বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

চাঁদাবাজি চারদিকে

ওদের নখর ভাঙতে হবে

চাঁদাবাজদের অভয়ারণ্য হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে চাঁদাবাজি নেই। বলা যায় গুটিকয়েক ক্ষমতাধর ছাড়া দেশের ১৮ কোটি মানুষই তাদের কাছে জিম্মি। পরিবহন সেক্টর, নির্মাণ খাত, ক্ষুদ্র ব্যবসা, ফুটপাত কিংবা আইনি সহায়তা- চাহিদামতো বখরা না দিলে কোথাও মেলে না কাক্সিক্ষত কিছু। রাজধানী থেকে মফস্বল শহর সর্বত্রই ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে গেলেই বিভিন্ন ছাত্র-যুব সংগঠনকে দিতে হয় অর্থ। অপারগতা প্রকাশ করলেই দাবি ওঠে ইট, বালু, সিমেন্ট সাপ্লাইয়ের। শান্তিতে নেই সরকারি কাজের ঠিকাদাররাও। কাজ নিতে ও বাস্তবায়ন করতে তাদের গুনতে হচ্ছে ২ থেকে ২০ শতাংশ কমিশন। আবার চাঁদা বা ঘুষ না দিলে মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়া হয় অর্থের সরবরাহ। এর বাইরে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বেড়ে গেছে নামে-বেনামে চাঁদাবাজি। উৎসবকেন্দ্রিক চাঁদায় রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা। না দিলেই শুরু হয় নানা হয়রানি। গার্মেন্টসে ঝুট ব্যবসার নামে চাঁদাবাজির হুমকি থাকে বারো মাস। অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয় না। নানা কারণে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদেরও দিতে হয় অর্থ। এসব বিষয়ে অনেকে র‌্যাব-পুলিশে লিখিত ও মৌখিক প্রতিদিনই অভিযোগ করে চলেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে চাঁদা না দিলে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে অরক্ষিত জায়গাজমি দখলের অভিযোগও বাড়ছে। রাজধানীর ফুটপাতে ব্যবসা করছেন তিন লাখ হকার। সেখান থেকে বছরে চাঁদা উঠছে ২ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। ফুটপাতে একজন হকারকে এলাকাভেদে ১০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয়। চাঁদাবাজির কারণেই প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে অবধারিতভাবে। কারণ পণ্যবাহী প্রতিটি ট্রাক থেকে শত শত টাকা আদায় করে কখনো পুলিশ, কখনো পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের চাঁদাবাজরা। দেশবাসীকে স্বস্তি দিতে হলে চাঁদাবাজদের নখর ভাঙতে হবে শক্তভাবে। আর দেরি না করেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর