রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি

অপদখলের প্রবণতা বন্ধ হোক

দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর হাজার হাজার একর জমি উধাও হয়ে গেছে। রাজধানী থেকে প্রত্যন্ত এলাকায় চলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি লোপাটের ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল তো বটেই মাদরাসা নামের ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমিও গিলে খাচ্ছে প্রভাবশালী নামের দস্যুরা। খোদ রাজধানীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল জমি বেদখল হয়ে আছে যুগ যুগ ধরে, তা দেখারও কেউ নেই। রাজধানীতে স্কুল-কলেজ এমনকি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি বেদখলের ঘটনাও কম নয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত বছরের মার্চ থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করা হয়েছে তার মধ্যে ৮৬৯ একর জমি বেহাত হওয়ার প্রমাণ মিলেছে। এসবের মধ্যে স্কুল-কলেজের জমি রয়েছে ৫৭৬ একর আর কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি ২৯৩ একর। বোদ্ধাজনদের মতে, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য যে জিনিস সবার আগে প্রয়োজন তা হচ্ছে জমি। নির্ধারিত পরিমাণ কাম্য জমি না থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুমতিও পাওয়া যায় না। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি বেহাত হয়ে যাচ্ছে, কেউ কেউ বিক্রি করে দিচ্ছেন। এগুলো খুব খারাপ দৃষ্টান্ত। এ অনিয়মগুলো বন্ধের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে অনেক অনিয়মই কমে যাবে এবং মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত হবে। বাংলাদেশে জমিজমা বেদখলের ঘটনা অহরহ ঘটছে এবং এটি আমাদের সমাজ ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়েছে।  দুনিয়ার কোনো সভ্য দেশে একজনের জমি অন্য কারোর অপদখলের সুযোগ নেই বললেই চলে। কিন্তু আমাদের দেশে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি অপদখল অতি সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে।  মসজিদ মন্দিরের মতো স্পর্শকাতর জমি বেদখলের ঘটনাও অসংখ্য। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি অপদখলের ঘটনা সমাজের দেউলিয়া অবস্থাই কার্যত তুলে ধরছে। এ ব্যাপারে প্রশাসন কঠোর হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর