শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

নদী ভাঙনের অভিশাপ

পুনর্বাসন উদ্যোগ প্রশংসনীয়

নদী ভাঙন এক ভয়াবহ অভিশাপের নাম। অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ালেও সর্বস্ব হারানোর বিপদ সৃষ্টি করে না। কিন্তু নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি, জমিজমা সবকিছু গ্রাস করলে রাতারাতি একটি পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। বাংলাদেশে দারিদ্র্যসীমার নিচে যাদের অবস্থান তার একটি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নদী ভাঙনের শিকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। আশার কথা, নদী ভাঙনের শিকার অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর পুনর্বাসন সহায়তা কার্যক্রমের আওতায় নদী ভাঙনে ভিটেবাড়ি হারানো অতিদরিদ্র, ভূমিহীন ও দুস্থ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে। প্রথম দফায় ভাঙনকবলিত এলাকার ৫১ হাজার ৯৪ পরিবারকে পুনর্বাসন সহায়তা দিতে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ বিভাগ। ক্ষতিগ্রস্ত বসতবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি ও পরিবারের নির্ভরশীল সদস্য সংখ্যার ভিত্তিতে পুনর্বাসন সহায়তার পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে। পরিবারের সদস্য চারজন হলে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার, পাঁচজন হলে ৬০ হাজার এবং ছয়জন হলে সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে। সুবিধাভোগী পরিবার হিসেবে দরিদ্র পরিবার যাদের মাসিক আয় অনধিক ১৫ হাজার টাকা, ভূমিহীন পরিবার যাদের জমির পরিমাণ অনধিক দশমিক ০৫ শতাংশ, দুস্থ পরিবার যাদের উপার্জনক্ষম সদস্য নেই, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, বিধবা, স্বামী নিগৃহীত, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, হিজড়া, বেদে প্রভৃতি পরিবার এ সহায়তার আওতায় আসবে। উপকারভোগী পরিবার বাছাই করতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে নয় সদস্যের বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হবে। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোর জন্য আশীর্বাদ বলে বিবেচিত হবে। এ মহৎ উদ্যোগ যাতে স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্তভাবে বাস্তবায়ন হয়, সে বিষয়ে সরকারের চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। বিশেষ করে সুবিধাভোগী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিরা যাতে দুর্নীতির আশ্রয় না নেন সে ব্যাপারে সতর্কতার বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর