বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের বাইশেরছিলা এলাকায় আজও থেমে থেমে জ্বলছে আগুন। গত তিন দিন ধরে জ্বলা এআগুন এখনও সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রনে আসেনি।
তবে ফায়ার ব্রিগেডকর্মীরা বলছে আগুন এখন তাদের নিয়ন্ত্রনের মধ্যে রয়েছে। ইতিমধ্যে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে প্রায় ১০ একর বন। এঅগ্নিকান্ডের ঘটনায় সুন্দরবন বিভাগের গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি আজ সকাল থেকেই তাদের তদন্ত কাজ শুরু করেছে।
এখবর নিশ্চিত করেছেন তদন্ত দলের আহবায়ক চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ।
গত বুধবার বিকলে বনজীবীরা দাউ দাউ করে আগুন দেখতে পেয়ে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের খবর দেয়। এরপর ওইদিন সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় আগুন নিভানোর কাজ। মোড়েলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ১২ সদস্যের ও সুন্দরবর বিভাগের ৬০ জন কর্মকর্তা কর্মচারীসহ বনসংলগ্ন গ্রামবাসীও আগুন নিভানোর কাজ শুরু করে। আজ বিকেলেও ওই এলাকায় গাছের নিচের অংশে আগুনের সন্ধান পেয়েছে ফায়ার ব্রিগেডকর্মীরা।
আগুনে ইতিমধ্যে প্রায় ১০ একর বনভূমির সুন্দরীসহ বিভিন্ন প্রজাতীর গাছ পুড়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন ঘটনাস্থলে থাকা ফায়ার সাভিসের স্টেশন কর্মকর্তা আরিফুল হক। বনের ওই অংশে বণ্যপ্রাণীর চলাচল খুব একটা না থাকায় বণ্যপ্রাণীর কোন প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। আগুন যাতে বনের চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে জন্য লাইন অব ফায়ার লেন কেটে দেওয়া হয়েছে। আগুন লাগার কারন এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ ।
ঘটনাস্থল থেকে ফিরে এসে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের ডিএফও মো: আমির হোসাইন চৌধুরী দুপুরে সাংবাদিকদের জানান সুন্দরবনের আগুন সম্পুর্ন নিয়ন্ত্রনে রয়েছে ।
গত এক যুগে বাগেরহাট জেলাধীন সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগে ১৭টি আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি কোন কোন বছর এইবনে এক থেকে তিন বার পর্যন্ত বনে আগুন লেগেছে। সুন্দরবন বিভাগের হিসাবে ওই সব আগুনের ঘটনায় প্রায় ৬০ একর বনভূমি পুড়ে গেছে। তবে ফায়ার সার্ভিসের ও বনসংলগ্ন স্থানীয়দের হিসাব মতে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বনের পরিমান কয়েকশ একর। সুন্দরবনে অগ্নিকান্ড প্রবল এই এলাকায় বর্ষা মৌসুমে প্রচুর পরিমান শিং, মাগুরসহ বিভিন্ন মাছ পাওয়া যায়। এজন্য জাল পাতার সুবিধার্থে বর্ষা মৌসুমে সুন্দরবনের মধ্যে মাছ শিকারের জন্য জেলেরা ইচ্চাকৃত ভাবে আগুন লাগায় বলে বনসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের রয়েছে অভিযোগ।
তাদের অভিযোগ প্রায় প্রতিবছর বনের বিভিন্ন এলাকায় এভাবে আগুন দেওয়া হয়। গাছপালা পুড়ে ফাঁকা হওয়ার পর বর্ষা মৌসুমে কিছু মানুষ জাল পেতে ওই এলাকায় মাছ ধরে থাকে। এঅবস্থায় চাদপাই রেঞ্জের অগ্নিকান্ড প্রবল এ বন এলাকাকে কয়েক বছর আগে থেকেই নো ফিশিং জোন ঘোষনা করেছে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ ।