মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

তিতাস নদীজুড়ে অবৈধ ঘের

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

তিতাস নদীজুড়ে অবৈধ ঘের

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওপর দিয়ে প্রবাহিত এক সময়ের খরস্রোতা তিতাস নদী এখন নাব্য হারিয়েছে। নদীজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছেন কয়েক শ অবৈধ মাছের ঘের। গাছের ডাল-পাতা ও বাঁশ দিয়ে তৈরি এ ঘেরের কারণে উজান থেকে আসা পলি আটকে ভরাট হচ্ছে নদীর তলদেশ। ফলে ব্যাহত হচ্ছে নৌ-চলাচল। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা দিয়ে বয়ে গেছে ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিতাস নদী। নদীতে কয়েক শ ঘের তৈরি করে নির্বিচারে রেণু ও মা মাছসহ বিভিন্ন জাতের মাছ শিকার করছে প্রভাবশালী মহল। এ ঘেরের কারণে নদীর স্বাভাবিক স্রোতধারা ব্যাহত হচ্ছে। নৌপথ বন্ধ হওয়ার কারণে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত টাকা খরচ করে স্থলপথে মালামাল আনা-নেওয়া করতে হচ্ছে। এ ছাড়া ঘেরের কচুরিপানা আটকে গিয়ে পচে পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। তিতাসপাড়ের মানুষ গোসল ও রান্নাসহ দৈনন্দিন কাজে নদীর পানি ব্যবহার করতে পারছেন না। স্রোত বাধাগ্রস্ত হওয়ায় অনেক জায়গায় ডুবোচর জেগেছে। জানা যায়, নদীতে নৌ চলাচল ব্যাহত হওয়ার কারণে ঘের নির্মাণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে একশ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তি ঘের তৈরি এবং চিকন জাল দিয়ে মাছ নিধন করছেন। মা মাছ ও ছোট পোনা ধরছেন ঘের মালিকরা। বাঞ্ছারামপুর উপজেলা অংশের তিতাস নদীর প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত ৫০০ অবৈধ মৎস্য ঘের রয়েছে। মাছ শিকারে ঘের মালিকরা একেবারেই ঘন (চিকন মশারির জাল) জাল ব্যবহার করছেন। এসব জাল থেকে কোনো (আধা সেন্টিমিটারের কম) ধরনের মাছই বের হতে পারে না। সাহেবনগর গ্রামের লিটন মিয়া বলেন, এই গাঙে এক সময় গভীরতা ছিল অনেক। এখন দখল ও ভরাটের কারণে শুকনা মৌসুমে নদীতে কোমর পানি পর্যন্ত হয়ে যায়। ফরদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাশিদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নদীতে অবৈধভাবে কিছু ব্যক্তি ঘের দিয়ে মাছ শিকার করছে। পলি জমে ভরাট ও অবৈধ দখলদাররা নদীর তীরে বাড়িঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে তিতাস নদী তার ঐতিহ্য ফিরে পাবে। বাঞ্ছারামপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাইদা আক্তার বলেন, অবৈধ মাছের ঘের উচ্ছেদের কাজ শুরু করেছি। ইউএনও স্যারের সঙ্গে কথা বলে ঘের মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একি মিত্র চাকমা জানান, সব অবৈধ ঘের উচ্ছেদ করা হবে। নদী দখল করে নৌ চলাচল বিঘ্নিত হয়- এমন কোনো কাজ নদীতে করা যাবে না বলে তিনি জানান।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর