ছয় বছর আগে সিনিয়র এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ফাইনালের কথা নিশ্চিত করেই মনে আছে সবার। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২০১৮ সালের ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। চ্যাম্পিয়ন হতে ভারতের দরকার ছিল মাত্র ৬ রান। অথচ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ওই ওভারে জয় ছিনিয়ে নিতে নাভিশ্বাস উঠেছিল ভারতের। শেষ বলে ‘লেগ বাই’ নিয়ে এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছিলেন রোহিত শর্মারা। ছয় বছর পর সেই ‘মরুশহর’ দুবাইয়ে ফের দুই দেশ মুখোমুখি হচ্ছে। এবার সিনিয়রদের এশিয়া কাপে নয়, যুবাদের এশিয়া কাপে। বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায় আজ বাংলাদেশ ও ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দল দুটি যুব এশিয়া কাপের শিরোপা জিততে মুখোমুখি হচ্ছে। আজিজুল হাকিমের নেতৃত্বে বাংলাদেশের যুবারা দুবাইয়ে নামবেন শিরোপা ধরে রাখতে এবং টানা দ্বিতীয়বার এশিয়া সেরা হতে। বিপরীতে মোহাম্মদ আমানের ভারত যুব দল নামছে শিরোপা পুনরুদ্ধার করতে।
বাংলাদেশ বর্তমান যুব এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন। আগের ১০ আসরে ভারত রেকর্ড ৮ বারের চ্যাম্পিয়ন। দলটি একবার যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন পাকিস্তানের সঙ্গে। এ ছাড়া একবার শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। টাইগার যুবারা অবশ্য এবার নিয়ে তৃতীয়বার ফাইনাল খেলছে। ভারত ফাইনাল খেলেছে নবমবার। আগের আট ফাইনালের সবগুলোতেই শিরোপা জিতেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের যুবারা আরও একবার পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিল যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে। ২০১৯ সালে কলম্বোর লো-স্কোরিং ফাইনালে ৫ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। ভারতের ১০৬ রান টপকাতে ১০১ রানে গুটিয়েছিল টাইগার যুবারা। গত বছর দুবাইয়েই স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ১৯৫ রানের আকাশসমান ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ।
টানা দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলতে হাকিমের নেতৃত্বে টাইগার যুবারা ১৬৭ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তানি যুবাদের। একই ব্যবধানে ভারতীয় যুবারাও হারিয়েছে শ্রীলঙ্কান যুবাদের। আশ্চর্য হলেও সত্যি, বাংলাদেশ ও ভারতের যুবারা গ্রুপ পর্বে একটি করে ম্যাচ হেরেছিল। হাকিম বাহিনী ৭ রানে হেরেছিল শ্রীলঙ্কান যুবাদের কাছে। পাকিস্তানের কাছে ৪৩ রানে হেরেছিল ভারত। এ ছাড়া টাইগার যুবারা আফগানিস্তান যুব দলকে ৪৫ রানে এবং ৫ উইকেটে নেপালকে হারায়।
গত পরশু সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে মাত্র ৩৭ ওভারে ১১৬ রানে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশ। পাকিস্তানি যুবাদের গুড়িয়ে দিতে শুরুতে দারুণ বোলিং করেন মারুফ মৃধা। ইনিংসের শুরুর ৩ ওভারেই তিনি সাজঘরে ফেরান দুই পাক ওপেনার উসমান ও শাহজাইবকে। এরপর আঘাত হানেন মিডিয়াম পেসার ইকবাল হোসেন ইমন। ৭ ওভারে ২৪ রানের খরচে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন ইমন। ১১৭ রানের টার্গেটে দলীয় ২৮ রানের দুই ওপেনারকে হারালেও জয় তুলে নিতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি টাইগার যুবাদের। অধিনায়ক আজিজুল হাকিম ৬১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে তোলেন। টুর্নামেন্টে দারুণ ছন্দে রয়েছেন টাইগার যুব অধিনায়ক। ৪ ম্যাচে একটি সেঞ্চুরি ও দুটি হাফ সেঞ্চুরিসহ ১১২ গড়ে ২২৪। তিনি ১০৩ রান করেন আফগানিস্তান, ৫২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন নেপাল এবং শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৮ রান করেন। দুই টাইগার যুবা পেসার আল ফাহাদ ও ইমন ১০টি করে উইকেট নিয়ে সবার ওপরে অবস্থান করছেন।