কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ছোটবড় ১৬টি নদ-নদী। ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমারসহ জেলার ছোট বড় এসব নদ-নদীর অধিকাংশ এখন নাব্যতা সংকটে। নদীর পানি কমে পানিপ্রবাহ একেবারেই থেমে গেছে। শুকিয়ে গেছে অনেক জায়গায়। ফলে নদীর বুকজুড়ে জেগে উঠেছে ছোটবড় অসংখ্য বালু চর। চলতি বছরে শুকনো মৌসুমের শুরুতেই এসব চর জেগে ওঠায় এখন পানি শূন্য নদী। ফলে হারিয়ে যাচ্ছে জীববৈচিত্র্যসহ নদীর দেশীয় প্রজাতির মাছ। এতে জীবন-জীবিকার সংকটে পড়েছেন নদীর সঙ্গে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষরা। অন্যদিকে এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ও নদীগুলোকে বাঁচাতে সমীক্ষার মাধ্যমে নদী খননের আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। গতকাল সরেজমিনে জানা যায়, ধরলা নদী শুকিয়ে গেছে। এর প্রায় দেড় থেকে দুই কিলোমিটার প্রস্থ ও ৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে নদীর বুক এখন ধু-ধু বালু চর। দেখে বোঝার উপায় নেই, এক সময়ের প্রমত্তা ধরলা নদী এটি। এ নদী এসব বালু চরের পাশে পরিণত হয়েছে সরু খাল। সেখানে সামান্য পানি থাকলেও তাতে নেই কোনো আগের মতো নদীর পানিপ্রবাহ। একই অবস্থা বর্তমানে বিরাজ করছে তিস্তা, দুধকুমারসহ অন্য নদীরও। আজ থেকে প্রায় ৮-১০ বছর আগেও শুকনো মৌসুমে নদীতে পানিপ্রবাহ ছিল। কিন্তু বর্তমানে নাব্যতা সংকটে থেমে গেছে পানির সে প্রবাহ। এখন নদীতে পানি কমে নৌকা তো চলছেই না। বরং ছোট ছোট ডিঙি নৌকা চলে মাছ ধরতে জেলেদের জীবিকার জন্য। তাও পানি শূন্যতায় মাছ পাচ্ছেন না তারা। পানি কমে যাওয়ায় নৌকা চালাতে ও মাছ ধরতে পারছেন না জেলেরা। এসব পেশার সঙ্গে জড়িতরা এখন মারাত্মক সংকটে দিনাতিপাত করছেন। ধরলা পাড়ের জেলে ওসমান আলী মাছ ধরতে আসেন প্রায় ২০ বছর। তিনি জানান, ‘নদী ভরাট হয়ে গেছে গা। এইতো সেদিন নদীতে এইরকম সময়ে পানি ভরপুর ছিল কিন্তু এখন আর পানি নেই। তাই মাছও ধরতে পারছি না।’ অন্যদিকে নদী পাড়ের বাসিন্দা সুরঞ্জন বাবু জানান, নদীর পাশে বাড়ি। আগে নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরতাম। এখন নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ায় পানি নেই বললেই চলে। জাল ফেলে যে মাছ ধরব তার কোনো উপায় নেই। দুধকুমার নদের পাড়ের ফুলমতি বানু জানান, ‘এলা নদীত পানিও নাই মাছও নাই। কন্তুক কদিন আগে বানের পানি দিয়া ভাসি গেইছে। হামার বাড়িঘর-দুয়র ভাঙি গেছে। আর এলা শুকান দিনত নদীত পানি নাই।’ এ অবস্থায় জীবিকার সংকটে পড়েছে কুড়িগ্রামের বিভিন্ন নদ-নদী পাড়ের মানুষরা। নদ-নদীগুলোকে খননের মাধ্যমে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানান অনেকেই। এখন ধরলায় পানিও নেই, মাছও নেই। ফলে বিপদে রয়েছে এখানকার জেলে সম্প্রদায়। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, নদীর পানি শুকনো মৌসুমে কমে গেছে কারণ নাব্যতা সংকট। তবে এ বিষয়টি নৌ চলাচল যাতে বিঘ্ন না ঘটে তা দেখভাল করে বিআইডব্লিউটিএ। আমরা নদী খননে ভাঙন প্রতিরোধ হবে তাই নদী সমীক্ষার মাধ্যমে প্রকল্প তৈরি ও খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নদীগুলো খনন হলে নদ-নদীগুলো আবারও তাদের জীবন ফিরে পাবে।
শিরোনাম
- ঢাকায় ভূমিকম্পে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের সমবেদনা
- ভূমিকম্পে ঢাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের তালিকা প্রকাশ
- নারায়ণগঞ্জ জেলায় ভূমিকম্পে শিশুর মৃত্যু, আহত ২৪
- যাত্রাবাড়ীতে নবীউল্লাহ নবীর গণসংযোগ
- রাজধানীতে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি
- ‘তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে হাসিনার বিচার হয়েছে, তবে আপিলের সুযোগ আছে’
- বন্দর রক্ষায় হরতাল-অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি
- পোস্টাল ভোটিং: দুই দিনে সাড়ে ৬ হাজার নিবন্ধন
- একসঙ্গে সহকারী অধ্যাপক হলেন ১৮৭০ শিক্ষক
- হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন সতর্কবার্তা
- ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী জেলায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে
- রাজশাহীতে বদ্ধ ঘর থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- ‘ঢাকার পুরনো ভবনগুলোর ৯০ শতাংশ বিল্ডিং কোড না মেনে নির্মিত’
- ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০
- ধানের শীষে দেশের মানুষের আস্থা রয়েছে: দুলু
- ডেঙ্গুতে মৃত্যুহীন দিনে হাসপাতালে আরও ৪৩৬ জন
- যেভাবে স্মার্টফোনেই মিলবে ভূমিকম্পের সতর্কবার্তা
- এমন ভূমিকম্প আগে কখনও অনুভব করিনি : ফারুকী
- ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের নির্দেশনা
- ‘শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সশস্ত্র বাহিনীকে সর্বোচ্চ দক্ষতা-পেশাদারিত্ব দেখাতে হবে’
কুড়িগ্রামের নদীতে নাব্য সংকট
খন্দকার একরামুল হক সম্র্রাট, কুড়িগ্রাম
প্রিন্ট ভার্সন
টপিক
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর