শিরোনাম
রবিবার, ৫ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

জমায়েত করে ত্রাণ বিতরণ নয়

ঘরে ঘরে খাদ্য পৌঁছানোর উদ্যোগ নিন

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে দুনিয়ার অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও অঘোষিত লকডাউন পালিত হচ্ছে। ঘোষণা করা হয়েছে ১৭ দিনের সাধারণ ছুটি। এ সময়ে অতি জরুরি ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘরে-বাইরে সামাজিক দূরত্ব অর্থাৎ একজনের সঙ্গে আরেকজনের দূরত্ব রাখার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ও সামাজিক দূরত্ব নজরদারিতে রাখার জন্য সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার পরও ঝুঁকি কমছে না। বিশেষত ত্রাণসামগ্রী নেওয়ার সময় গরিব-দুঃখী মানুষের অসতর্ক ভিড় সামাজিক দূরত্ব রক্ষার নির্দেশনায় বাদ সাধছে। দিনে আনে দিনে খায় এমন জনগোষ্ঠী কর্মহীন হয়ে পড়ায় মহাসংকটে পড়েছে। ফাঁকা রাস্তায় কোনো ব্যক্তিগত গাড়ি থামলেই ঘিরে ধরছে অভাবী মানুষ। কেউ গাড়িতে এসে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু পণ্যসামগ্রী বিতরণ করলে হুড়োহুড়ি করে শক্তিমানেরা কেড়ে নিচ্ছে। ভিড়ের মধ্যে থাকা অধিকাংশ মানুষ কিছুই পাচ্ছে না। অনেকে নিজের বাড়িতে ব্যক্তিগতভাবে ত্রাণ দেওয়ার সময় মানুষের জটলার সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে ত্রাণ না দিয়ে জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের সরকারি নির্দেশনা থাকলেও অনেকেই তা মানছে না। জমায়েত করে ত্রাণ বিতরণের বিষয়টি সরকার নিরুৎসাহিত করলেও অতি উৎসাহীরা তা উপেক্ষা করছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত বন্ধের কারণে কর্মহীন মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ নিয়ে কার্যত বিশৃঙ্খল অবস্থা চলছে। ত্রাণের লাইনে হুড়োহুড়ি করে লঙ্ঘন করা হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব। দীর্ঘ ত্রাণের লাইন কিংবা হুড়োহুড়ি করে ত্রাণ নেওয়ার মাধ্যমে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁঁকি বেড়ে যাচ্ছে। এ অব্যবস্থাপনা রোধে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, র‌্যাবের মাধ্যমে তালিকা করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রকৃত অভাবীদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কথা ভাবতে হবে। এর মাধ্যমে সামাজিক বিচ্ছিন্নতার মূল উদ্দেশ্য সফল হবে এবং যত্রতত্র ভিড় করে ত্রাণ নেওয়ার বিশৃঙ্খলা বন্ধ হবে। শুধু রাজধানী নয়, দেশের সর্বত্র কর্মহীন অবস্থা গরিব ও নিম্নবিত্তদের জীবনে সংকট সৃষ্টি করেছে। এ প্রেক্ষাপটে ত্রাণ বিতরণে সরকারকে আরও যত্নবান হতে হবে। লোক জমায়েত করে ত্রাণ বিতরণ না করে সঠিক তালিকা করে তাদের ঘরে ঘরে খাদ্য পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

সর্বশেষ খবর