শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স

টালবাহানার অবসান হোক

সড়ক নৈরাজ্যের জন্য বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) দায় সবচেয়ে বেশি- এমন অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। বলা হয়, পকেট ভরা ছাড়া এ প্রতিষ্ঠানের পিয়ন থেকে কর্মকর্তাদের আর কোনো কাজ নেই। ড্রাইভিং লাইসেন্সপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে যে বিষয়টি ওপেন সিক্রেট তা হলো টাকা না দিলে লাইসেন্স পাওয়া ব্যাঙের সর্দিজ্বর হওয়ার মতোই অসম্ভব। শত যোগ্যতার অধিকারী হলেও আটকে দেওয়া হয় অজুহাত তুলে। আর টাকা দিলে গাড়ি স্টার্ট কীভাবে দিতে হয় তা জানা না থাকলেও লাইসেন্স পেতে কষ্ট হয় না। লাইসেন্সপ্রত্যাশীদের দিনের পর দিন ঘোরানো আর হয়রানি বিআরটিএ নামের প্রতিষ্ঠানের মজ্জাগত ব্যাপার। ফলে অনেক দক্ষ চালকও হয়রানির ভয়ে কিংবা উৎকোচের টাকা জোগাড় করতে না পেরে সময়মতো লাইসেন্স করেননি। আর সিদ্ধান্তের অভাবে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে লাইসেন্স প্রিন্টের কাজ। এতে আটকে রয়েছে লক্ষাধিক গ্রাহকের ড্রাইভিং লাইসেন্স। সড়ক আইন কঠোর হওয়ায় লাইসেন্স-গ্রহীতাদের আবেদনের সংখ্যা বাড়ছে স্পুটনিক গতিতে। নিয়ম অনুযায়ী লাইসেন্স পাওয়ার জন্য বিআরটিএতে পরীক্ষা দিতে হয়। এরপর ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে অস্থায়ী রোড পারমিট দেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর বিআরটিএর দেওয়া নির্দিষ্ট তারিখে গেলে স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায়। কিন্তু স্মার্টকার্ড না দিয়ে দফায় দফায় শুধু বাড়ানো হচ্ছে অস্থায়ী রোড পারমিটের মেয়াদ। রাজধানীর মিরপুরে বিআরটিএ কার্যালয়ের লাইসেন্স শাখায় প্রতিদিনই অসংখ্য আবেদনকারীর ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ২০১১ সালের ১৭ অক্টোবর থেকে ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহারের প্রবণতা রোধে ইলেকট্রনিক চিপযুক্ত ডিজিটাল স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স চালু করা হয়। চালুর পর থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত মোট ৩৪ লাখ ১২ হাজার ৫৩৮টি স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স বিতরণ করা হয়েছে। এই অর্থবছরে আর কোনো স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স বিতরণ করা হয়নি। প্রিন্টিং প্রক্রিয়ার অনুমোদন ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হয়ে আসায় এ জটিলতা তৈরি হয়েছে। স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে যে সময় ক্ষেপণ শুরু হয়েছে তা অমার্জনীয় বললে কম বলা হবে। দ্রুতই এ হয়রানির ইতি ঘটবে- আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

সর্বশেষ খবর