যান বন্ধু বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনের বাসায়। সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সবাই একত্রিত হয়ে মেতে ওঠেন নানা গল্প আড্ডায়।
প্রবাসে ঈদ উদযাপন নিয়ে এবিএম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট ড. মো. বাতেন বললেন, বাংলাদেশের মত আনন্দ করে এখানে ঈদ হয় না। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। এখানকার মতো সবাই ভ্যাকসিন নিবে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলবে, সবাই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে এটাই আমাদের প্রার্থনা।
ঈদের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ক্যালগেরির কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী সোহাগ হাসান বলেন, 'ব্যস্ত এই প্রবাস জীবনে পরিবার আর বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে যদিও ঈদ করি, কিন্তু সেই শৈশব ও স্বদেশের ঈদ এখন কেবলই স্মৃতি।'
প্রবাসীরা ইচ্ছে করলেই বাস আর ট্রেনের টিকিট কেটে দেশের বাড়িতে যেতে পারেন না, পারেন না মমতাময়ী মা বাবা পরিবার পরিজনদের সাথে দেখা করতে। মুঠোফোনে আপনজনদের খোঁজ খবর আর তাদের ডিজিটাল হাসি-কান্নার ছবি দেখেই পালন করতে হয় ঈদ উৎসব।
বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির