দুই যুদ্ধাপরাধী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদের ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় সংসদে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন সংসদ সদস্যরা। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংসদে প্রস্তাব আনা হয়। জাতীয় সংসদের সদস্যরা দুই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায় কার্যকরে সন্তোষ প্রকাশ করেন। জাতীয় সংসদে আনন্দের জোয়ার দেখা গেছে। সংসদ অধিবেশনে এমপিরা এই ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় নিজেদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেছেন, এই ফাঁসির রায় কার্যকরে গোটা জাতির সঙ্গে তারাও আনন্দে আত্মহারা হয়েছেন। এই রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে জাতির ৪৪ বছরের কলংক মুক্তি আরেক ধাপ এগিয়ে গেল।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হলে প্রশ্নোত্তর পর্বে নির্ধারিত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীরবিক্রম) বিষয়টির অবতারণা করে বলেন, আমি আজ আনন্দে আত্মহারা। সারাদেশের মানুষও কেউ শনিবার রাতে ঘুমায়নি। ফাঁসি কার্যকর প্রক্রিয়ার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তারা টেলিভিশনের সামনে বসেছিলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী বলেন, এটি একমাত্র সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জন্য। আজ সকল মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে শ্রদ্ধা জানাই। আল্লাহর কাছে তার শত বছরের দীর্ঘায়ুও কামনা করি। তিনি বলেন, আমি প্রায়ই বলি, শেখ হাসিনা থাকলে দেশ বাঁচবে, গণতন্ত্র থাকবে, এদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা চিরকাল থাকবে। এই মুজাহিদ, আমার সহযোদ্ধা জুয়েল, বদি, রুমিকে হত্যা করেছে। আমি যখন আজাদসহ তাদের বাড়িতে যেতাম, তখন রুমির মা জাহানারা ইমাম আমার শার্টের কলার ধরে বলেছিলেন, আমার রুমি হত্যার কী বিচার হবে না! সেদিন আমি তার কথার কোন উত্তর দিতে পারিনি। আজ মহান সংসদে দাঁড়িয়ে সারাদেশের মানুষকে চিৎকার করে বলতে চাই, শেখ হাসিনা থাকলে বাংলাদেশে কোন রাজাকার, আলবদর, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি কখনও এই দেশে মাথাচাড়া দিতে পারবে না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে, শেষও হবে। আজ প্রমাণ হয়েছে, বাংলাদেশে কেবল স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি।
চট্টগ্রামের এমপি নজরুল ইসলাম চৌধুরী সম্পূরক প্রশ্ন করতে গিয়ে বলেন, আজ চট্টগ্রামবাসীসহ সারাদেশের মানুষ খুশিতে আত্মহারা। আমরা খুশি। সরকার দলীয় সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু তারকাচিহ্নিত প্রশ্ন উত্থাপনকালে দুই যুদ্ধাপরাধীর রায় কার্যকরের বিষয়টি সামনে এনে বলেন, আজ সারাদেশে ‘সাবাস, সাবাস’ বলে স্লোগান দেয়া হচ্ছে। দুই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি হয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
সরকারি দলের একেএম শাহাজাহান কামাল আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করে বলেন, কেবল বাংলাদেশের মানুষ নয়, দুই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় সারাবিশ্বের বাঙালিরা আনন্দিত, উচ্ছ্বসিত। একমাত্র শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ২২ নভেম্বর, ২০১৫/ রশিদা