বুধবার, ১ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

হাতুরার একটাই প্ল্যান ‘আক্রমণ’!

মেজবাহ্-উল-হক

হাতুরার একটাই প্ল্যান ‘আক্রমণ’!

ট্রফির সামনে দাঁড়িয়ে করমর্দন করছেন তামিম ইকবাল ও জস বাটলার - ছবি : রোহেত রাজীব

ক্রিকেটের আবহ কেমন যেন গুমট হয়ে গেছে। একটা ‘অন্যরকম’ খবর এখন মিডিয়ার শিরোনাম। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান এবং অধিনায়ক তামিম ইকবাল একে অপরের সঙ্গে কথা বলেন না। বিষয়টি নিয়ে মেইনস্ট্রিম মিডিয়া থেকে সোশ্যাল মিডিয়া সবখানে ব্যাপকভাবে আলোচিত!

ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন দল ইংল্যান্ড খেলতে এসেছে। টাইগারদের প্রস্তুতি কেমন? ঘরের মাঠে টানা সাত ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর টাইগাররা থেমে যায় কি না- এসব নিয়ে যেন কোনো আলোচনাই নেই। তবে একটা বিষয় পরিষ্কার যে, মিডিয়ায় যেভাবেই বিষয়গুলো আসুক না কেন তা নিয়ে মোটেও ভাবছেন না বাংলাদেশের কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহে এবং তার শিষ্যরা। 

সাকিব-তামিম কিংবা সিনিয়র-জুনিয়র বিষয়গুলো সম্পূর্ণ ভুলে যেতে চান কোচ। তার কাছে এক বা একাধিক ক্রিকেটারকে নিয়ে তিনি আলাদা করে কিছু ভাবছেন না। তিনি বরং পুরো দলের কথা চিন্তা করছেন। টিম বাংলাদেশ নিয়ে ভাবছেন। ম্যাচপূর্ব সম্মেলনে বিষয়টি উঠতেই হাতুরাসিংহে বললেন, ‘আমি এক সপ্তাহ ধরে কাজ করছি। ড্রেসিংরুমে এমন কোনো কিছু চোখে পড়েনি যে কোনো ক্রিকেটার একা রয়েছেন। আমরা একটি দল হিসেবেই আছি। জাতীয় দলের হয়ে যখন খেলবে তখন দল হিসেবেই খেলবে এবং সেভাবে পারফর্ম করবে। আমি এখানে সমস্যার কিছু দেখছি না।’

হাতুরাসিংহে এর আগে যখন কোচের দায়িত্বে ছিলেন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি নাকি সিনিয়রদের চেয়ে তরুণদের বাড়তি গুরুত্ব দেন! যদিও এবার বাংলাদেশে এসে প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই বলেছেন, বিষয়টি সঠিক নয়। তবে এবার স্বয়ং বোর্ড সভাপতির কাছ থেকে হাতুরাসিংহে সবুজ সংকেত পেয়েছেন, পারফর্ম করতে না পারলে তিনি যে কাউকে দল থেকে বাদ দিতে পারেন। সেটা যদি সিরিয়র কেউও হন তাতেও সমস্যা নেই।

তাই হাতুরাসিংহের এই নতুন অধ্যায়টা দলের প্রত্যেক ক্রিকেটারের জন্যই চ্যালেঞ্জিং। দলে থাকতে হলে পারফর্ম করার বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ ওয়ানডে দলে এখনো ভরসা সিনিয়র চার ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম। তবে কোচের প্রধান আস্থা তরুণরা। তরুণদের মধ্য থেকে ভবিষ্যৎ নেতা খোঁজার  মিশনও চালু করে দিয়েছেন। গতকাল দেখা যায়, দলের তরুণ ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলছেন। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনেও আলোচনা হয়। হাতুরাসিংহে বলেন, ‘এটা চ্যালেঞ্জ নয়। এটা দায়িত্ব। দলের চার সিনিয়র ক্রিকেটার ১৫-১৭ বছর ধরে খেলছে। তারা আরও ১০ বছর খেলবে না। দলকে নেতৃত্ব দিতে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে তুলে আনতে হবে। আমাদের ওদের বাছাই করতে হবে না, ওরাই নিজেদের আচরণ ও পারফর্মেন্স দিয়ে আলোচনায় চলে আসছে।’

বাংলাদেশে নিজের দ্বিতীয় অধ্যায়ের শুরু নিয়ে বেশ রোমাঞ্চিত কোচ। শুরুটা হার দিয়ে হোক তা যেন কল্পনাও করছেন না হাতুরাসিংহে। তার মননে-মগজে একটাই শব্দ ‘জয়’! ইংলিশদের বিরুদ্ধে আজ প্রথম ওয়ানডে খেলতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। জয় দিয়েই সিরিজ এবং নিজের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরুর জন্য মরিয়া হাতুরা।

প্রধান কোচ বলেন, ‘আমরা প্রথমে ব্যাটিং করি কিংবা বোলিং- ভালো শুরু খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের প্রস্তুতি খুবই ভালো। সবাই কঠোর পরিশ্রম করেছে। দলের সবার একাগ্রতা দেখে আমি মুগ্ধ। এটা জোর দিয়ে বলতে পারি আমাদের ক্রিকেটাররা খুবই ভালোভাবে প্রস্তুত।’

প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড সাধারণত আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে অভ্যস্ত। পৃথিবীর যে প্রান্তেই খেলুক না, তারা সব সময় প্রতিপক্ষকে চাপে রেখে খেলতে বেশি পছন্দ করে। তবে ঘরের মাঠে ঠিক একই প্ল্যান হাতুরাসিংহের। রাখ-ঢাক না করে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেই দিলেন, ‘আমরা আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে চাই। এর পেছনে অনেক কারণও আছে।’ কোচের লক্ষ্য শুরু থেকেই ইংল্যান্ডকে চাপে রাখা। ব্যাটিং, বোলিং কিংবা ফিল্ডিং- বাংলাদেশ দল শুরুতে যাই করুক না কেন প্ল্যান একটাই, ‘আক্রমণ’ করা! তবে হাতুরাসিংহের আক্রমণাত্মক পন্থা কতটা সাফল্য বয়ে আনবে তা সময়ই বলে দেবে।

সর্বশেষ খবর