সোমবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বেহাল প্রাথমিক বিদ্যালয়

নাটোর প্রতিনিধি

বেহাল প্রাথমিক বিদ্যালয়

বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই টিনশেড ঘরের চালার ফাঁকফোকর দিয়ে পানি এসে ভিজিয়ে দেয় শ্রেণিকক্ষের আসবাবপত্রসহ উপস্থিত শিক্ষার্থীদের। হালকা ঝড়ো বাতাসেই দুলে ওঠে ঘরটি। বলতে গেলে, প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করেই শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হয় নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের। মহামারী করোনায় দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এ নিয়ে কারও মাথাব্যথা ছিল না। কিন্তু আগামী ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল খোলার ঘোষণায় জরাজীর্ণ শ্রেণিকক্ষ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন শিক্ষক-অভিভাবকগণ। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৫২ জন। পাঠদানের জন্য তিনটি ভবন রয়েছে। যার একটি অনেক আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আর টিনশেড ভবনটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় জরাজীর্ণ হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এর বড় দুটি শ্রেণি কক্ষ। অবশিষ্ট একটি দ্বিতল ভবনের ছয়টি কক্ষ। যার নিচতলার একটি অফিস কক্ষ, একটি বঙ্গবন্ধু কর্নার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ক্লাসের জন্য রয়েছে মাত্র চারটি শ্রেণিকক্ষ। দোতলার তিনটি ও নিচ তলার একটি কক্ষ। মাত্র চারটি কক্ষে ৫৫২ জন শিক্ষার্থীকে ক্লাস করানো সম্ভব নয়। বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়াদ মাহামুদ বলে, পুরনো টিনশেড ঘরে ক্লাস করতে অনেক সমস্যা হয়। গরমের দিনে গরম আবার বৃষ্টির দিনে ভিজতে হয়। স্থানীয় অভিভাবক নজরুল ইসলাম ও আব্দুল মতিন বলেন, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় এর শ্রেণিকক্ষ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা ছিল না কারও। স্কুল খোলার ঘোষণায় উদ্বিগ্নতা দেখা দিয়েছে। টিনের ঘরটি অকেজো হয়ে পড়েছে। পাকা দোতলার চারটি কক্ষে এত শিক্ষার্থীকে পাঠদান সম্ভব নয়। আর শ্রেণিকক্ষ সংকট থাকায় এখানে স্বাস্থ্যবিধিও মানতে পারবে না শিক্ষার্থীরা।

রাশিদা বেগম নামে এক অভিভাবক বলেন, সামান্য দমকা বাতাসেই দুলতে থাকে বিদ্যালয়ের টিনশেড ঘরটি। বৃষ্টি হলে শ্রেণিকক্ষ পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। পাকা ভবনের জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো ফল পাওয়া যায়নি। প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শ্রেণিকক্ষ সংকটে এবং টিনশেডটির জরাজীর্ণ অবস্থার কথা উপজেলা শিক্ষা অফিসকে অবহিত করা হয়েছে। ভবন নির্মাণ করা খুবই জরুরি। কারণ টিনশেডটি নাজুক অবস্থায় রয়েছে। শ্রেণিকক্ষ সংকট থাকায় দুই  শিফটে ক্লাস নিতে হয়। ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদানে   কিছুটা অসুবিধা হয়। এছাড়া বাথরুম ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থাও অপ্রতুল। করোনার পরে স্কুল খুললেও একই সমস্যায় পড়তে হবে স্কুলটির ছাত্র-ছাত্রীদের। উপজেলা শিক্ষা অফিসার একেএম রেজাউল হক জানান, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর