বুধবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

নির্বাচন কমিশন আইন

সব পক্ষের সদিচ্ছা বেশি গুরুত্বপূর্ণ

নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের পথে হাঁটছে সরকার। গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনের খসড়া অনুমোদন করাও হয়েছে। সংবিধানে কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের কথা বলা হলেও এযাবৎ সে পথে যায়নি কোনো সরকার। প্রচলিত প্রবচনের মতো কাজির গরু কিতাবে থাকলেও গোয়ালে না থাকার বিড়ম্বনায় ভুগেছে দেশ প্রায় অর্ধশতাব্দী। সংবিধানে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের যে তাগিদ দেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়নে নতুন কমিশন নিয়োগের শেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। সার্চ কমিটি রেখেই ইসি গঠনে আইন প্রণয়নের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের অনুসৃত পদ্ধতি আইনি রূপ পাবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার কারা হতে পারবেন আর কারা হতে পারবেন না তা খসড়া আইনে উল্লেখ করা হয়েছে। যোগ্যতার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে- তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। বয়স কমপক্ষে ৫০ বছর হতে হবে। কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, আধাসরকারি বা বেসরকারি বা বিচারবিভাগীয় পদে কমপক্ষে ২০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তাহলে কেউ প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা নির্বাচন কমিশনার হতে পারবেন। অযোগ্যতার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে- আদালতের মাধ্যমে কেউ অপ্রকৃতিস্থ হিসেবে ঘোষিত, দেউলিয়া ঘোষণার পর দেউলিয়া অবস্থা থেকে মুক্ত না হলে, অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব অর্জন বা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করলে, নৈতিক স্খলন এবং সে ক্ষেত্রে যদি ফৌজদারি অপরাধে কমপক্ষে দুই বছর কারাদন্ডে দন্ডিত হন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে দন্ডিত হলে, রাষ্ট্রীয় পদে থাকলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার হতে পারবেন না। নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণীত হলে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা পূরণ হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে আইন প্রণয়নের তাগিদ ছিল। তবে আইনের আওতায় নির্বাচন কমিশন গঠন হলেই দেশে ভোটের সংস্কৃতি ফিরে আসবে, নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের ইতি ঘটবে তা ভাবার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে নির্বাচনে প্রার্থী, সরকার, অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন কমিশনকে অঙ্গীকারবদ্ধ ভূমিকা পালন করতে হবে। যার গুরুত্ব এ-সংক্রান্ত আইনের চেয়েও বেশি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর