মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বেশি চাপে বেশি ভুল হচ্ছে

টি-২০ বিশ্বকাপ হচ্ছে বাংলাদেশের হতাশার আসর। এবার হতাশা কাটানোর জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতে এসেছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। বিশ্বকাপের মতো বড় আসরের চাপ নিতে না পেরে বেশি ভুল করছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। আর একের পর ভুলের কারণে টানা তিন ম্যাচ হেরে বেজে গেছে বিদায় ঘণ্টা। আজ সুপার টুয়েলভের চতুর্থ ম্যাচে আবুধাবিতে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। কাল দুবাইয়ে মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো কথা বলেন।

 

প্রশ্ন: দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি কেমন?

রাসেল ডমিঙ্গো : বেশ ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি। শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে হারার পর আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আমরা খুব কম ব্যবধানে শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে হেরেছি। এই দুই হারে বিশ্বকাপে আমাদের সুযোগ নেই বললেই চলে। কিন্তু আগামীকালের (আজ) ম্যাচের জন্য আমরা প্রস্তুত। যে কোনো লড়াই-ই গুরুত্বপূর্ণ। এখনো আমাদের হাতে দুটি ম্যাচ আছে। ছেলেরা পরের দুই ম্যাচে ভালো পারফরম্যান্সের জন্য মুখিয়ে আছে।

 

প্রশ্ন: শেষ ম্যাচে নাটকীয় পরাজয়ের পর ক্রিকেটারদের নতুন করে উজ্জীবিত করা কতটা কঠিন?

রাসেল ডমিঙ্গো: কাজটা মোটেও সহজ নয়। এটা ক্রিকেটাররাও বোঝেন। তবে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে আমরা বেশ ভালো অবস্থায় ছিলাম। কিন্তু দুটি ভুলের কারণে হারতে হয়েছে। অবশ্যই ছেলেরা খুবই হতাশ। গত কয়েকদিন খুবই খারাপ কেটেছে। তারা জানে, দেশের মানুষ তাদেরকে নিয়ে অনেক বড় কিছু আশা করেছিল। মিডিয়ার আগ্রহও অনেক বেশি ছিল। হারার পর সমর্থকরা খুবই হতাশ হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ক্রিকেটারদের উজ্জীবিত করা খুবই কঠিন কাজ। যত খারাপই লাগুক না কেন দেশের জন্যই তাদের খেলতে হবে এবং শতভাগ দিয়েই লড়াই করতে হবে।

 

প্রশ্ন : দক্ষিণ আফ্রিকার বিশেষ কোন দিক নিয়ে কাজ করছেন?

রাসেল ডমিঙ্গো : তারা খুবই ভালো খেলছে এই টুর্নামেন্টে। আমি দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে অনেক দিন কাজ করেছি। তারা স্পিনে সব সময়ই কিছু দুর্বল। আশা করছি, এখানকার কন্ডিশন আমাদের সহযোগিতা করবে। আমি দক্ষিণ আফ্রিকার নির্দিষ্ট কিছু দিক চিহ্নিত করেছি। কিন্তু এখন যদি আমি সেটা বলে দেই দেখা গেল তা ঠিক হয়নি। তবে এই ম্যাচ নিয়ে আমরা টিম মিটিংয়ে অনেক আলোচনা করেছি।

 

প্রশ্ন : সাকিব আল হাসানের অনপুস্থিতি দলে কতটা সমস্যায় ফেলতে পারে?

রাসেল ডমিঙ্গো : অবশ্যই এটা অনেক বড় ক্ষতি দলের জন্য। তার অনুপস্থিতিতে দলের ভারসাম্য ঠিক করাই কঠিন হয়ে যায়। একজন বোলার কিংবা ব্যাটসম্যানদের বাড়তি খেলাতে হয়। এ কারণে একজন পার্টটাইম বোলারের ওপর ভরসা করতে হবে। দলের কঠিন পরিস্থিতি তার সব কিছু শান্ত রাখার দারুণ ক্ষমতা আছে। যা দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সব কিছু মিলেই সাকিবের না থাকাটা দলের জন্য অনেক বড় ক্ষতি। সাকিবের জায়গায় নতুন ক্রিকেটার সুযোগ পাবেন। এই ম্যাচই হয়তো তার প্রথম ম্যাচ হবে।

 

প্রশ্ন : বিশ্বকাপ শেষ হলেও ভালো স্মৃতি নিয়ে দেশের ফেরার জন্য পরের দুই ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ কি জয়ের জন্য প্রস্তুত?

রাসেল ডমিঙ্গো : প্রতিটি ম্যাচে জয়ের কথা চিন্তা করেই আমরা খেলতে নামি। এ ম্যাচেও আমাদের একটাই লক্ষ্য থাকবে কিভাবে ভালো খেলা উপহার দিয়ে জয় লাভ করা যায়। আমরা চিন্তা করি ম্যাচ বাই ম্যাচ। এখন লক্ষ্য দক্ষিণ আফ্রিকা। এই ম্যাচটিও আলাদা একটি ম্যাচ। কিন্তু লক্ষ্য আমাদের একটাই জয়।

 

প্রশ্ন : সেমিফাইনালের আশা শেষ। তারপরও এই আসরের পরের দুই ম্যাচ থেকে কি অর্জন করতে চান?

রাসেল ডমিঙ্গো : দেখুন, টি-২০ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় পর্বে এখন পর্যন্ত মাত্র একটি ম্যাচই জিতেছে। তাই এই পর্যায়ে প্রতিটি জয়ই রেকর্ড হয়ে থাকবে। সে কারণেই আমরা পরের দুই ম্যাচে জিততে চাই। আমাদের শেষ ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। সেটি নিয়ে ভাবছি না। এখন ভাবনায় কেবল দক্ষিণ আফ্রিকা।

 

প্রশ্ন : আইপিএলের পর বিশ্বকাপ খেলার কারণে দেখা গেছে এই টুর্নামেন্টে অনেক ক্রিকেটারকে খুবই ক্লান্ত দেখাচ্ছে। সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমানও তো আইপিএল খেলেছে, তারা কি খুবই ক্লান্ত?

রাসেল ডমিঙ্গো : এই প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে পারবো না। এটা সাকিব-মুস্তাফিজকেই জিজ্ঞেস করুন। জানি, আমরা বেশ কিছু ভুল করেছি, যে কারণে ম্যাচ হেরেছি। এ কারণে তাদের ওপর অন্যকোনো দোষ চাপিয়ে দিতে চাই না।

 

প্রশ্ন : দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বাউন্স ব্যাক করা কতটা কঠিন? আপনার পরিকল্পনা কি?

রাসেল ডমিঙ্গো : আমরা তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডের যে উদ্দীপনা নিয়ে খেলেছি এ ম্যাচেও একই রকম থাকবে। আমরা ইতিবাচকভাবেই খেলব। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আমরা ভালো ব্যাটিং করার পরও বোলিংয়ে ঠিকভাবে শেষ করতে পারিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ব্যাটিংয়ে ফিনিশিং ভালো হয়নি। আমাদের লক্ষ্য থাকবে এ ম্যাচে যত কম ভুল করা যায়। বিশ্বকাপের মতো বড় টুর্নামেন্টে বেশি চাপ নিতে গিয়েই বেশি ভুল হচ্ছে। এখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর