চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত সম্মিলিত উদ্যোগে আয়োজিত বইমেলায় বৈরি আবহাওয়া অন্তরায় হতে পারেনি। প্রতিকূল আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে পাঠক-দর্শকদের সরব উপস্থিতি ছিল মেলায়। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৮০ হাজার টাকার বই বিক্রি করে রেকর্ড করেছে। বর্ধিত দুই দিন পর শনিবার শেষ হচ্ছে প্রাণের বইমেলা।
চট্টগ্রাম নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম মাঠে প্রথমবারের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ঢাকা-চট্টগ্রামের সৃজনশীল প্রকাশকদের অংশগ্রহণে হচ্ছে সম্মিলিত বইমেলা।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) আয়োজন এবং চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ, চট্টগ্রামের নাগরিক সমাজ ও সাহিত্যিক-শিল্প সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া মেলা শনিবার শেষ হচ্ছে। শুক্রবার পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত প্রায় এক হাজার বই মেলায় এসেছে।
আয়োজক সূত্রে জানা যায়, ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত ২০ দিনে প্রায় ১৪ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়। প্রতিদিন গড়ে বিক্রি হয় ৮০ হাজার টাকার বই। একদিনে সর্বোচ্চ এক কোটি ১০ লাখ টাকার পর্যন্ত বই বিক্রি হয়।
চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘চট্টগ্রামে প্রথমবারের আয়োজনে সফল হয়েছি আমরা। চট্টগ্রামের মানুষ যে সত্যিকার অর্থেই বই প্রেমী তা এই মেলায় প্রমাণ মিলছে। আগামীবার নতুন অবয়ন, নতুন পরিকল্পনা নিয়ে মেলার আয়োজন করা হবে। এবার বই মেলায় ২০ দিনে বিক্রি হয় প্রায় ১৪ কোটি টাকার বই।’
শৈলি প্রকাশনের সামনে দর্শক ডা. হামিদ হোসাইন আজাদ বলেন, ‘আমরা আন্তরিকভাবে কামনা করি চট্টগ্রামের এই বই মেলা ধারাবাহিকতা পাক। আগামীতে আরো সমৃদ্ধ আয়োজনে হোক এই মেলায়। সঙ্গে বৃদ্ধি পাবে এর অবয়ব। এই মেলার কারণে চট্টগ্রামের অনেক পাঠক এবার ঢাকার বই মেলায় যায়নি। এ অর্জন আয়োজকদের।’
শুক্রবার বিকালে মেলায় গিয়ে দেখা যায়, বিদায় বেলায় পাঠকদের ভিড় ছিল অন্যরকম। পড়ন্ত বিকালের আগে দর্শক-পাঠকদের ভিড় শুরু হয়। তাছাড়া শুক্রবার বন্ধের দিন হওয়ায় পাঠকের উপস্থিতি দ্বিগুণ হয়েছে। সূর্যের উত্তাপকে ছাপিয়ে পাঠক-দর্শক বইয়ের প্রেমে মত্ত হয়ে চলে আসে মেলায়। প্রতিটি স্টলের সামনেই ভিড় করছেন বইপ্রেমী পাঠকরা।
আশা করা যাচ্ছে শনিবারও সরব উপস্থিতি থাকবে।
জানা যায়, এবারের বইমেলায় ১১০টি স্টল অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ঢাকার ৬০ ও চট্টগ্রামের ৫০টি। আগত পাঠক-দর্শকদের মননশীলতা তৈরিতে মেলার প্রবেশ পথেই রাখা হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জসীম উদ্দীন, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, আবদুল গাফফার চৌধুরী, প্রমথ চৌধুরী ও বেগম সুফিয়া কামালসহ বিশিষ্টজনদের অমিয় বাণী সমেত ছবি।
দর্শনার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে সেলফি জোন, এ জোনে কিশোর, তরুণ-তরুণীরা ছবি তুলেছেন। আছে ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা। নিরাপত্তায় আছে সিসি ক্যামেরা। আছে সুলভ মূল্যের খাবার। রাখা হয়েছে হেলথ ক্যাম্প। এখানে ব্লাড গ্রুপ নির্ণয়, ডায়াবেটিক মাপা, প্রেসার মাপার ব্যবস্থা আছে। শৃঙ্খলার জন্য রয়েছে নিরাপত্তা ক্যাম্প।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন