পাবনার ভাড়ারায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে নিহত দু'জনের মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। এসময় তারা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
মঙ্গলবার দুপরে কড়া নিরপত্তার মধ্য দিয়ে নিহত লস্কর খান ও আব্দুল মালেকের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেছে পুলিশ। মরদেহ দাফন শেষে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন নিহতের স্বজনরা।
এর আগে নিহত দুইজনের মরদেহ নিতে ভাড়ারা এলাকা থেকে কয়েক হাজার নারী-পুরুষ পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভীড় করে। এসময় অপ্রিতিকর ঘটনা এড়াতে হাসপাতাল চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে নিহত লস্কর খানের ছেলে সুলতান আহমেদের নিকট মরদেহ দুটি হস্তান্তর করে। মরদেহ নিয়ে গ্রামে ফেরার পথে তারা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
এসময় এলাকাবাসী হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভাড়ারা ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাইদ খানকে গ্রেফতার ও ফাঁসি দাবি করেন। আগামী তিন দিনের মধ্যে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনা না হলে পুরো পাবনা শহর অবরোধ করে অচল করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন বিক্ষোভকারীরা।
নিহত লস্কর খানের ছেলে সুলতান খান বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আবু সাইদ খানের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করায় আমার ওপর ক্ষীপ্ত হয় সে। এরই জেরে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সোমবার আবু সাইদ খান সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে আমার বাবাকে হত্যা করেছে। আমি আবু সাইদ খানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে ভাড়ারা ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান বলেন, সোমবারে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সুলতানের সাথে আমার কোনো পূর্ব বিরোধ নেই। শত্রুতাবশত সুলতান এই ঘটনার সাথে আমাকে জড়িয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। ইউপি নির্বাচনে হেরে আমর ক্ষতি করা চেষ্টা করছে।
পাবনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হাসান শাহীন বলেন, সুলতান আহমেদ গত দুই বছর পূর্বে আওয়ামী লীগের যোগ দিয়েছেন। তবে এই ঘটনা রাজনৈতিক নয়। ব্যক্তিগত বিরোধের কারণে হয়েছে। আমরাও এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করি।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অপারেশন) জালাল উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ওই এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যায় পাবনা সদরের ভাড়ারা ইউনিয়নের আওরঙ্গবাদ খয়ের বাগান এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের গুলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে আরঙ্গবাদ খয়েরবাগান গ্রামের মৃত জাহেদ আলী শেখের ছেলে আব্দুল মালেক ও মৃত গহের আলী খানের ছেলে লস্কর আলী খান গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। নিহত লস্কর আলী খান এক পক্ষে নেতৃত্বদানকারী সুলতানের বাবা ও অপরজন চাচা।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন