মঙ্গলবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মরণঘাতী বায়ুদূষণ

জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিন

বায়ুদূষণে মানুষ শুধু নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে না, অকাতরে জীবনও হারাচ্ছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে বায়ুদূষণের কারণে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকাতেই মারা গেছে ১৮ হাজার মানুষ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু পরিবেশ দূষণের ফলে বাংলাদেশের শহরাঞ্চলের ২৭ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। পরিবেশ দূষণজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষের মৃত্যুর দিক দিয়ে বাংলাদেশের পরই আছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। ২০১৫ সালের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রণীত প্রতিবেদনে ভারতে এ হার ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ। নেপালে মারা যায় ২৫ দশমিক ৮ শতাংশ, পাকিস্তানে ২২ দশমিক ২ শতাংশ, আফগানিস্তানে ২০ দশমিক ৬ শতাংশ, ভুটানে ১৩ শতাংশ। এদিক থেকে সবচেয়ে কম মানুষ মারা যায় মালদ্বীপে। এ দেশটিতে বায়ুদূষণসংক্রান্ত কারণে রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ১১ দশমিক ৫ শতাংশ। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে বাংলাদেশে বায়ুদূষণজনিত কারণে মৃত্যুর যে সংখ্যা তুলে ধরা হয়েছে, তা আঁতকে ওঠার মতো। বায়ুদূষণ যে দীর্ঘস্থায়ী নানা রোগ ও অসুস্থতার কারণ- তা জানা থাকলেও এটি মানুষের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দেওয়ার বিষয়টি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে স্পষ্ট করা হয়েছে। সন্দেহ নেই, বায়ুদূষণ এক বিশ্বজনীন সমস্যা। আমাদের গ্রহের অধিবাসীদের স্বাস্থ্যের জন্য তা হুমকি হয়েও দাঁড়িয়েছে। বায়ুদূষণের ফলে যেসব রোগে মানুষের অকালমৃত্যু ঘটছে তার মধ্যে রয়েছে তীব্র শাসকষ্টজনিত রোগ, ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী রোগ, ফুসফুস ক্যান্সার, হৃদরোগ ও স্ট্রোক। বায়ুদূষণ ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে আমাদেরই ভুলে। বিশেষত দেশের নগর এলাকাগুলো মৃত্যুকূপে পরিণত হচ্ছে বায়ুদূষণের কারণে। অথচ একটু সতর্ক হলেই বায়ুদূষণ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। এজন্য জনসচেতনতা সৃষ্টিতে যেমন উদ্যোগ নিতে হবে, তেমনি যেসব কারণে বায়ুদূষণ ঘটছে তা রোধে প্রশাসনকে কঠোর মনোভাব দেখাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর