১০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১২:১৫

৪ শতাধিক করোনায় আক্রান্ত মরদেহ সৎকার করে ক্লান্ত রামানন্দ

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

৪ শতাধিক করোনায় আক্রান্ত মরদেহ সৎকার করে ক্লান্ত রামানন্দ

রামানন্দ

মরদেন সৎকার আর পাঁচটা কাজের মতো অত সহজ নয়। তার ওপর ওই মৃতদেহ যদি করোনায় আক্রান্ত হয় তবে তার ধারে কাছেও যেতে চান না ডোমেরা। কারণ কোভিড রোগীর দেহ সৎকার করা যেমন ঝুঁকিপূর্ণ তেমনি শ্রমসাধ্য। কিন্তু ৪৩ বছর বয়সী রামানন্দ সরকারের এগুলো কঠিন কিছু নয়। গত পাঁচ মাসে প্রায় ৪ শতাধিক কোভিড আক্রান্ত মরদেহ সৎকার করে এখন সংবাদের শিরোনামে আসামের এই যুবক। 

গুয়াহাটির উলুবাড়ি শ্মশান ঘাটে কর্মরত রামানন্দ জানান, গত এপ্রিল মাস থেকে আমি কোভিড রোগীর দেহ পুড়িয়ে আসছি এবং এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪ শতাধিক মরদেহ পুড়িয়েছি। আগে দিনে গড়ে ১-২ টি দেহ শ্মশানে আসতো কিন্তু শেষ এক মাসে প্রতিদিন দড়ে ১০-১২ টি মরদেহ পোড়াচ্ছি। 

গত কয়েক সপ্তাহে আসামে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। আসাম রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী রাজ্যটিতে মোট পজিটিভ রোগীর সংখা ১,৩৩,০৬৬ জন, মৃত ৩৯৬। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা গুয়াহাটির কামরূপ মেট্রোপলিটন জেলায়, এখানে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৫০০ থেকে ৬০০ রোগী আক্রান্ত হচ্ছেন। 

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, উলুবাড়ি শ্মশান ঘাটেই সবচেয়ে বেশি কোভিড রোগীকে দাহ করা হয়েছে। সংখ্যাটা ৪০০ এর বেশি। কিছু দেহ পাঠানো হচ্ছে ভূতনাথ শ্মশানঘাটে। পাশপাশি আঠগাঁও এবং ইসলামপুর শ্মশানেও ৭২ টি দেহ দাহ করা হয়েছে। 

রামানন্দ সরকার জানান, এই কয়দিন আমি এবং আমার দুই সহকর্মী বিকাল তিনটা থেকে দেহ সৎকারের কাজ শুরু করছি এবং তা শেষ করতে ভোর ২ টা ৩ টা হয়ে যাচ্ছে। একটা সময় আমি ক্লান্ত হয়ে যাই। মনে হয় মরদেহ আসাও থামবে না আর আমরাও বিশ্রাম পাবো না। আগে রোগীর দেহ ছুঁতে ভয় পেতাম কিন্তু এখন অভ্যাস হয়ে গেছে। 

মৌরীগাঁও জেলার জাগিররোডের বাসিন্দা রামানন্দ দুই বছর আগে গুয়াহাটিতে আসেন এবং ভূতনাথ শ্মশানঘাটে কাজ শুরু করেন। কিন্তু কোভিড রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকায় তাকে উলুবাড়িতে বদলি করে জেলা প্রশাসন। 

বর্তমানে গুয়াহাটি শহরের একটি হোটেলে সরকারি খরচে বসবাস করেন রামানন্দ। একাধিকবার তার কোভিড পরীক্ষা হলেও এখনও পর্যন্ত তার শরীরে কোভিডের নমুনা মেলেনি। 


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর