শিরোনাম
রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা
নারী এশিয়া কাপ

থাইল্যান্ডকে উড়িয়ে দুরন্ত শুরু

৯ উইকেটে জয় বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

থাইল্যান্ডকে উড়িয়ে দুরন্ত শুরু

১১ নম্বর শেষ বলে ফারজানা হক বাউন্ডারি মারেন পুথাওয়াংকে। ওই বাউন্ডারিতে থাইল্যান্ডের স্কোর ছুঁয়ে ফেলে নিগার সুলতানার বাংলাদেশ নারী দল। সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম লাগোয়া নতুন করে তৈরি একাডেমি খেলা দেখতে আসা হাজার কয়েক দর্শক তখন জয়োৎসব শুরু করে দিয়েছে। ড্রেসিং রুম ছেড়ে বেরিয়ে আসেন সতীর্থ ক্রিকেটাররা। ১২ নম্বর ওভারের প্রথম তিন বল রক্ষণাত্মক মেজাজে খেলেন নিগার সুলতানা। দর্শকরা মেনে নিতে পারছিলেন না নিগারের এই ধৈর্য পরীক্ষা। ওভারের চতুর্থ বলের আগে নিগার একবার স্টেডিয়ামের চারধার দেখলেন। এরপর লাওমিকে সোজা আছড়ে ফেললেন সীমানার ওপাড়ে! ছক্কা। ওই ছক্কায় বাংলাদেশ নারী দল ৯ উইকেটের পর্বতসমান জয়ে শুভ সূচনা করল টি-২০ এশিয়া কাপে। স্কোর বোর্ডে তখনও ৫০ বল বাকি। নারী দলের ক্রিকেট ইতিহাসে এরচেয়ে বড় জয় রয়েছে একটি। নেপালের বিপক্ষে ১০ উইকেটে জিতেছিলেন নারীরা। ৯ উইকেটে জয় রয়েছে ৩টি। দুটিই থাইল্যান্ডের বিপক্ষে। নিগারের ওই ছক্কার পর জয়ের আনন্দে গোটা স্টেডিয়াম উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে। ক্রিকেটাররা ছুটে আসেন মাঠে। নারী দলের পরের ম্যাচ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আগামীকাল সকাল ৯টায়।

নিগার, শামীমা, ফারজানা, সালমা, জাহানারাদের পরিচিত প্রতিপক্ষ থাইল্যান্ড। সেপ্টেম্বরে ‘মরু শহর’ আবুধাবিতে থাইল্যান্ডকে ১১ রানে জিতে টি-২০ বিশ্বকাপের চূড়ান্তপর্ব নিশ্চিত করে নিগার বাহিনী। চার বছর আগে ২০১৮ সালের এশিয়া কাপেও থাই নারী দলকে একই ব্যবধানে হারিয়েছিল সালমা বাহিনী। ওই আসরে ভারতকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। ফাইনালে সালমারা হারিয়েছিলেন ভারতকে। ২০০৪ সাল থেকে নারী এশিয়া কাপ শুরু। গতকাল শুরু হয়েছে নারী এশিয়া কাপের অষ্টম আসর। বাংলাদেশ সর্বশেষ আসরের চ্যাম্পিয়ন এবং ভারত টানা ৬ বারের চ্যাম্পিয়ন। এই প্রথম এশিয়া কাপের আসর আয়োজন করছে বাংলাদেশ। আসরের খেলাগুলো হচ্ছে ২০ ওভারের। আগামী বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় টি-২০ বিশ্বকাপ। নিগাররা খেলবেন ওই আসরে।  

একাডেমি মাঠে সকাল ৯টায় শুরু হয় ম্যাচ। টস জিতে ব্যাটিং করে থাইল্যান্ড। ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে ১৬ রানে ২ উইকেট হারায় থাইল্যান্ড। এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬.১ ওভারে ৩৮ রান যোগ করেন নাথাকা চানথাম্প-পান্নিতা মায়া। ১২ ওভারের শেষ বলে মায়ার বিদায়ের পর ব্যাটিংয়ে ধস নামে থাইল্যান্ডের। ধারাবাহিকভাবে উইকেট হারিয়ে ১৯.৪ ওভারে ৮২ রানে গুটিয়ে যায়। সর্বোচ্চ ২৬ রান করেন পান্নিথা মায়া। ২২ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৩টি চার। নাথাকান ২০ রান করেন ৩৮ বলে। শেষ দিকে সরোনারিন তিপুচ ১০ ও রসেনান কানু ১০ বলে ১১ রান করলে স্কোর মানসম্মানজনক অবস্থানে পৌঁছায়। নিগার বাহিনীর পক্ষে লেগ স্পিনার রুমানা আহমেদ ৩ ওভারে ৯ রানে নেন ৩ উইকেট। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন নাহিদা আক্তার, সানজিদা আক্তার মেঘলা ও সোহেলি আক্তার।

টার্গেট ৮৩ রান। দুই ওপেনার শামীমা সুলতানা ও ফারজানা ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে তুলে নেন ৫২ রান। এতে জয়ের ভীত তৈরি হয়ে যায়। বিশেষ করে শামীমা ছিলেন আক্রমণাত্মক মেজাজে। ম্যাচসেরা ৪৯ রানের ইনিংস খেলেন মাত্র ৩০ বলে ১০ চারে। ইনিংসের নবম ওভারের প্রথম বলে বোল্ড হন শামীমা। মাত্র ১ রানের জন্য মিস করেন ক্যারিয়ারের ৪৫ টি-২০ ম্যাচ ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি। ৬৯ রানে জুটি ভাঙার পর বাকি কাজটুকু সারেন ফারজানা ও অধিনায়ক নিগার অবিচ্ছিন্ন থেকে ১৯ রানের জুটি গড়ে। ওপেনার ফারজানা ২৯ বলে এক ছক্কা ও দুই চারে অপরাজিত থাকেন ২৬ রানে এবং ছক্কায় শেষ করা ম্যাচ নিগার অপরাজিত থাকেন ১১ বলে ১০ রানে অপরাজিত থেকে।

সর্বশেষ খবর