চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধ উপচে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন উপজেলায় পানি প্রবেশ করেছে বলে জানান স্থানীয়রা। তবে এখনো কোনো ঘরবাড়িতে পানি ঢুকেনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে আনোয়ারা উপকূলীয় এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ প্রাণ ও লক্ষাধিক মানুষ সর্বস্ব হারায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন আনোয়ারা উপজেলায় প্রায় ৬ কিলোমিটার অংশে বেড়িবাঁধ আছে। এসব বাঁধ সংস্কার কাজ চলছে। উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের পরুয়াপাড়া বাতিঘর, ফকির হাট ও সরেঙ্গারসহ যেসব অংশে পাথর নেই, সেদিক দিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এ ছাড়া গহিরা বারআউলিয়া এলাকায় প্রায় দুইশ মিটার বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকছে। অভিন্ন অবস্থা বাঁশখালী উপজেলার বাহাড়ছড়া, খানকানাবাদ, সরল, ছনুয়া, প্রেমাসিয়া, পুকুরিয়া, গ-মারাসহ দীর্ঘ উপকূলীয় বেড়িবাঁধের। অন্যদিকে, সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়াসহ আশপাশের বেড়িবাঁধ দিয়েও পানি ঢুকার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আনোয়ার রায়পুর ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা জমিম উদ্দিন বলেন, ‘ইউনিয়নের বার আউলিয়া, পরুয়া পাড়াসহ বেশকিছু এলাকায় বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশে এখনো কাজ শেষ না হওয়ায় পানি ঢুকে পড়েছে। তবে পানি মানুষের ঘরবাড়িতে এখনো আসেনি।’
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, ‘রায়পুর ইউনিয়নের প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশে এখনো কাজ শেষ হয়নি। সেখানে ব্লক বসানো হয়েছে। তাই এসব অংশে পানি ঢুকে পড়েছে। তবে পানি মানুষের ঘরবাড়িতে এখনো আসেনি। উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো খোলা আছে। ইতোমধ্যে উপকূলের বাসিন্দাদের সেখানে আনা হয়। এ ছাড়া পানি ঢুকে পড়া অংশে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। উদ্ধারকারী দল তৎপর আছেন।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামে নির্বাহী প্রকৌশলী তায়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, ‘আনোয়ারায় ২১৫০ মিটার এলাকায় মাটির বাঁধ রয়েছে। সেদিকে পানি ঢুকছে। ইতোমধ্যে ওই অংশে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে একটি প্রকল্প সংশোধন করে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে প্রকল্পটি অনুমোদন হয়নি। তাছাড়া রায়পুর ইউনিয়নের বাইগ্যার ঘাট থেকে ছিপাতলী ঘাট পর্যন্ত ১ হাজার ৯৪২ মিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ চলছে।’
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন