মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর ব্যাপক দমন-পীড়ন চালানো নিয়ে নোবেল বিজয়ী ও দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি’র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিশ্বব্যাপী। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন, মিয়ানমারের বেসামরিক সরকারের উপদেষ্টা তথা শীর্ষনেত্রী হলেও দেশের ক্ষমতাবান সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে যাওয়ার মতো অবস্থানে নেই সু চি।
পাঁচ দশকের সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে মিয়ানমারে সবে ২০১৫ সালে একটি বেসামরিক সরকার হয়তো গড়া গিয়েছে। কিন্তু এখনও সেনার সঙ্গে ক্ষমতা ভাগ করেই চলতে হয় সেই সরকারকে। দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে বেশি কিছু বলার সুযোগ নেই বেসামরিক সরকারের। ফলে সেনার বিরুদ্ধে কঠোর কোন অবস্থান নিতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। ফের সামরিক শাসনের গর্ভে চলে যেতে পারে মিয়ানমার। সম্ভবত সে কারণেই সতর্ক সু চি রোহিঙ্গা প্রশ্নে নীরব।
এই জল্পনায় ইন্ধন জুগিয়েছে টিলারসনের সফর। সু চি শুধু নয়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনও বৈঠক করেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের সঙ্গেও। বৈঠকের পরে টিলারসন জানিয়ে দিয়েছেন, প্রায় ৬ লক্ষ রোহিঙ্গাকে দেশ ছাড়া করার জন্য এখনই মিয়ানমারের উপরে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সুপারিশ করতে চান না। তিনি বরং রোহিঙ্গা-নির্যাতন নিয়ে নির্ভরযোগ্য তদন্তের পক্ষপাতী। টিলারসনের কথায়, আমরা চাই মিয়ানমার সফল হোক। আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপালেই সমস্যা মিটে যাবে, এমনটা ভাবার কারণ নেই।
মিয়ানমার সেনা এবং সু চি-র সরকার উভয়েরই দাবি, শুধু বিদ্রোহী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। যদিও পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মুখে খুন-ধর্ষণ-নির্যাতনের ভয়াবহ ছবি উঠে আসছে। টিলারসন এই প্রসঙ্গে বলেছেন, যে সব ছবি ওখান থেকে উঠে আসছে তা ভয়াবহ। তাই স্বাধীন তদন্তের প্রস্তাব মেনে নেওয়া উচিত মিয়ানমারের। খবর আনন্দবাজার।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার