বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

খানাখন্দের সড়কে ভোগান্তি

ভাঙ্গা ঈদগাঁ মোড় থেকে ডাকঘর পর্যন্ত প্রায় ২০০ মিটার খানাখন্দে ভরা। চলাচলের অনুপযুক্ত।

ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

খানাখন্দের সড়কে ভোগান্তি

ভাঙ্গার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক থানা সড়কটি গত এক বছর ধরে চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে আছে। সড়কটিতে  বর্তমানে  ছোট-বড় গর্তে পরিপূর্ণ। ফলে পথচারীসহ ওই পথে যাতায়তকারী রিকশাভ্যান, নসিমন চালকদের প্রচ  ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।  ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক থেকে পশ্চিম দিকে নামলেই এ সড়কটি। ভাঙ্গা বাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে কুমার নদ পর্যন্ত চলে গেছে এ সড়কটি। এ সড়কটি ৭৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও  সাড়ে চার মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট। এই সড়কটির ভাঙ্গা ঈদগাঁ মোড় থেকে ভাঙ্গা ডাকঘর পর্যন্ত প্রায় ২০০ মিটার অংশ খানাখন্দে ভরা। এ অংশটি চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। থানা সড়কটি এ উপজেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এ সড়ক দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার লোক, কাঁচা বাজার, মাছ মাংসের বাজার, ভাঙ্গা সরকারি কে এম কলেজ, উপজেলা ডাকঘর, থানা, ট্রাফিক অফিস, সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়, ভূমি অফিসসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা অবস্থিত। এজন্য উপজেলার বেশির ভাগ লোকদের প্রাত্যহিক কাজে এ সড়কটি ব্যবহার করতে হয়। এছাড়াও ভাঙ্গার আলগি ইউনিয়ন ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাটিকামারি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের লোকজন যাতায়ত করেন। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে অন্তত ৪ থেকে ৬ হাজার লোক এ পথে চলাফেরা করেন।  এলাকাবাসী জানান, গত দুই বছর আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) এর তত্ত্বাবধানে এ সড়কটি সংস্কার করা হয়। এ কাজটি করেছিলেন ফরিদপুরের বিতর্কিত দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেল (বর্তমানে জেলে) এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ করার সময় এলাকাবাসীর কাজের মান নিয়ে অভিযোগের অন্ত ছিল না।  নিম্নমানের কাজ হওয়ায় এলাকাবাসী নির্মাণের সময়ই বাধা দেয়। কিন্তু প্রতিবাদকারীদের হুমকি, ধমকি, মারধর করা ও মামলার ভয় দেখিয়ে প্রতিবাদ অগ্রাহ্য করে নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নিম্নমানের নির্মাণ কাজ হওয়ায় সংস্কারের দুই তিন মাস পর থেকে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় গর্ত সৃষ্টি হয়। বর্তমানে এই সড়কটির ওই এলাকা চলাচলের জন্য একেবারেই অচল হয়ে পড়ে।  ভাঙ্গা বাজারের আপন জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী এম নজরুল ইসলাম বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি একেবারে চলাচলের অনুপেযোগী হয়ে পড়েছে। সংস্কার কাজ হয় কিন্তু তা টেকে না। কাজ নিয়ে দুর্নীতি হয়। আমরা বাধা দিয়েও তা ঠেকাতে পারি না। ভাঙ্গা সরকারি কেএম কলেজের দ্বাদশ বিভাগের শিক্ষার্থী রোমান মুন্সী বলেন, ভাঙ্গা থানা রোড দিয়ে আমাদের কালেজে যেতে হয়। অনেক কষ্ট করে আমাদের ওই পথটুকু অতিক্রম করতে হয়। বৃষ্টির দিন কাদা পানিতে একাকার হয়ে যতে হয়। নসিমন চালক ইমদাদ শেখ বলেন, বাজার থেকে মালপত্র নিয়ে এ পথ দিয়ে যেতে পারি না। কয়েকজন মিলে নসিমন ধাক্কা দিতে হয়, তাও উঠতে চায় না। বড় বিপদের মধ্যে আছি। উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মালেক মিয়া বলেন, সড়কটি পৌরসভার মধ্যে অবস্থিত। দুই বছর আগে বৃহত্তর ফরিদপুর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ কাজ করেছে এলজিইডি। এখন আমাদের ফান্ড নেই। সড়ক টেকাতে হলে ড্রেন করতে হবে। সড়কের ওই অংশটি নিচু। তাই পানি জমে। পানি জমার কারণে নষ্ট হয়। এ কাজটি করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। এটি পৌরসভাকেই করতে হবে। পৌরসভার প্রকৌশলী রেজাউর রহমান বলেন, সড়কটি এলজিইডি দুই বছর আগে সংস্কার করেছে। যে সড়কের সঙ্গে ইউনিয়নের সংযোগ রয়েছে সেগুলো কয়েকটি সংস্কার কাজ এলজিইডি করতে পারে। সে ভাবেই কাজটি হয়েছিল। ওই সময় নিম্নমানের কাজ হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। রাস্তা ঠিক রাখতে হলে নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। আরসিসি ছাড়া এ রাস্তা টেকানো যাবে না। পাশাপাশি পানি সরে যাওয়ার জন্য সড়কের একপাশে ড্রেন করতে হবে। ড্রেন নির্মাণের প্রক্রিয়া তাড়াতাড়ি শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর