মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

রাসায়নিক গুদাম

অনুমতি ছাড়া স্থাপনের দায় কার

পুরান ঢাকার নিমতলী ও চুড়িহাট্টার ঘটনা থেকে শিক্ষা না নেওয়ার কারণেই সীতাকুন্ডের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণ গেল। অগ্নিদগ্ধ হয়ে কয়েক শ মানুষ লড়ছে মৃত্যুর সঙ্গে। যাদের সিংহভাগকে সারা জীবন পঙ্গু অবস্থায় বেঁচে থাকতে হবে। দেশে

যেখানে সেখানে রাসায়নিক পদার্থের গুদাম করার সুযোগ থাকায় চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের মজুদ গড়ে তোলা হয়েছিল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই। বিশেষজ্ঞদের মতে, সীতাকুন্ডের ডিপোয় যথাযথ নিরাপত্তা গাইডলাইন অনুসরণ করে এ রাসায়নিক

যৌগ সংরক্ষণ করা হয়নি। সে পরিপ্রেক্ষিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রামের ইতিহাসে রচিত হয়েছে কালো অধ্যায়। হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড সংরক্ষণের জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা গাইডলাইন রয়েছে; যা অনুসরণ করা খুবই জরুরি। সার্বিক ঘটনা পর্যবেক্ষণ শেষে বিশেষজ্ঞদের অভিমত, বিএম ডিপোয় নিরাপত্তা গাইডলাইন অনুসরণ করা হয়নি। হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড মূলত দাহ্য পদার্থ। বাতাসের সংস্পর্শে এলেই তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। একই সঙ্গে আগুনকে উজ্জীবিত করে। সীতাকুন্ডের কনটেইনার ডিপোয় বিপুল পরিমাণ হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ছিল। তাই আগুন নিয়ন্ত্রণ কষ্টকর হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসংলগ্ন শীলতপুরের ৭০ বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠেছে বিএম কনটেইনার ডিপো। আমদানি-রপ্তানির জন্য বিভিন্ন ধরনের পণ্যের কনটেইনার রাখা হয় এখানে। পাশাপাশি এ ডিপোর ভিতর রয়েছে

প্রায় ৫০০ মিটারের একটি টিনের শেড। যাতে রপ্তানির জন্য রাখা ছিল হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের বিপুল মজুদ। শনিবার রাতে বিস্ফোরণের পর ওই শেডের টিনের পুরো অংশই উড়ে গেছে। সীতাকুন্ডের অগ্নিকান্ডে ফায়ার সার্ভিসের নয় কর্মীর মৃত্যুর ঘটনা শুধু মর্মান্তিকই নয়, রাসায়নিক গুদামের আগুন নেভানোর ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতার অভাবই তুলে ধরেছে। নিমতলা ও চুড়িহাট্টার অগ্নিকান্ডের পর এ ধরনের আগুন নেভানোর জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও সুরক্ষা সরঞ্জাম সংগ্রহ করা উচিত ছিল। আমরা আশা করব সীতাকুন্ডে অনুমতি ছাড়াই রাসায়নিক গুদাম স্থাপনের দায় নির্ধারণ করা হবে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কুম্ভকর্ণের ঘুমের অবসান ঘটবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর