১৫৮৬ খ্রিস্টাব্দে ঈশা খাঁ মুঘলদের সঙ্গে এক শান্তিচুক্তি সম্পাদন করেন। ঈশা খাঁ ও মুঘল সুবাদার শাহবাজ খানের মধ্যে সম্পাদিত শান্তিচুক্তির শর্তানুযায়ী আত্মসমর্পণের প্রতীক হিসেবে মাসুম খানের ছেলেকে সম্রাটের দরবারে পাঠানো হয়। এমন সিদ্ধান্তও গৃহীত হয় যে, মাসুমের জন্য সবচেয়ে উত্তম কাজ হবে হজব্রত পালনের জন্য মক্কায় গমন এবং পরিশেষে দিল্লিতে সম্রাটের দরবারে পৌঁছানো। এ মীমাংসার পরও মুঘলের বিরুদ্ধে মাসুম খানের যুদ্ধ শেষ হয়নি। কোচবিহারের রাজা ও মুঘলদের সামন্ত লক্ষ্মীনারায়ণের প্রতিদ্বন্দ্বী রঘুদেবের প্রতি ঈশা খাঁর সমর্থন কেন্দ্র করে ঈশা খাঁ নতুনভাবে মুঘল সুবাদার মানসিংহের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। ঈশা খাঁ রঘুদেবের সাহায্যে কোচবিহারে অভিযান করলে মানসিংহ এর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ঈশা খাঁর আবাসস্থল লুণ্ঠনের জন্য তার ছেলে দুর্জন সিংহের নেতৃত্বে স্থল ও জলপথে এক অভিযান পাঠান। নৌপথে প্রেরিত বাহিনী পথে যথেচ্ছ লুণ্ঠন চালিয়ে ঈশা খাঁ ও মাসুম খানের পারিবারিক আবাসস্থল কাত্রাবো অভিমুখে অগ্রসর হতে থাকে। ঈশা খাঁ ও মাসুম খানের সম্মিলিত বিশাল নৌবহর দুর্জন সিংহের নৌবাহিনীকে বিক্রমপুরের ১৯ কিলোমিটার দূরে এক স্থানে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে (৫ সেপ্টেম্বর, ১৫৯৭)। যুদ্ধে দুর্জন সিংহসহ বহু সৈন্য নিহত এবং কিছুসংখ্যক বন্দি হয়। বস্তুত এটিই ছিল মুঘল বাহিনীর বিরুদ্ধে মাসুম খানের শেষ যুদ্ধ। মাসুম খান ছিলেন সম্রাট আকবরের শাসনামলে সবচেয়ে চমকপ্রদ এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। অসাধারণ চাতুর্য ও কৌশলে তিনি বিহারে মুঘল সামরিক কর্মকর্তাদের বিদ্রোহের সূচনা করেন এবং অচিরেই বাংলার বিদ্রোহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিহারের বিদ্রোহীদের সংযোগ ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত বাংলায় বিদ্রোহীদের সর্বময় নেতৃত্বের অধিকারী হন। প্রথমে উত্তরবঙ্গের কাকশালদের এবং পরে ভাটির অধিপতি ঈশা খাঁ মসনদ-ই-আলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার মাধ্যমে তিনি মুঘলদের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ বিহার ও বাংলায় একের পর এক এমন সব বিদ্রোহ সংঘটিত করেন যে, এর জন্য সম্রাট আকবরকে প্রায় ১৭ বছর (১৫৮০-১৫৯৭) এ বিদ্রোহ দমনে সামরিক বাহিনী নিয়োজিত রাখতে হয়। মাসুম খান ছিলেন এক অসাধারণ সংগঠক। তাঁর জীবনচরিত বীরত্ব, সাহসিকতা ও চমকপ্রদ সমরনায়কত্বের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি বরাবরই ছিলেন দৃঢচিত্ত, অসাধারণ মনোবলের অধিকারী। মুঘল সেনাপতিদের বিরুদ্ধে তাঁর যুদ্ধবিগ্রহ থেকে স্পষ্টই বোঝা যায়, একজন কুশলী যোদ্ধার সার্বিক গুণাবলির অধিকারী ছিলেন তিনি। কাকশালরা যখন রণক্ষেত্রে তাঁকে পরিত্যাগ করে যায় তখন অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে ভাটির অধিপতি ঈশা খাঁর সঙ্গে তিনি গড়ে তোলেন মৈত্রী সম্পর্ক এবং যৌথভাবে মুঘল আগ্রাসন প্রতিহত করেন। শেষ অবধি তিনি মুঘলদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যান, কখনো আপস বা নতিস্বীকার করেননি। সুদূর আফগানিস্তান থেকে বাংলায় একজন বহিরাগত হয়েও মাসুম খান কালক্রমে বাংলার রাজনীতিতে প্রাধান্য লাভ করেন। কোনো সুনির্দিষ্ট ও স্থায়ী রাজ্য গড়ে তুলতে না পারলেও বাংলার বৃহত্তর অংশে স্বীয় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৫৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১০ মে কাত্রাবোয় তাঁর মৃত্যু হয়। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মাসুমাবাদে একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত সমাধিসৌধে তিনি সমাহিত আছেন। সম্ভবত সৌধটি নিজেই নির্মাণ করান।
শিরোনাম
- গাইবান্ধায় ফিস্টুলা নির্মূলে কাজ করছে ল্যাম্ব
- শাহবাগে ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের অবস্থান, যান চলাচল বন্ধ
- সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়ল
- গণতন্ত্রের পথ থেকে বিচ্যুত হওয়ার সুযোগ নেই : আমীর খসরু
- চট্টগ্রাম কারাগারে কয়েদির মৃত্যু
- নিউক্যাসল বাংলাদেশ কমিউনিটির ১০ বছর পূর্তি উদযাপন
- বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী কানাডা
- শিশুদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে শিক্ষার পরিবেশ আনন্দদায়ক হতে হবে : গণশিক্ষা উপদেষ্টা
- রাজনীতিতে সহনশীলতা না থাকায় সমাজে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে : রিজভী
- শেরপুরের চরাঞ্চলে ব্রিজের অভাবে চরম ভোগান্তি
- মাদকের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ তুলতে হবে: এ্যানি
- রাতে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিএনপির বৈঠক
- নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শপিং কমপ্লেক্সে অটোরিকশা, আহত ২
- চুয়াডাঙ্গায় বাসের ধাক্কায় নারীর মৃত্যু, আহত ২
- পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামি ছিনতাই, গ্রেপ্তার ১১
- ভূমিকম্প আতঙ্কে ৬ দিনের জন্য বন্ধ জবি
- বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ২৪ ঘণ্টায় ৯৪ ভূমিকম্প
- বিশাল জয়ে মুশফিকের শততম টেস্ট রাঙালো বাংলাদেশ
- ঢাবির প্রভোস্ট কমিটির জরুরি সভায় তিন সিদ্ধান্ত
- রাজশাহীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ১৮
মুঘলদের সঙ্গে ঈশা খাঁর চুক্তি
প্রিন্ট ভার্সন
টপিক
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর
‘সিইও অব দ্য ইয়ার–২০২৫’ পুরস্কারে ভূষিত সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিন
১৪ মিনিট আগে | কর্পোরেট কর্নার
খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শান্তিকালীন পদকপ্রাপ্ত সেনাসদস্যদের সংবর্ধনা ও পদক প্রদান
২৩ মিনিট আগে | জাতীয়