স্কিপিং রোপস। বাংলায় দড়ি লাফ। গ্রাম-বাংলায় প্রাচীনকাল থেকেই এই খেলার জনপ্রিয়তা অনেক। ছোটদের জন্য তো বটেই। এমনকি বড়রাও সুযোগ পেলে দড়ি লাফ খেলতে কসুর করেন না। বর্তমান প্রেক্ষাপট অবশ্য আলাদা। এখন আর স্কিপিং রোপস বা দড়ি লাফ তেমন একটা দেখা যায় না। এর প্রধান কারণ, প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এখন গ্রামেও কম্পিউটার গেমসের প্রতিই বাচ্চাদের আকর্ষণ বেশি। হৈহুল্লোড়ের মধ্যে তেমন একটা যেতেই চায় না তারা! অথচ একটা সময় বাচ্চাদের ঘরে রাখাই কষ্টকর হতো মায়েদের জন্য। স্কুল থেকে ফিরেই খেলার মাঠে ছুটে যেত সবাই। মজার সেসব খেলার অনেক কিছুই এখন হারিয়ে গেছে। স্কিপিং রোপস কিংবা দড়ি লাফ তেমনি একটি খেলা।
দড়ি লাফ কেবল খেলাই নয়, একটি চমৎকার ব্যায়ামও। শরীরের মেয়াদ কমানোর জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হিসেবেও ধরা যায় দড়ি লাফকে। প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৭০০ ক্যালরি খরচ হয় এ খেলায়। এর অর্থ প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট দড়ি লাফ খেললেই অতিরিক্ত মেদ জমার সুযোগ পাবে না। দড়ি লাফের প্রকারভেদ রয়েছে। বেসিক জাম্প। মাথার উপর দিয়ে দড়ি ঘুরিয়ে এনে লাফ দিয়ে পায়ের নিচ দিয়ে বের করা। এ ক্ষেত্রে দুই পাই একত্রে উপরে উঠাতে হয়। আরেকটি আছে অলটারনেট ফুট জাম্প। এ ক্ষেত্রে এক পা এক পা করে দড়ি পার করতে হয়। ক্রিস ক্রস হচ্ছে দুই হাতকে পরস্পরের বিপরীত দিকে নিয়ে দড়ি লাফ করা। এ ছাড়াও সাইড উইং, ফ্রন্টব্যাক ক্রস, ডাবল আন্ডার ইত্যাদি দড়ি লাফও রয়েছে।
স্কিপিং রোপস কিংবা দড়ি লাফ গোড়ালির ইনজুরি থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখায়ও দারুণ উপকার করে। কাঁধের ক্ষমতা বাড়ায়। শরীরের সব অঙ্গেই ঝাঁকির কারণে মাংসপেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। কাঁধ এবং পায়ের পেশি সুগঠিত হয়। এ ছাড়া পেটে মেদ জমার সুযোগ পায় না। দড়ি লাফ নিজের উঠোন কিংবা ছাদেও করা সম্ভব। ঘরের ভেতর দড়ি লাফ না করাই ভালো। তবে উপরের দিকে যথেষ্ট পরিমাণে শূন্যস্থান থাকলে ঘরেও করা যায়। খুবই অল্প সময়ে কার্যকরী একটি ব্যায়াম স্কিপিং রোপস কিংবা দড়ি লাফ। তবে এই ব্যায়ামের জন্য অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। পায়ের নিচ দিয়ে দড়ি আনার সময় যেন পায়ে পেঁচিয়ে না যায়। এ ছাড়া শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য দৃষ্টি সবসময়ই সামনে রাখতে হবে।