মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

নতুন রূপে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি

নতুন রূপে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি

এবার নতুন উদ্যোগ নিয়ে এগোচ্ছেন হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। ফ্যাশন হাউস খুলছেন তিনি। তিনবার  গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার, দুবার স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার এবং একবার একাডেমি পুরস্কার লাভ করেছেন। চলচ্চিত্র জগতের বাইরে ২০০১ থেকে তিনি জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করছেন। একাধিকবার ‘বিশ্বের সেরা সুন্দরী’ নির্বাচিত হয়েছেন। তার কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

ফ্যাশন হাউস ‘অ্যাটেলিয়ার জোলি’

ফ্যাশন সম্পর্কিত একটি নতুন প্ল্যাটফরম তৈরি করতে যাচ্ছেন বিশ্বখ্যাত হলিউড তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। ‘অ্যাটেলিয়ার জোলি’ নামক একটি স্বনির্মিত পোশাক প্ল্যাটফরম চালু করছেন অভিনেত্রী। ‘সবাই তৈরি করতে পারে’ এই স্লোগানে প্ল্যাটফরমটি মূলত ক্রিয়েটিভ ব্যক্তিদের নির্ভরযোগ্য একটি প্ল্যাটফরম হবে বলেও জানান অভিনেত্রী। ইনস্টাগ্রামে হলিউড তারকা এবং মানবাধিকারকর্মী জোলি জানান, ‘অ্যাটেলিয়ার জোলি হলো সৃজনশীল ব্যক্তিদের জন্য একটি প্ল্যাটফরম যেখানে বিশ্বজুড়ে বিশেষজ্ঞ দর্জি, প্যাটার্ন নির্মাতা এবং কারিগররা নিজেদের প্রতিভা দেখাতে পারবেন। একটি দক্ষ এবং বৈচিত্র্যময় পরিবার গড়ে তোলার জায়গা হবে এটি।’ অভিনেত্রী বলেন, ‘এটি আমার পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্যই তৈরি। অনেক দর্জি এবং নির্মাতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা থেকে এই ভাবনা আমার মনে  তৈরি হয়েছে, যাদের সঙ্গে আমি বছরের পর বছর ধরে কাজ করেছি। ইতোমধ্যে উচ্চ-মানের ভিনটেজ উপাদান এবং ডেডস্টক ফ্যাব্রিক ব্যবহার করে আরও উন্নতমানের পোশাকশিল্প গড়তে সাহায্য করবে এটি। সেই সঙ্গে আত্মনির্ভরশীল প্রতিভাবান ব্যক্তিরা কাজ করার সুযোগ পাবেন।’ এ ছাড়া অ্যাটেলিয়ার জোলির অফিশিয়াল বিবৃতিতেও বলা হয়, ‘ফ্যাশন কালেকটিভের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে কোম্পানিটি ভোক্তাদের সৃজনশীল সম্ভাবনাকে আরও তুলে ধরবে। সবাই যদি তৈরি করতে পারে, তাহলে কেন আমরা ডিজাইনার লেভেলে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখব? আপনি যখন নিজেই তৈরি করতে পারেন তখন কেন অন্য ব্যক্তির ডিজাইন কিনবেন? আমরা সবাই সংগ্রহ করতে পারি, প্রশংসা করতে পারি এবং অন্যদের ডিজাইনে প্রভাবিত হতে পারি। কিন্তু আত্মপ্রকাশের সর্বোচ্চ রূপ আমরা দেখার চেষ্টা করি না। নিজেদের জন্য তৈরি করা সবচেয়ে মজার বিষয়।’ জোলি আরও বলেন, ‘এটি নতুন শুরু। আমি একজন ব্যবসায়ী নারীর চেয়ে বেশি একজন শিল্পী। আমি আপনাকে সেখানে দেখতে পাব, যেখানে আপনার থাকা উচিত। আমাদের নতুন সৃজনশীল সমষ্টির মধ্যে আপনাদের একজন হতে পারব বলে আশা করি।’ এদিকে জোলির এই নতুন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন হলিউডের নামকরা তারকারা। জোলিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়াও। অভিবাদন জানিয়েছেন বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার থেকে শুরু করে ভক্ত- শুভাকাক্সক্ষীরা।

 

নতুন লুকে মোহময়ী

নতুন লুকে ধরা দিলেন হলিউডের শক্তিমান অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। সম্প্রতি নিজের চেহারায় বেশ আকর্ষণীয় পরিবর্তন এনেছেন এই অভিনেত্রী। ‘ম্যালিফিসেন্ট’ অভিনেত্রী তার নিজস্ব  শৈলীর সঙ্গে ফ্রেঞ্চ-গার্ল ব্লোআউট লুকে ভক্তদের চমকে দিয়েছেন। অভিনেত্রী তার নতুন হেয়ার স্টাইলে আত্মপ্রকাশ করেছেন। অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকে সম্প্রতি তার ছেলে ম্যাডক্সের সঙ্গে হোয়াইট হাউসের একটি ব্যক্তিগত ইভেন্টে দেখা গেছে। অভিনেত্রী একটি রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন যেখানে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল এবং ফার্স্ট লেডি কিম কেওন হিকে স্বাগত জানান। সোনালি স্বর্ণকেশী জোলির নতুন হেয়ার স্টাইল হলিউড অভিজাতদের মধ্যে জনপ্রিয় ‘রুট শ্যাডো’ কৌশল ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। পিপল ডটকমের প্রতিবেদন অনুসারে, জোলি এবং তার ছেলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কারণ ‘এশিয়া-আমেরিকা’ সম্পর্ক অ্যাঞ্জেলিনার পরিবারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তার এবং তার সন্তানদের বহু বছর ধরে দক্ষিণ কোরিয়াসহ এশিয়া অঞ্চলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। অ্যাঞ্জেলিনাপুত্র ম্যাডক্স সিউলের ইয়নসেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। অ্যাঞ্জেলিনার এই নতুন লুক শুধু ভক্তদেরই নয়, বেশ প্রভাবিত করছে তারকাদেরও। কিম কার্দাশিয়ান এবং এমা রবার্টসের মতো অন্য তারকারাও রুটেড স্বর্ণকেশী লুক আনার চেষ্টা করেছেন। 

 

যে কারণে জাতিসংঘের পদ ছাড়লেন

২০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করার পর জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার বিশেষ দূতের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর জারি করা একটি যৌথ বিবৃতিতে জোলি এবং সংস্থাটি ঘোষণা করেছে, অভিনেত্রী সংস্থার বিশেষ দূতের ভূমিকা থেকে সরে যাচ্ছেন। তিনি নিজেকে আরও বিস্তৃতভাবে মানবিক ও মানবাধিকার ইস্যুতে নিযুক্ত করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। জোলি বলেন, ‘শরণার্থী এবং অন্যান্য বাস্তুচ্যুত লোকদের সহায়তা করার জন্য আমি আগামীতে আমার কার্যক্রম চালিয়ে যাব। আমার ক্ষমতা ও সামর্থ্যরে মধ্যে সবকিছুই করব আমি। শরণার্থী এবং স্থানীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে সরাসরি জড়িত হয়ে ভিন্নভাবে কাজ করার সময় এসেছে। আমি আরও বিস্তৃতভাবে কাজ করতে চাই। তাই এখন সময় হয়েছে আমার ওপরে অর্পিত এই দায়িত্ব থেকে সরে আসার।’ জোলি ২০০১ সালে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার সঙ্গে কাজ শুরু করেন এবং ২০১২ সালে সংস্থাটির বিশেষ দূত হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি সংস্থার রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে সবচেয়ে উচ্চপদস্থ ছিলেন। তিনি সংস্থাটির হয়ে ৬০টিরও বেশি ফিল্ড মিশন পরিচালনা করেছেন। সম্প্রতি বুরকিনা ফাসো ভ্রমণ করেছেন অভিনেত্রী। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেছেন, ‘ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে দীর্ঘ এবং সফল সময় পার করার পর জোলির এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন করি আমি। এ সংস্থার প্রতি তার অবদান মনে রাখবে জাতিসংঘ।’

 

সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকের অভিনেত্রী

১৯৮২ সালে ‘লুকিন টু গেট আউট’ চলচ্চিত্রে বাবা জন ভইটের সঙ্গে একটি শিশু চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে জোলির আবির্ভাব। তবে পেশাদার চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হিসেবে তার অভিষেক ঘটে স্বল্প বাজেটের ছবি সাইবর্গ-২ (১৯৯৩)-এর মাধ্যমে। তার অভিনীত প্রথম বড় মাপের ছবি ‘হ্যাকারস’ (১৯৯৫)। এ ছবিতে তিনি নাম-ভূমিকায় অভিনয় করেন। পরবর্তীতে জর্জ ওয়ালেস (১৯৯৭) ও জিয়া (১৯৯৮)-এর মতো সমালোচক-নন্দিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। নাট্য চলচ্চিত্র গার্ল, ইন্টারাপ্টেড (১৯৯৯)-এ অনবদ্য অভিনয়ের জন্য তিনি সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। ভিডিও গেম নায়িকা লারা ক্রাফট চরিত্র নিয়ে লারা ক্রাফট : টুম্ব রেইডার (২০০১) চলচ্চিত্রে অভিনয় তার তারকাখ্যাতি আরও বাড়িয়ে দেয়। মূলত এরপর থেকেই জোলি হলিউডের অন্যতম ও সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত একজন অভিনেত্রী হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন। তার চলচ্চিত্র-জীবনের সর্বোচ্চ ব্যবসায়িক সফল দুটি চলচ্চিত্র হলো অ্যাকশন-কমেডিধর্মী মি. অ্যান্ড মিসেস. স্মিথ (২০০৫) এবং অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র কুং ফু পান্ডা (২০০৮)।

 

গায়িকা রূপে

অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি এবার অপেরা গায়িকা হিসেবে উপস্থাপন হলেন। জোলিকে দেখা যায় মার্কিন কিংবদন্তি অপেরা গায়িকা মারিয়া ক্যালাসের জীবনভিত্তিক-এর ওপর নির্মিত সিনেমায়। মারিয়া নামের এই সিনেমাতে অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকে দেখা যায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করতে।

সর্বশেষ খবর