রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে একটি এম.ফিল গবেষণার শিরোনামে বঙ্গবন্ধুর নাম থাকায় তা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন একাডেমিক কমিটির বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে তারা গবেষণাটির শিরোনাম থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম বাদ দিয়ে গবেষণা পেপার জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের খাদিজা আক্তার নামে এক গবেষকের গবেষণা নিয়ে এই আপত্তি তোলা হয়।
বিভাগ সূত্র বলছে, বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের কর্মরত ২১ জন শিক্ষকের মধ্যে ১৪ জন শিক্ষকই বিএনপিপন্থী। আর মাত্র ৭ জন শিক্ষক আওয়ামী লীগপন্থী। যেহেতু বিএনপিপন্থী শিক্ষক বেশি এবং তাদের আপত্তির জন্যই গবেষণা পেপারটির শিরোনাম থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম বাদ দিতে বলা হচ্ছে।
গবেষণা পেপার থেকে জানা যায়, খাদিজা আক্তার ‘বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি: প্রেক্ষিত মধ্যপ্রাচ্য‘ শিরোনামে একটি এম.ফিল গবেষণা করেন। সেই গবেষণায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামল ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্য কেন্দ্রীক যেসব পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল, সেসব বিষয় নিয়ে তথ্য সন্নিবেশ করা হয়েছে। এই গবেষণাটির সুপারভাইজার হিসেবে ছিলেন বিভাগের অধ্যাপক আরিফুৃর রহমান এবং কো-সুপারভাইজার ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. ফায়েকুজ্জামান।
জানা গেছে, গবেষণা পেপারটির শিরোনাম নিয়ে আপত্তি তোলে একাডেমিক কমিটি। কমিটির বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা চান না গবেষণা পেপারটির শিরোনামে বঙ্গবন্ধুর নাম উল্লেখ থাকুক। সে কারণে গত ৪ জুলাই অনুষ্ঠিত বিভাগের একাডেমিক কমিটির সাধারণ সভায় গবেষণা পেপারটির শিরোনাম পরিবর্তন করতে প্রস্তাব দেন বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা। তারা গবেষেণার শিরোনাম 'বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি (১৯৭২-৭৫); প্রেক্ষিত মধ্যপ্রাচ্য' করার প্রস্তাব রাখেন। বিভাগে বিএনপিপন্থী শিক্ষকের সংখ্যা বেশি হওয়ার তাদের এই প্রস্তাবই গৃহীত হয়।
এই বিষয়ে গবেষণাটির সুপারভাইজার অধ্যাপক আরিফুজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে বাংলাদেশে এর আগে অনেক গবেষণা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেহেতু প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং জাতির পিতা, তাই বঙ্গবন্ধুর শামনামলে মধ্যপ্রাচ্যকে ঘিরে যে পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছিলেন সেই বিষয়টি নিয়ে আমরা গবেষণাটি করছি। সেই অনুযায়ী আমরা গবেষণার শিরোনামও দিয়েছি। কিন্তু একাডেমিক কমিটি থেকে গবেষণার শিরোনামে বঙ্গবন্ধুর নাম বাদ দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. ফজলুল হক বলেন, একাডেমিক কমিটিতে উপস্থিত শিক্ষকদের অধিকাংশের মতামতের ভিত্তিতে গবেষণার শিরোনাম পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে। এখানে কেউ এককভাবে কিছু করেনি।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব