সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

উগ্রবাদের ঝুঁকি সূচক

বাংলাদেশের অগ্রগতি স্বস্তিদায়ক

উগ্রবাদ এ মুহূর্তে একটি বিশ্বজনীন সমস্যা এবং কোনো দেশই এ নোংরা দৈত্যের হুমকি থেকে মুক্ত নয়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানির মতো শক্তিশালী দেশ ও উগ্রবাদের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। বাংলাদেশে গত শতাব্দীর শেষভাগে উগ্রবাদের থাবা বিস্তৃত হয়। এ শতাব্দীর শুরুতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় উগ্রবাদকে মদদ দেওয়ার বিষয়টিও ছিল ওপেন সিক্রেট। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর উগ্রবাদ প্রতিরোধকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া হয়। গত ১১ বছরে গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিসহ বেশ কয়েকটি বড় বিপর্যয় ঘটলেও জঙ্গিবাদের অপতৎপরতা রোধে বাংলাদেশের সাফল্যও বেশ ঈর্ষণীয়। গত বছর উগ্রবাদের ঝুঁঁকি সূচকে বাংলাদেশের ছয় ধাপ অগ্রগতি হয়েছে। ২০১৮ সালের অবস্থান থেকে ছয় ধাপ এগিয়ে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৩১তম। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের অনেক দেশই বাংলাদেশের পেছনে। সর্বস্তরের জনগণের সহায়তা, গণমাধ্যমের ভূমিকা, প্রশাসনের দক্ষতাসহ সবকিছু মিলিয়ে দেশে উগ্রবাদের ঝুঁঁকি ধীরে ধীরে কমে আসছে। রাজধানীতে আয়োজিত ‘উগ্রবাদ রোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। বলেছেন, গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্সে ঝুঁঁকির দিক থেকে বিশ্বের অন্য অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে। সূচকে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ২১তম। ওই সময় পাকিস্তান ও ভারত ছিল তালিকার ১০ নম্বরের মধ্যে। ২০১৮ সালে চার ধাপ অগ্রগতি হয়ে বাংলাদেশ ২৫তম স্থানে অবস্থান করে। আর ২০১৯ সালের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ আরও ছয় ধাপ এগিয়ে ৩১তম হয়। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিস বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচক নিয়ে প্রতি বছর প্রতিবেদন প্রকাশ করে। উগ্রবাদের ঝুঁকি সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি সত্ত্বেও আত্মপ্রসাদের কোনো সুযোগ থাকা উচিত নয়। বরং এই অগ্রগতিতে নিজেদের দায়িত্বশীলতা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশকে দুনিয়ার অন্যতম নিরাপদ দেশে পরিণত করার বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। গড়ে তুলতে হবে সমাজজুড়ে সহনশীল পরিবেশ। বিশেষ করে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও উগ্রবাদ উসকে দেয় এমন সব কর্মকান্ডে  লাগাম পরাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর