রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

আশুগঞ্জ গুদামে মানহীন চাল

কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ খাদ্য গুদামে চলছে বোরো মৌসুমের চাল সংগ্রহ। সরকারি নীতিমালা না মেনে মিল মালিকদের কাছ থেকে কমিশন নিয়ে মানহীন লালচে ও গন্ধযুক্ত চাল সংগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে আশুগঞ্জের ১৮৫টি মিলের মালিকদের কাছ থেকে ২৯ হাজার ৫৭০ মেট্রিকটন বোরো চাল সংগ্রহ করবে সরকার। এই চাল সংগ্রহে প্রতি কেজিতে ৫৭ পয়সা করে দেড় কোটি টাকারও বেশি কমিশন আদায় করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। চুক্তি ও মিলের লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য প্রতি মিল থেকে উৎকোচ এবং ভুয়া মিলের নামে বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে আশুগঞ্জ খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সরেজমিনে আশুগঞ্জ খাদ্য গুদাম এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গুদামের সামনে ছয়টি ট্রাক দাড়িয়ে আছে চাল নিয়ে। গুদামের মুখে দুটি পাশে একটি ট্রাক থেকে সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে। অন্যটিতে রয়েছে আতপ চাল। এরমধ্যে একটি মিলের কাছ থেকে সংগ্রহ করা চাল অনেকটাই বিবর্ণ অবস্থায় রয়েছে। চাল পরীক্ষার জন্য আশুগঞ্জ খাদ্য গুদামের এএসআই আকতার হোসেন দাঁড়িয়ে বিবর্ণ চাল দেখেও কিছু বলছেন না। তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে বলেন, এই বিবর্ণ চাল নেওয়া যায়। এতে কোনো সমস্যা নেই।  গুদাম সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারিভাবে আশুগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে মোট ২৯ হাজার ৫৭০ মেট্রিক টন বোরো চাল সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে। এরমধ্যে সিদ্ধ চাল ৪০ টাকা কেজি দরে ২২ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন ও ৩৯ টাকা কেজি দরে আতপ চাল ৬ হাজার ৬৮০ মেট্রিক টন। গত ২৭ জুলাই পর্যন্ত মোট ১৩ হাজার ৩৪০ মেট্রিক টন সিদ্ধ ও ৫ হাজার ৪৪৮ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া ২৭ টাকা কেজি দরে ৫৭৭ মেট্রিক টন বোরো ধান সংগ্রহ করা হবে এই খাদ্য গুদামের অধীনে। এর মধ্যে ২৭ জুলাই পর্যন্ত মাত্র ৬৫ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। সূত্র জানায় আশুগঞ্জ খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ স্থানীয় মিল মালিকদের সঙ্গে আঁতাত করে কেজিপ্রতি ৫৭ পয়সা কমিশন নিয়ে সরকার নিষিদ্ধ নিম্নমানের লালচে ও গন্ধযুক্ত চাল সংরক্ষণ করছে। প্রতি বছর কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য চলে এই খাদ্য গুদামে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা চাতাল কল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম ভূইয়া স্বপন বলেন, কমিশন নেওয়া হচ্ছে না। এবার সরকারের দেওয়া চালের দাম থেকে বাজারের দাম বেশি হওয়ায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। কিছু লালচে চাল ভুল করে নেওয়া হয়েছে। এসব চাল নেওয়ার কথা নয়। আশুগঞ্জ খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুলাইমান মিয়া বলেন, কোনো কমিশন নেওয়া হচ্ছেনা। আবহাওয়া খারাপ থাকায় চাল বিবর্ণ দেখা যাচ্ছে। অনেক গাড়ির চাল পরীক্ষার পর খারাপ পাওয়া গেলে অর্ধেক ট্রাকসহ চাল ফেরত পাঠানো হয়। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাকারিয়া মুস্তফা বলেন, বিবর্ণ চাল নেওয়ার বিষয়ে সরকারি কঠোর নিষেধাজ্ঞা আছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

সর্বশেষ খবর