বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভাঙছে ব্রহ্মপুত্র-করতোয়া, কাঁদছে মানুষ

কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর প্রতিনিধি

ভাঙছে ব্রহ্মপুত্র-করতোয়া, কাঁদছে মানুষ

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনকলিত এলাকা

ব্রহ্মপুত্র নদের অব্যাহত ভাঙনে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে চিলমারী উপজেলা। একের পর এক বসতবাড়ি, জমি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন নদপারের মানুষ। কান্না থামছে না ভুক্তভোগীদের। ভাঙনে এরই মধ্যে চিতলমারী বন্দরের অনেকখানি বিলীন হয়ে গেছে। ডানতীর রক্ষা প্রকল্পসহ নতুন করে বন্দর চালুর উদ্যোগ নেওয়া হলেও ভাঙন প্রতিরোধে নেই সঠিক পদক্ষেপ। এ অবস্থায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন ভাঙনকবলিতরা। জানা যায়, চলতি বছর বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে ব্রহ্মপুত্রের তীব্র ভাঙন। ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসছে চিতলমারী উপজেলার আয়তন। গত কয়েকদিনে নদীর পেটে চলে গেছে উপজেলার রমনা, জোড়গাছ, মনতোলা, উত্তরখাউরিয়ার, খেদাইমারী, ফেসকা, নটারকান্দি, মাঝিপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় শত শত বাড়িঘর ও ফসলি জমি। স্থানীয় নয়ারহাট ইউপি চেয়ারম্যার আবু হানিফা বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র শুধু আমাদের জমি ও বসত-ভিটাই নিয়ে যায়নি। কেড়ে নিয়েছে অসংখ্য স্বজনের প্রাণ। যাদের এক সময় গোয়াল ভরা গরু, ডোলা ভরা ধান ছিল তারাও নদী ভাঙনের শিকার হয়ে আজ পথের ফকির’। উপজেলা চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার বীরবিক্রম বলেন— ‘আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি চিলমারীকে রক্ষার জন্য। এছাড়াও ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের কাজও চলমান রয়েছে। আশা করছি সমস্যা হবে না’। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ভাঙন রোধের চেষ্টা চলছে। এদিকে দিনাজপুরে করতোয়া নদীর ভাঙনে হারিয়ে যেতে বসেছে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি গ্রাম। ভাঙনকবলিত গ্রামগুলো হলো— বিনোদনগর ইউনিয়নের করতোয়া ভোটারপাড়া, কাচদহ, উত্তর কাচদহ, উত্তর মাঝিপাড়া ও দক্ষিণ মাঝিপাড়া। ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, করতোয়া নদী ছিল তাদের গ্রাম থেকে প্রায় ১ কিমি দূরে। ভাঙতে ভাঙতে এখন তাদের গ্রাম পর্যন্ত এসেছে। ইতিমধ্যে অনেকে বাড়িঘর, জমি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে। ভাঙনের মুখে বসতভিটা ছেড়ে যেতে হয়েছে অনেককে। এ ছাড়া উত্তর মাঝিপাড়া গ্রামের মণি, নিপেন, শহিদুল, খট্টু, বকুল, বিকাশসহ ২৫-৩০ জন গৃহহীন হয়েছেন। ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পায়নি স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দিরসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। বিনোদনগর ইউপি চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন জানান, প্রতি বছর নদী যেভাবে ভাঙছে তাতে শুধু ওই গ্রামগুলোই নয়, সদ্যনির্মিত ড. ওয়াজেদ মিয়া সেতুও হুমকির মুখে পড়বে।

সর্বশেষ খবর