মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

নিচু রেলব্রিজের কারণে হুমকিতে যান চলাচল

মালবাহী লরি ও দোতলা বাস চলতে পারে না

হাসান ইমন

নিচু রেলব্রিজের কারণে হুমকিতে যান চলাচল

ছবি : শামছুল হক রাসেল

রাজধানীর দয়াগঞ্জে রেলব্রিজের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে যান চলাচল ব্যবস্থা। ব্রিজটি নিচু করে নির্মাণের কারণে মালবাহী লরি ও দ্বিতল বাস চলাচল করতে পারে না। এ ব্রিজ নির্মাণ শেষ হওয়ার দুই মাস পার হলেও এরই মধ্যে বিভিন্ন পণ্যবাহী যান চলাচলের কারণে কয়েকটি স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই সঙ্গে ব্রিজের নিচের সড়কটি ভাঙাচোরা হওয়ায় মূল সড়ক থেকে অনেকটা নিচু। এতে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটছে বলে স্থানীয়রা জানান।

জানা যায়, পদ্মা সেতু সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে যশোর ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম অংশে ঢাকা কমলাপুর থেকে গেন্ডারিয়া ৬ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।

আর কমলাপুর রেলস্টেশনের শহরতলি প্ল্যাটফরমই হবে দক্ষিণবঙ্গের টার্মিনাল স্টেশন। এ অংশে বানানো হবে তিনটি প্ল্যাটফরম। এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে একটির কাজ। প্রথম প্ল্যাটফরমে বসানো হয়েছে লুপ, সিগন্যাল ও মেইন রেললাইন। বাকি দুটি প্ল্যাটফরমের কাজও চলছে দ্রুতগতিতে। রেলপথের ৪টি আন্ডারপাসের শতভাগ কাজও শেষ হয়েছে। এ অংশে রেলসেতু হবে ১৫টি। তার মধ্যে মেজর সেতু ৪টি। বুড়িগঙ্গা আর ধলেশ্বরী নদীর বুকে সম্পন্ন হয়েছে বড় সব সেতুর কাজও। এই অংশে দয়াগঞ্জ ব্রিজ অন্যতম। ইতোমধ্যে কাজ শেষ করে রেল চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করেছে সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, দয়াগঞ্জ থেকে ধোলাইপাড় যাওয়া সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক, লরি চলাচল করে। যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান ও কেরানীগঞ্জে দ্রুত যাওয়ার অন্যতম সড়কও এটি। দয়াগঞ্জে সড়কের ওপর দিয়ে পদ্মা সেতুর (কমলাপুর-পদ্মা সেতু) রেলসংযোগ  গেছে। এখানে নির্বিঘ্নে রেল চলাচলের জন্য আন্ডারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। ওপর দিয়ে রেল চলাচল করবে। আর নিচ দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে। কিন্তু সমস্যা হলো এ আন্ডারপাসের ব্রিজটি নিচু হওয়ায় দ্বিতল বাস চলাচল করতে পারে না। একই সঙ্গে পণ্যবাহী লরি চলাচলে ব্রিজের সঙ্গে বাঁধছে। লরিগুলো জোর করে চলাচল করায় ব্রিজের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট অংশে ভেঙে গেছে। একই সঙ্গে ব্রিজের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও ব্রিজটির নিচের সড়কটি ভাঙাচোরা। বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত থাকায় যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে বলে চালক ও স্থানীয় দোকানিরা জানান। ব্রিজ সংলগ্ন আল্লাহর দান এন্টারপ্রাইজের কর্মচারী মো. মামুন বলেন, এ ব্রিজটি নির্মাণ কাজ দুই মাস আগে শেষ হয়েছে। কিন্তু ব্রিজটি অনেক নিচু। এ কারণে বিআরটিসির দ্বিতল বাস চলতে পারে না। আর মালবাহী বড় লরিগুলো চলাচলে খুব সমস্যা হয়। এর কারণে ব্রিজের বিভিন্ন স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, পুরনো ব্রিজটি আরও উঁচু ছিল। আগে এ সড়ক দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারত। এখন ব্রিজ নিচু হওয়ায় চলাচল করতে পারে না। আর ব্রিজের নিচে সড়কের অবস্থা বেশ খারাপ। যাত্রীবাহী ও মালবোঝাই পরিবহন চলতে কষ্ট হচ্ছে। এখানে বিভিন্ন সময় কয়েকটি দুর্ঘটনাও ঘটেছে। যারা এ ব্রিজটি অপরিকল্পিতভাবে নিচু করে তৈরি করেছে তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা দরকার।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. আফজালুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রেল চলাচলের উপযোগী করে এবং উচ্চতা ঠিক রেখে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ ব্রিজের নিচ দিয়ে চলাচলকারী পরিবহনের উচ্চতা বেঁধে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে সড়কটি আরও একটু নিচু করে ঢালাই দিয়ে সংস্কার করা হবে। ব্রিজ নিচু হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, রেললাইন সমান্তরাল হয়। কোথাও উঁচু নিচু হয় না। এ রকম সমস্যা থাকলে রেল যাতায়াতে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। তাই রেললাইন ঠিক রেখে নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ব্রিজের নিচের সড়ক দিয়ে যানবাহন সুন্দরভাবে চলাচলে সব ধরনের ব্যবস্থা করা হবে।

সর্বশেষ খবর