রবিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

মিয়ানমারের মানুষ কি গণতন্ত্র চায়?

তুষার কণা খোন্দকার

মিয়ানমারের মানুষ কি গণতন্ত্র চায়?

গেল ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমার সামরিক বাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখল করেছে। তারা বলেছে, মিয়ানমারের সর্বশেষ নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। কারণ এ নির্বাচনে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। মিয়ানমারের মূল স্রোতের জনগণ সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছে। সেনাবাহিনী তাদের দেশে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ পছন্দ করছে না। কাজেই পুলিশ ও সেনা সদস্যরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিলে নির্বিচার গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশের গুলিতে এ পর্যন্ত প্রায় ৫৫০ জন মানুষ মারা গেছে। সেনাবাহিনীর দিক থেকে মিয়ানমারের মূল স্রোতের জনসাধারণের সঙ্গে আপস-মীমাংসায় পৌঁছতে দেরি হলে সামরিক বাহিনী আরও অনেক মানুষকে হত্যা করবে বলে মনে হচ্ছে। মিয়ানমারের নাগরিকরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমে এসে নিজ দেশের পুলিশ-মিলিটারির বন্দুকের গুলিতে মারা যাচ্ছে। স্বজনহারাদের আহাজারিতে কান পাতা যায় না। গণতন্ত্রের দাবিতে যারা প্রাণ দিয়েছেন আমি তাদের বিদেহী আত্মার প্রতি সম্মান জানিয়ে একটি প্রশ্ন করতে চাই। মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামীরা তাদের দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রাম করছে আপাতদৃষ্টিতে এটিই একটি অমোঘ সত্য মনে হতে পারে। তারা তাদের নির্বাচিত সু চির পার্টি ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসিকে ক্ষমতায় দেখতে চাইছে। অর্থাৎ সামরিক শাসন নয়, মিয়ানমারিজরা সংবিধান পুনরুজ্জীবিত করে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ফিরে যেতে চায় বলে ধরে নেওয়া সহজ। তবু আমার মন থেকে কিন্তুটা কিছুতেই দূর হচ্ছে না। মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগার কারণ হচ্ছে মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামীরা কোন সংবিধান পুনরুজ্জীবিত করে কোন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে চায়? মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থিরা কি জানে না যে তাদের দেশে সংবিধান নিয়ে অনেক ভাঙা-গড়ার খেলা হয়ে গেছে। ১৯৪৭ সালে মিয়ানমার স্বাধীন হওয়ার পর একটি সংবিধান রচিত হয়েছিল যার আয়ু ছিল ১৯৬২ সাল পর্যন্ত। এরপর মিলিটারি শাসক নে উইন সেটি ছুড়ে ফেলে দিয়ে ১৯৭৪ সালে আরেকটি সংবিধান উপহার দিলেন। এরপর অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ২০০৮ সালে সামরিক শাসকরা আবার একটি সংবিধান উপহার দিলেন যেটিকে বলা যায় ‘এ কনস্টিটিউশন বাই দ্য মিলিটারি, অব দ্য মিলিটারি অ্যান্ড ফর দ্য মিলিটারি’। এ সংবিধান অনুযায়ী সামরিক শাসকরা মিয়ানমারের দুই কক্ষেই তাদের সিটের কোটা রেখে দিয়েছেন। অং সান সু চি ১০ বছর গৃহবন্দিত্ব কাটিয়ে এমনই একটি সংবিধানের অধীনে নির্বাচন করে সে সংবিধান অক্ষুণœ রেখে ক্ষমতায় গদিনশিন ছিলেন। মিয়ানমারবাসী গণতন্ত্র চায় তবে সেটি অং সান সু চি মডেল অর্থাৎ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে দেশ চালানো। অং সান সু চির পার্টি ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসিকে গদিনশিন করতে চাইলে বুঝতে হবে মিয়ানমারবাসী ২০০৮ সালের সংবিধানের পুনরুজ্জীবন চাচ্ছে। এমনটি যদি মিয়ানমারবাসীর চাওয়া হয়ে থাকে তাহলে মিলিটারি শাসকরা অকারণে কেন সু চির ক্ষমতায় বসাকে বাধাগ্রস্ত করছেন আর নাহক কেনই বা নিজ দেশের জনগণের বুকে অকাতরে গুলি চালাচ্ছেন? ১৯৪৭ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত মিয়ানমারের রাজনীতির ওঠাপড়ার ধরন দেখে মনে হয় মিয়ানমারের জনগণ এবং তাদের বর্তমান নেত্রী অং সান সু চি সাহস করে সত্যিকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেননি। সর্বশেষ যে নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হয়েছেন বলে দাবি করছেন সে নির্বাচনের আগে-পরে মিয়ানমারে শাসনতন্ত্র থেকে স্থায়ী সামরিক শাসনের অবসান ঘটানোর কোনো প্রতিশ্রুতি তিনি দেননি কিংবা ক্ষমতায় গেলে ভবিষ্যতে তিনি মিয়ানমারে সিভিল শাসন প্রতিষ্ঠার বস্তুনিষ্ঠ উদ্যোগ নেবেন এমন কোনো আভাসও দেননি। কাজেই মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী সাধারণ মানুষ যারা গণতন্ত্রের জন্য প্রাণপাত করছেন তারা নিজেদের স্বপ্নের ভাষা নিজেরা পড়তে পারেন না, নাকি মিলিটারিদের ভয়ে তারা সব বুঝেও না বোঝার ভান করছেন? মিয়ানমারবাসীকে বলব, আপনারা প্রথম গণতন্ত্রের অর্থ বুঝতে চেষ্টা করুন। এরপর একজন সত্যিকার গণতন্ত্রকামী নেতা বেছে নিন। তারপর একবুক সাহস নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। তা না হলে ১৯৪৭ থেকে শুরু করে আপনারা যে অন্ধকার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছেন সে বৃত্ত ভেঙে কোনো দিন আলোর মুখ দেখবেন না।

গণতন্ত্র মানে দেশের সব মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সিদ্ধান্তে সরকার গঠন করা। এ উদ্দেশ্য সামনে রেখে মিয়ানমারবাসী আন্দোলন করছে এমন কথা কীভাবে বিশ্বাস করব? মিয়ানমারের সব জনগোষ্ঠী কি আজও সমমর্যাদা নিয়ে দেশটির সুখ-দুঃখের ভাগিদার হওয়ার সুযোগ পেয়েছে? মিয়ানমারের সবা নৃগোষ্ঠী কি সমমর্যাদায় মিয়ানমারের নাগরিক? একটি দেশের ভিতর সামাজিক সমতা যদি না থাকে, জাতি-ধর্ম-পেশা নির্বিশেষে সব মানুষের মধ্যে দেশের সব নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার উদারতার অভাব থাকে তাহলে সেখানে গণতন্ত্রচর্চা অলীক কল্পনা। মিয়ানমারে মূল স্রোতের জনগোষ্ঠী অন্য সব নৃগোষ্ঠীর সম-অধিকারের দাবিকে তাচ্ছিল্য করছে বলেই কি তাদের এত দুর্দশা? মিয়ানমারের ক্ষমতালিপ্সু গোষ্ঠী তাদের জাতির এ দুর্বলতা পুঁজি করেই কি তাদের কায়েমি স্বার্থ হাসিল করছে না? সাম্প্রতিক সময়ে রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিয়ানমারের মূল স্রোতের বাসিন্দাদের আচরণ বিশ্ব দেখেনি? একটি দেশের সমাজে এক অংশের ওপর আরেক অংশ যদি হায়েনার পালের মতো হামলে পড়ে তাহলে কায়েমি স্বার্থবাদীরা তার সুযোগ নিয়ে একদিন দেশের সব মানুষের ওপর হামলে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। ১৯৪৭ থেকে আজ পর্যন্ত মিয়ানমারে যা ঘটছে তা ব্যাখ্যা করলে দেশটির সামাজিক অসমতার দিকে বারবার সবার চোখ যায়।

১৯৪৭ সালের আগস্টে ভারত ও পাকিস্তান সৃষ্টি হলো। আরেকদিকে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বার্মায় (মিয়ানমার) ব্রিটিশ রাজত্বের অবসান হলো। সে সময় পাকিস্তানের অংশ হিসেবে আমরা পূর্ব পাকিস্তানের বাসিন্দা হয়ে যাওয়ায় আমাদের জন্য বার্মা যাতায়াতের অবাধ স্বাধীনতা আর থাকল না। তবে বার্মার রাখাইন রাজ্য ও পূর্ব পাকিস্তানের কক্সবাজার এ দুই জনপদের মানুষের মধ্যে নিয়মিত আসা-যাওয়া এবং সামাজিক সম্পর্ক আগের মতোই অক্ষুণœ ছিল। রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বার্মার মূল জনগোষ্ঠী এবং কেন্দ্রের সামরিক-বেসামরিক শাসকদের বিমাতাসুলভ আচরণের কারণে রোহিঙ্গারা ঝাঁক বেঁধে বারবার বাংলাদেশ ভূখন্ডে আশ্রয় নিয়েছে। এমনভাবে মিয়ানমারের বড় একটি জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে শরণার্থী হওয়ার কারণে তারা তাদের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে দুনিয়ার সব মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। এতে বাংলাদেশের অনেক ঝক্কি ঝামেলা পোয়াতে হচ্ছে কিন্তু আসল ক্ষতি হচ্ছে কিংবা হয়ে গেছে মিয়ানমারের। রাষ্ট্র হিসেবে দুনিয়ার কাছে মিয়ানমার তার ভাবমূর্তি নষ্ট করে ফেলেছে। মিয়ানমার রাষ্ট্রের জন্মলগ্ন থেকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক বলে স্বীকার করে নিলে রোহিঙ্গা সমস্যা কখনই সৃষ্টি হতো না। আমার বিবেচনায় মিয়ানমারের বর্তমান নেত্রী অং সান সু চির বাবা অং সানের অবিবেচনাপ্রসূত আচরণের কারণে মিয়ানমারের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদের সূচনা হয়েছে। ব্রিটিশ শাসন থেকে বার্মা স্বাধীন হওয়ার আগের বছর অং সানের নেতৃত্বে বার্মার কচিং ও চীন জনগোষ্ঠীর সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি হয়েছিল যা প্যাংলং চুক্তি নামে পরিচিত। আসলে প্যাংলং চুক্তি স্বাক্ষরিত না হলে বার্মার ভিতরে জাতিগোষ্ঠীগুলোর অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছাত যার ফলে বার্মা এত সহজে স্বাধীনতা পেত না এটি এক ঐতিহাসিক ধারণা। সে কারণে প্যাংলং চুক্তি স্বাক্ষরের দিনটিকে বার্মিজরা ইউনিয়ন ডে হিসেবে মনে রেখেছে। প্যাংলং চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে কচিং ও চীন গোষ্ঠীর সঙ্গে সমঝোতা হওয়ার পাশাপাশি বার্মার অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর অবস্থান সে সময়ই স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন ছিল।

মিয়ানমার কেন যে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের দাবি অস্বীকার করে রোহিঙ্গা সমস্যার জন্ম দিল তা আমার কাছে সত্যি একটি বড় প্রশ্ন। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের বাসিন্দা এ এক ঐতিহাসিক সত্য। ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলের গোড়ার দিকে ফ্রান্সিস বুকানন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নির্দেশে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা সার্ভে করেছিলেন। তাঁর সার্ভে রিপোর্টে তিনি যেমন জীববৈচিত্র্য তুলে ধরেছেন তেমনি নাফ নদের এপার-ওপারের মানুষের কথাও তাঁর ডায়েরিতে লিখতে ভোলেননি। ১৭৯৮ সালের ৩ এপ্রিল তিনি তাঁর ডায়েরির পাতায় লিখেছেন, তিনি রামু নদীর পারে বড়সড় একটা গ্রামে গিয়ে পৌঁছলেন যেখানে প্রায় ১৫ হাজার রাখাইন লোক নিজ দেশ বার্মা থেকে বিতাড়িত হয়ে সেই গ্রামে আশ্রয় নিয়ে বাস করছে। এ মানুষগুলোর অনেকে আরাকান রাজ্যে রামু নদীর কিনারে আইনসংগত পত্তনি জমির মালিক ছিল। আবার আরাকান রাজ্যের অনেক বাসিন্দা জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রতিনিয়ত নাফ নদ পার হয়ে কক্সবাজারের জনপদে আসে। দিন, সপ্তাহ কিংবা মাসকাবারি কাজ শেষে তারা আবার আরাকানে ফিরে যায়। পাশাপাশি এমন দুটি দেশের মানুষের আনাগোনা নতুন কিছু নয়। জনসাধারণের এমন আনাগোনার কারণে তাদের নাগরিকত্ব নিয়ে গুরুতর কোনো সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে না। কিন্তু মিয়ানমার অনেক রকম ফালতু অজুহাত তৈরি করে যুগের পর যুগ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে তাদের দেশের নাগরিক বলে মানতে অস্বীকার করে আসছে। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের সমস্যা কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে না ঘরকা না ঘাটকা। ফলে মিয়ানমারের শাসকগোষ্ঠী যেমন তাদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করছে তেমনি নদীর এপারে বাংলাদেশ অংশের সুযোগসন্ধানীরা রোহিঙ্গাদের তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করতে দ্বিধা করছে না। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন, দেশি-বিদেশি এনজিও, কক্সবাজারের কিছু সুযোগসন্ধানী লোক, বাংলাদেশ সরকারের আমলাদের এক অংশ সবাই মিলে রোহিঙ্গাদের নিজেদের ভাগ্য গড়ার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে।

মিয়ানমারের সামরিক শাসকদের সঙ্গে বেসামরিক শাসকদের সব বিষয়ে মতের অমিল থাকলেও রোহিঙ্গা নির্যাতন এবং বিতাড়নের প্রশ্নে তাদের মধ্যে মতের গরমিল নেই। মিয়ানমারের সামরিক কিংবা বেসামরিক শাসকরা রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব স্বীকার করে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক বসবাস নিশ্চিত করলে বাংলাদেশ অংশে কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রের পথ বহু আগেই বন্ধ হয়ে যেত। মিয়ানমার গোঁয়ার্তুমি না করে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব স্বীকার করে নিলে রাজনৈতিক বিবেচনায় মিয়ানমার অনেক আগেই পৃথিবীতে মর্যাদার আসন পেতে পারত। তেমনি অর্থনৈতিক লাভের বিষয় বিবেচনা করলে সেখানেও মিয়ানমার পৃথিবীর সব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক সৃষ্টি করে নিজেদের অর্থনীতি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারত। মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সব সময় নিশ্চুপ থাকার নীতিতে বিশ্বাসী। রোহিঙ্গা নারী-শিশু মিয়ানমারের মিলিটারি কিংবা পুলিশের হাতে নির্যাতিত হলে কিংবা মারা পড়লে মূল স্রোতের মানুষ কোনো দিন একবার আহা বলার তাগিদ বোধ করে না। ২০২১ সালের শুরুতে মিয়ানমারের দৃশ্যপট বদলে গেছে। মিয়ানমারের মূল স্রোতের নাগরিকরা এবার তাদের পুলিশ ও মিলিটারির হাতে বেঘোরে মারা পড়ছে। মিয়ানমারবাসীর এ দুর্যোগের সময় বিশ্ববাসী তেমন জোরালো সাড়া দিচ্ছে না। আমার মনে হয় কিছু দিন আগে রোহিঙ্গাদের প্রতি অং সান সু চি সরকারের নির্মম আচরণের কথা স্মরণ করে বিশ্ববাসী তাঁকে সমর্থন দিতে দ্বিধান্বিত। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমি মিয়ানমারের নরহত্যার তীব্র প্রতিবাদ করছি। আমি বিশ্বাস করি মিয়ানমারবাসী যদি তাদের দেশের সব নাগরিকের সম-অধিকার নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হয় তাহলে এবারের আন্দোলনে তারা বিশ্বসমাজকে পাশে পাবে। বিশ্বসমাজ আন্তরিকভাবে মিয়ানমারকে কাছে টেনে নিলে তাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন শিগগিরই আলোর মুখ দেখবে।

লেখক : কথাসাহিত্যিক।

সর্বশেষ খবর