বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

কারখানার বিষাক্ত কেমিক্যাল নদে মরছে মাছসহ জলজপ্রাণী

আবদুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

কারখানার বিষাক্ত কেমিক্যাল নদে মরছে মাছসহ জলজপ্রাণী

মরে ভেসে উঠেছে খাঁচায় চাষ করা মাছ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

রায়গঞ্জের ফুলজোড় নদে দুটি কারখানার কেমিক্যাল বর্জ্য ফেলায় পানিতে দূষণ দেখা দিয়েছে। অতিমাত্রায় দূষণের ফলে মরছে মাছসহ জলজপ্রাণী। বগুড়ার ছোনকা থেকে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা হয়ে নলকা পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটারে এ মড়ক দেখা দিয়েছে। নদের এ অংশে ২ হাজারের বেশি খাঁচায় চাষ করা মাছও মারা যাচ্ছে। প্রতিটি খাঁচায় ৩০-৪০ মণ মাছ মারা যাওয়ায় ৭০ জন চাষির ১৪-১৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। সূত্র জানান, এ নদে গোসল করে তীরবর্তী মানুষের চর্মসহ পানিবাহিত নানা রোগ দেখা দিয়েছে। ক্ষতিপূরণ দাবিতে গতকাল সকালে মাছ চাষি ও এলাকাবাসী ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের সাহেবগঞ্জ বাজারে মানববন্ধন করেছেন। এতে বক্তব্য দেন নলকা ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি কাওছার আহমেদ, মাছ চাষি শহিদুল ইসলাম প্রমুখ। ইউপি চেয়ারম্যান জানান, নদের উজানে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার দুটি কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য ফুলজোড়ে ফেলায় পানি বিষাক্ত হয়ে তিন দিন ধরে মাছ ও জলজপ্রাণী মারা যাচ্ছে। পানির দুর্গন্ধে নদের পাড়ের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। মাছ চাষি শহিদুল ইসলাম জানান, চান্দাইকোনা থেকে নলকা পর্যন্ত অন্তত ৭০ জন প্রায় ২ হাজার খাঁচায় মাছ চাষ করতেন। কেমিক্যাল বর্জ্যরে কারণে সব খাঁচার মাছ মরে গেছে। ক্ষতিপূরণ না পেলে তাদের পথে বসতে হবে। জাহিদ হাসান নামে একজন জানান, শুধু মাছ নয়, নদে গোসল করায় মানুষ ও গবাদি পশুর নানা রোগ দেখা দিয়েছে। শত শত হাঁস, একটি গরু ও অসংখ্য পাখি মারা গেছে। ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে কারখানা দুটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাসহ ক্ষতিপূরণের দাবি জানান। চকমনোহরপুর গ্রামের ফরিদুল ইসলাম জানান, এ নদে গোসল ও বিষাক্ত পানি পান করায় তার একটি ষাঁড় মারা গেছে। গতকাল দুপুরে ফুলজোড় নদের বিভিন্ন পয়েন্ট পরিদর্শন করেছেন রায়গঞ্জের ইউএনও তৃপ্তি রানী কণা মন্ডল, বগুড়া পরিবেশ অধিদফতরের এ ডি আবদুল গফুর, রায়গঞ্জ প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. আজমেরী হাসনাত, ভেটেরিনারি সার্জন আমিনুল ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সুমন কুমার রায়সহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরিদর্শন শেষে ইউএনও জানান, রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা থেকে নলকা ব্রিজ পর্যন্ত ফুলজোড় নদের প্রায় ৩০ কিলোমিটারের পানি দূষিত হয়েছে। এ অংশে জনসাধারণ ও গবাদি পশুকে গোসল না করাতে এমনকি নদের পানি দিয়ে কোনো কাজ না করার জন্য ১০ ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রচার চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নদের তীরে লাল পতাকা উত্তোলনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে গ্রামপুলিশকে।

সর্বশেষ খবর