শনিবার, ২৭ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

ভোট ছাড়াই নির্বাচন

এ যথেচ্ছতার অবসান হোক

স্থানীয় সরকারকে বলা হয় জনগণের সরকার। তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে স্থানীয় সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকে। তাদের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীক বলে বিবেচিত হন এ সরকারের সদস্যরা। যে কারণে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে গ্রামগঞ্জ-মহল্লায় সাড়া পড়ে যায়। চায়ের পেয়ালায় ওঠে ঝড়। নিজেদের লোকেরা যাতে নির্বাচিত হয় ভোটারদের মধ্যে এমন আকুতিরও প্রকাশ ঘটে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এবার সে চিত্রের প্রতিফলন ঘটছে না। এ নির্বাচনের প্রথম ধাপেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ের হিড়িক লেগেছে। প্রথম ধাপে ৩৭১টির মধ্যে ৭৩টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা। এ ছাড়া ৬৮ জন সাধারণ ও আটজন সংরক্ষিত সদস্য বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। সব মিলে এবারের প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিন পদে ১৪৯ জন জনপ্রতিনিধি বিনা ভোটে নির্বাচিত হলেন। তবে অনেক এলাকায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এবং অন্যান্য দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৩৭১ ইউনিয়নের মধ্যে যে ৭৩টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে তার ৪০টিই বাগেরহাটে। বাগেরহাটে মধ্যযুগের মতো মাৎস্যন্যায়ের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে কিনা এবং তার প্রতিক্রিয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বিশেষ দল ছাড়া অন্যদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে কিনা তা নির্বাচন কমিশন তদন্ত করে দেখবে এমনটিই প্রত্যাশিত। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের আমলে জাতীয় নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি উদ্বেগজনক হারে হ্রাস পেয়েছে। স্থানীয় নির্বাচনেও যদি মানুষ প্রার্থী হওয়া এবং ভোট দেওয়ার গরজ হারায় তবে গণতন্ত্রের জন্য তা বিসংবাদ ডেকে আনবে; যা ঠেকাতে নির্বাচন ছাড়া নির্বাচিত হওয়ার কুশীলবদের নিষ্ক্রিয় করতে সরকার সক্রিয় হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর