অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, বিশ্ব সভ্যতার টার্গেট অনুযায়ী বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশ তার আগেই দারিদ্র্যমুক্ত হবে। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৬০ শতাংশ। বর্তমানে এই হার ২২ শতাংশ। ২০২৪-২৫ সালে এই হার আরো কমে আসবে। রবিবার লন্ডনে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এক সময় গ্রামে আঙ্গুর, আপেল সমাদর করে বিক্রি করা হতো। আঙ্গুরের একটা সুন্দর ফ্রেম থাকতো। কেউ আঙ্গুর কিনতে গেলে সেই ফ্রেম থেকে আঙ্গুর নামিয়ে দেওয়া হতো। আঙ্গুর, নাশপাতি, আপেল ছিল অমূল্য সম্পদ। কিন্তু এখন যে কোনও গ্রামে গেলে আপেল-আঙ্গুর সহজেই পাওয়া যায়। এটি অর্থনৈতিক উন্নয়নের আরেকটি দিক। সকলকে মিলে উঠতে হবে, কেউ পেছনে পড়ে থাকবে না। আমরা চাইনা কেউ গরিব থাকবে। সকলের চাহিদা বাড়াতে হবে, সকলকে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগাতে হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, সব দেশেই বয়স্ক, বিধবা, যাদের সহায়সম্বল নেই বা একা, প্রতিবন্ধীরা সরকারের ওপর নির্ভরশীল থাকবে। বর্তমানে মালয়েশিয়াতে এ হার ৭ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ শতাংশ। উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও ৭ থেকে ১৪ শতাংশ জনগোষ্ঠী গরিব বা সরকারের ওপর নির্ভরশীল।
অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে প্রবাসী বিনিয়োগের ওপর গুরুত্ব দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য সরকার সব সুবিধা দিয়েছে। বিনিয়োগকারীরা তার লভ্যাংশ ও মূলধন চাইলে ফেরত নিয়ে যেতে পারবেন। দীর্ঘদিন প্রবাসীরা ওয়ান স্টপ সার্ভিসের কথা বলেছেন, সেই সুবিধাও চালু করা হয়েছে। এখন যে কোনও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৯ মাসের মধ্যেই বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সংযোগ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। আগামী ২০ বছর পর্যন্ত বাংলাদেশে গ্যাস সরবরাহ নিয়ে কোনও দুঃশ্চিন্তা নেই।
প্রবাসীদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা মিলে বাংলাদেশে ৭০ একর জমিতে ব্যক্তিমালিকানায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে। যুক্তরাজ্য প্রবাসীরাও উদ্যোগ নিলে সরকার সহযোগিতা করবে। সিলেট এয়ারপোর্ট থেকে কবে নাগাদ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হবে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, সিলেট বিমানবন্দরের রানওয়ে এখনেও বোয়িং ৭৭৭ চলার উপযুক্ত নয়। নতুন রানওয়ে নির্মাণ ও লাউঞ্জের উন্নয়ন হলেই সিলেট থেকে আন্তর্জাতিক রুটে বিমান চলাচল সম্ভব হবে। তবে এই সময়সীমা এক বছরের বেশি হবে না। আর দ্বৈত নাগরিকতার বিষয়টি আইনমন্ত্রী বিশেষভাবে দেখছেন। ভবিষ্যত প্রজন্ম যেন তাদের সিটিজেনশিপ রাখতে পারে সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই সরকার আইনটির সংস্কার করবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার