সরকারের ধারাবাহিকতা না থাকলে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকে না বলে মন্তব্য করেছেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা বাস্তবায়ন করা আমার জন্য ফরজ। আমার জন্য দায়িত্ব। উন্নয়ন মেলার উদ্ধোধন করতে এসে বুধবার রাতে লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের এক মত-বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কঠোর সমালোচনা করে রেলপথমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি আমলে রেলপথ ধ্বংস করতে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের নামে কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। সেই বেহাল দশা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ও পরামর্শে রেলপথকে অনেক দূর এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু জামায়াত-বিএনপির লোক আছেন, তারা মামলা করে লোক নিয়োগে বাধা দিচ্ছেন। যেন আওয়ামী লীগের আমলে কোন উন্নয়ন না হয়, তারা সেজন্য ষড়যন্ত্র করছেন। আমরা সেই অবস্থা থেকেও উত্তরণের চেষ্টা করছি।’
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘২৭০টি নতুন কোচ ও ৪৬টি নতুন লোকোমোটিভ কেনা হয়েছে। আরও কিছু কোচ ও লোকোমোটিভ আনার কাজ চলছে। আওয়ামী লীগের আমলে যত উন্নয়ন হয়েছে, আর কোনও সরকারের আমলে এত উন্নয়ন হয়নি। এসবের একমাত্র অবদান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মত-বিনিময় সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে রেলওয়ে শ্রমিক কল্যাণ ট্রাস্ট ও এলসিসিআই মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপনের জন্য প্রস্তাবিত রেলওয়ের পরিত্যক্ত জায়গা বরাদ্দ দিতে রেলমন্ত্রীর পদক্ষেপ। এছাড়া অন্য দাবিগুলো হলো ৫৪০জন ব্যবসায়ীর লিজকৃত জমির ৮ টাকা হারে খাজনা আদায়ে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়ন, লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগে অচল বগিগুলো প্রত্যাহার করে নতুন বগি সংযুক্ত করা, প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ‘তিনবিঘা একপ্রেস’ বুড়িমারী স্থলবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত চলাচলের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া ও বুড়িমারী-লালমনিরহাট-পার্বতীপুর রুটে বন্ধ থাকা ট্রেন পুনরায় চালু করা।’
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়নের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করাবেন। আপনারা যে দাবিগুলো তুলেছেন, তা ন্যায্য। আপনাদের দাবিগুলো লিখিত আকারে ঢাকায় রেলভবনে নিয়ে আসবেন। যেসব দাবি পূরণ করা সম্ভব, সেগুলো পূরণ করে দেব। রেলের দায়িত্বে থেকে আপনাদের সেবাই যদি করতে না পারি, তাহলে দায়িত্বে থেকে লাভ কী?’
এদিকে আজ সকালে ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বিশ্বের সমকক্ষ দেশ গড়তে প্রধান মন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লালমনিরহাটে শুরু হয়েছে উন্নয়ন মেলা।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্থানীয় মুুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ চত্বরে ৩দিনব্যপী এ মেলা শুরু হওয়ার আগে লালমনিরহাটের সোহরওয়ার্দী মাঠ থেকে একটি বর্ণ্যাঢ্য র্যলী বের হয়। রেলমন্ত্রী মজিবুল হক এমপির নেতৃত্বে র্যালীটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মেলা প্রাঙ্গনে এসে শেষ হয়।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোফাজ্জেল হোসেন, রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন, লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার নাজমুল ইসলাম, লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনএম নাসির উদ্দিন প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার