শেখ জামাল বাংলাদেশের যতই শক্তিশালী দল হোক না কেন, ফুটবলের এই সংকট অবস্থায় তারা ভারতের প্রখ্যাত দল মোহনবাগানকে হারাবে তা কেউ ভাবতেই পারেনি। বরং গ্রুপের প্রথম ম্যাচে কলকাতা মোহামেডানের কাছে হারাতে শঙ্কা ছিল মোহনবাগানের কাছে না জানি শোচনীয় পরাজয় ঘটে। মোহনবাগানের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় নতুন কোনো ঘটনা নয়। কিন্তু রুগ্ন ফুটবলকে যেখানে লাইফ সাপোর্ট দেওয়ার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে সেখানে কলকাতার মাটিতে মোহনবাগানকে হারানোটা অবশ্যই কৃতিত্বের। সেমিফাইনালে ভারতের আরেক বিখ্যাত দল ইস্টবেঙ্গলের বিপক্ষে লড়বে শেখ জামাল। অনেকেরই আশা বাংলাদেশের প্রথম দল হিসেবে আইএফএ শিল্ডে শেখ জামাল শিরোপা জিতবে। এ আশা পূরণ নাও হতে পারে। হয়তো ফাইনালেই বিদায় নিতে পারেন মামুনুলরা। কিন্তু তাতে কি শেখ জামাল তিরস্কৃত হবে। না, মোহানবাগানকে হারিয়ে তারা বরং ঘুমিয়ে থাকা ফুটবলকে জগিয়ে তুলেছে। ফুটবলে ভারত ও বাংলাদেশের মান যে একেবারে আকাশ-পাতাল নয় তা তারা বুঝিয়ে দিয়েছে। জাতীয় দলের নন্দিত ফুটবলার গোলাম রব্বানী হেলাল শনিবার ম্যাচ শেষ হওয়ার পর টেলিফোনে আবেগভরা কণ্ঠে জানালেন, 'ম্যাচ হারলেই ফুটবলারদের তিরস্কার করা হয়। কিন্তু সুযোগ-সুবিধা দিলে তারা যে জ্বলে উঠতে পারে তাতো প্রমাণ পেলেন। শেখ জামালের দক্ষ ম্যানেজমেন্টের কারণে আজ তারা দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও সাফল্য পাচ্ছে। অথচ এই দলের অধিকাংশ খেলোয়াড় জাতীয় দলে থাকার পরও ব্যর্থ হচ্ছে কেন? নিশ্চয় এর পেছনে কোনো গলদ রয়েছে। দেখুন বিদেশে খেলতে গেলেই আমরা জয়ের আশা করি। না পারলে খেলোয়াড়দের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করি। অথচ একবারও কি চিন্তা করেছি ওদেরকে আমরা জয়ের জন্য ঠিকমতো তৈরি করতে পারছি কিনা। বলতে পারেন এখনতো ফুটবলে ডাচ কোচ আছে। তারপরও সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে এমন করুণ পরিণতি কেন? আসলে আমরা কোচের পেছনে যতই লাখ লাখ টাকা খরচ করি না কেন লাভ হবে না। প্রয়োজন আগে খেলোয়াড়দের সাহস বাড়ান। আর এজন্য একমাত্র পথ দেশে নিয়মিত আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের ব্যবস্থা করা। সালাউদ্দিন ভাইকে আমরা দেশের ফুটবলে যোগ্য ব্যক্তিই বলে জানি। অথচ তিনি সভাপতি হওয়ার পর দেশে কোনো আন্তর্জাতিক ফুটবলের দেখা মিলছে না। কতই না প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিখ্যাত বিখ্যাত দল বঙ্গবন্ধু কাপে অংশ নেবে। কিন্তু ৯৯ সালের পর দেশে কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টেই হচ্ছে না। দেশের বাইরে না পারুক দেশেই যদি নিয়মিত টুর্নামেন্ট হতো ফুটবলে কি এই রুগ্ন অবস্থা থাকতো। মোহানবাগানকে হারানোর পর শেখ জামাল চোখটা খুলে দিয়েছে। একবার চিন্তা করুন স্বল্প প্রস্তুতি নিয়েই তারা এত বড় একটা দলকে হারাতে পেরেছে। নিয়মিত আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেললে মোহবাগানকে কেন আরও বড় দলকে হারাতে পারব।'