শনিবার, ২৮ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

অঘোষিত লকডাউন

স্বাস্থ্য নির্দেশনা পালনে হেলাফেলা নয়

করোনাভাইরাসের কারণে সারা দেশে কার্যত অঘোষিত লকডাউন চলছে। খোদ রাজধানীতে রাজপথে জরুরি সেবা খাত ছাড়া কোনো যানবাহন চলছে না। সামাজিক সংস্পর্শে করোনাভাইরাস যাতে না ছড়ায় তা নিশ্চিত করতে সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সরকারপ্রধানের পক্ষ থেকে। সবাই যাতে নিরাপদে থাকার নির্দেশনা মেনে চলেন তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন দেশজুড়ে। ফলে রাজধানী শুধু নয়, দেশের সব মহানগর ও জেলা শহরের সড়ক এখন যানবাহনশূন্য। খাদ্য ও ওষুধের দোকান খোলা থাকলেও ক্রেতাশূন্য। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা অকারণ ঘোরাঘুরি এবং আড্ডার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিচ্ছেন। স্বাধীনতা দিবস থেকে ১০ দিনের সাধারণ ছুটিতে রাজধানী এখন নীরব, নিস্তব্ধ। বাস, ট্রেন, লঞ্চ ও আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার আগে অনেকে ঢাকা ছাড়তে পারলেও যারা রাজধানীতে রয়ে গেছেন তারা এখন ‘ঘরবন্দী’। স্বাধীনতা দিবসের আগে বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বর্তমান পরিস্থিতিকে যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করে সবাইকে ঘরে থেকে এ যুদ্ধ জয়ের আহ্বান জানিয়েছিলেন। রাস্তায় মানুষের ‘অহেতুক’ ঘোরাঘুরি বন্ধে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অপ্রয়োজনে রাস্তায় বের হলেই পড়তে হচ্ছে পুলিশের সামনে। কান ধরে উঠবোসও করতে হয়েছে বিনা কারণে রাস্তায় বের হওয়ার অপরাধে। রাজধানীর রাজপথ-অলিগলি হয়ে পড়েছে প্রায় জনশূন্য। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনাকাটা ছাড়া পারতপক্ষে মানুষ রাস্তায় বের হচ্ছে না। বৈশ্বিক মহামারী রূপ পাওয়া কভিড-১৯ প্রতিরোধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ লকডাউন ঘোষণার পর বাংলাদেশে এর সংক্রমণ এড়াতে আগেই বন্ধ করা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর পরও আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় মানুষ যাতে ঘরে অবস্থানের সুযোগ পায় তা নিশ্চিত করতে টানা ১০ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিদিন কয়েক হাজার কোটি টাকার উৎপাদন ক্ষতি মেনে নেওয়া হচ্ছে মানুষের জীবন সুরক্ষার জন্য। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দেশবাসীর এ যুদ্ধে জয়ী হওয়ার ওপর নিজেদের অস্তিত্ব যেহেতু নির্ভরশীল, সেহেতু সামাজিক সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকার নির্দেশনা পালনে কারোরই হেলাফেলা থাকা উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর