বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়া প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়া বিদেশ যেতে চাইলে তাকে কারাগারে ফিরে গিয়ে সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে। প্রচলিত আইনে এর বাইরে কোনো সুযোগ নেই।’
আজ শনিবার ঢাকার একটি হোটেলে আইন সাংবাদিকতার এক কর্মশালায় আইনি ব্যাখ্যা তুলে ধরে এসব কথা বলেন তিনি। কর্মশালায় আনিসুল হক ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা নিয়ে আলোচনার সময় খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ টানেন।
সংবিধান, আইন ও বিচার বিভাগে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম ও ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভের (এমআরডিআই) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই কর্মশালায় আইনমন্ত্রী ছাড়াও প্রশিক্ষক ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মাশহুদুল হক এতে সভাপতিত্ব করেন, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইয়াছিন ছিলেন সঞ্চালনায়।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সাজা মওকুফের ক্ষমতা সরকারের আছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় এ সংক্রান্ত ছয়টি উপধারা আছে। একজনের সাজা শর্ত ছাড়া সম্পূর্ণ মওকুফ করতে পারে অথবা শর্ত ছাড়া কিছুটা মওকুফ করতে পারে। আবার শর্তসাপেক্ষে পুরোটা মওকুফ করতে পারে কিংবা কিছুটা মওকুফ করতে পারে বা বাতিল করতে পারে। এখানে (৪০১ ধারা) কিন্তু কোথাও বলা নেই, একটা আবেদন যখন নিষ্পত্তি করে ফেলা হয়, সেই আবেদনটিকে আবার রিকনসিডার করতে পারবে। তার মানে হচ্ছে আবেদনটি রিকনসিডার করার কোনো সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘৪০১ ধারায় সরকারের ক্ষমতার কথা বলা আছে। এই ধারা সংস্কারের ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর দফরের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এটা ব্যবহার করে থাকে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী থেকে অনুমতি নিতে হয়। আর মতামত নিতে হয় আইন মন্ত্রণালয়ের।’
‘খালেদা জিয়ার মামলার ক্ষেত্রে আমাদের মতামত দিতে হয়েছে। উনার আত্মীয়-স্বজনদের পক্ষ থেকে যখন আবেদন করা হল, তখন তার সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দিলাম। তার মানে, খালেদা জিয়ার পক্ষে যে আবেদনটা করা হয়েছিল, সেটি নিষ্পত্তি করা হয়েছে।’
এরপরই আইনমন্ত্রী অলোচনা করেন, বিদেশ যেতে হলে খালেদা জিয়ার এখন কী করতে হবে, তা নিয়ে।
তিনি বলেন, ‘এখন তারা বিদেশ যেতে অনুমতি চায়। কিন্তু কথা হচ্ছে, যে আবেদনটি নিষ্পত্তি করা হয়েছে, সেটি পুনর্বিবেচনার ক্ষমতা আইনে আমাদের দেওয়া হয়নি। তাহলে উনাদের কী করতে হবে? তাদের আবার আবেদন করতে হবে। আর আবেদন করতে হলে আগের আবেদনটি বাতিল করতে হবে এবং উনাকে (খালেদা জিয়া) আবার জেলে যেতে হবে।’
সূত্র : বিডি নিউজ
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ