৮ আগস্ট, ২০২২ ১৮:০৪

ব্যাংককে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উদযাপন

অনলাইন ডেস্ক

ব্যাংককে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উদযাপন

ব্যাংককে বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে

ব্যাংককে বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে।

আজ সোমবার অনুষ্ঠানে দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালসহ জাতির পিতা, তার পরিবারের অন্যান্য শহীদ সদস্য ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার শান্তি কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনার মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। 

দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) ফাহাদ পারভেজ বসুনীয়া। এরপর রাষ্ট্রদূত মো. আব্দুল হাই বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে তাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। দিবস দুইটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণীর উদ্ধৃতাংশ পাঠ করেন দূতাবাসের (মিনিস্টার) রাজনৈতিক ও মিশন উপপ্রধান মিজ মালেকা পারভীন, এনডিসি, মিনিস্টার (কন্স্যুলার) আহমেদ তারিক সুমীন, ইকনোমিক মিনিস্টার সৈয়দ রাশেদুল হোসেন, কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান মো. মাসূমুর রহমান। অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

আলোচনা পর্বে আগত অতিথিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের গৌরবময় জীবন সম্পর্কে আলোচনা করেন। বক্তারা বঙ্গমাতার নির্লোভ, নিরহংকার, পরোপকারী গুণের কথা তুলে ধরেন। বাঙালির সুদীর্ঘ স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিসংগ্রামের নেপথ্যের কারিগর হিসেবে তার অবদানকে তুলে ধরেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বড় সংগঠক হিসেবে শেখ কামাল স্বাধীন বাংলাদেশের ক্রীড়া, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন এ বিষয়ে বক্তারা আলোকপাত করেন।

দূতাবাসের মিনিস্টার (কনস্যুলার) আহমদ তারেক সুমীন তার বক্তব্যে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের দেশপ্রেম, দৃঢ় মনোবল, বলিষ্ঠ চরিত্র, ব্যক্তিগত সাধারণ জীবন যাপন ইত্যাদি বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল সম্পর্কে বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময় দেশের যুব সমাজকে ক্রীড়া ও সংস্কৃতির জগতে ব্যস্ত রেখেছেন শেখ কামাল যা যুব সমাজকে বিপথগামী হতে দেয়নি। তিনি শেখ কামালের কৃতিত্বপূর্ণ সামরিক জীবন, মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ, ক্রীড়া সংগঠক ও থিয়েটার প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের কথা তুলে ধরেন।

রাষ্ট্রদূত মো. আব্দুল হাই বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত সুধীবৃন্দকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি তার বক্তব্যের শুরুতেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব সম্পর্কে বলেন- বাঙালির শ্রেষ্ঠ অর্জন দেশের স্বাধীনতাসহ বঙ্গবন্ধুর সব লড়াই-সংগ্রাম-আন্দোলনের নেপথ্যের প্রেরণাদানকারী ছিলেন বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তিনি বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবন ছায়ার মতো অনুসরণ করে তার প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তার অফুরান প্রেরণার উৎস হয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সকল সদস্য একটি বিশেষ গুণের অধিকারী এবং তা হলো সরলতা। রাষ্ট্রদূত বঙ্গমাতার সহজ সরল জীবনযাপন, রাষ্ট্রপতির স্ত্রী হয়েও সাধারণ মানুষের প্রতি ভালবাসা, শ্রদ্ধা ইত্যাদি ‍বিষয়ে আলোকপাত করেন।

এ ছাড়া, রাষ্ট্রদূত দক্ষ ক্রীড়া সংগঠক শেখ কামাল সম্পর্কে স্মৃতি রোমন্থন করেন। তিনি বলেন, ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ছিলেন একাধারে মেধাবী ছাত্র, দক্ষ সংগঠক, অসাধারণ ক্রীড়াবিদ, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। বিশেষ করে তৎকালীন যুগে দুষ্প্রাপ্য ক্রীড়া সরঞ্জমাদি সংগ্রহের জন্য শেখ কামালের ব্যক্তিগত উদ্যোগকে রাষ্ট্রদূত ক্রীড়া ক্ষেত্রে তার আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ হিসাবে বর্ণনা করেন। আবাহনী ক্লাব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শেখ কামাল বাংলাদেশের ফুটবল জগতে নবদিগন্তের সূচনা করেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত আসনে সফল নির্বাচন পরিচালনার মাধ্যমে শেখ কামালের রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিকাশ ঘটে বলে তিনি উল্লেখ করেন। রাষ্ট্রপতির ছেলে হয়েও শেখ কামাল সাধারণ মানুষের কাতারে মিশে কাজ করার যে দৃষ্টান্ত তিনি স্থাপন করেছেন তা ইতিহাসে বিরল বলে রাষ্ট্রদূত মন্তব্য করেন। 

দূতাবাসের ইকনোমিক মিনিস্টার সৈয়দ রাশেদুল হোসেন উপস্থিত সবাইকে দূতাবাসের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন দূতাবাসের কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) মিজ দয়াময়ী চক্রবর্ত্তী। 

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর