বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

খেলাপি ঋণ

ব্যাংকারদের জবাবদিহিতা জরুরি

ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে লোপাট করা একশ্রেণির লুটেরা ব্যবসায়ীর মজ্জাগত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এ ব্যাপারে সহযোগী হিসেবে ভূমিকা পালন করছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের প্রভাবশালী সদস্যসহ প্রভাবশালী কিছু ব্যাংক কর্মকর্তা। বরাদ্দকৃত ঋণের ৫ বা ১০ শতাংশ তারা পান উপহার হিসেবে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় চট্টগ্রামের ৫৫ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। ঋণের ২০ হাজার কোটি টাকা মেরে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন অন্তত ৩৩ ব্যবসায়ী। টাকা ফেরত না দেওয়ায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে ব্যাংকপাড়ায়। পরিচালক-উদ্যোক্তাদের সঙ্গে ঋণগ্রহীতাদের সম্পর্ক থাকায় ঋণ দিতে বাধ্য হন এমন অজুহাত তুলেছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। ফলে এসব ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়মনীতি অনুসরণ করেন না তারা। এভাবে ঋণ নিয়ে অনেকেই আত্মসাৎ করে ব্যাংকগুলোকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছেন। অর্থ আদায়ে তারা ঋণদাতা ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। যারা হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পালিয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে এ উদ্যোগ যে কাজে আসবে না তা একটি ওপেন সিক্রেট। ঋণ নিয়ে বিপুলসংখ্যক ব্যবসায়ী দেশ ত্যাগ করায় ঋণ উদ্ধারে ব্যাংক কর্মকর্তাদের এখন প্রতিদিন আদালতে দৌড়াতে হচ্ছে। ব্যাংকের টাকা জনগণের আমানত। তাই এ টাকা উদ্ধারে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। ব্যাংকাররা ঋণের জন্য পরিচালকদের ওপর দায় চাপালেও যথাযথ নিয়মনীতি না মেনে ঋণ দেওয়ার দায় তারা কিছুতেই এড়াতে পারেন না। ব্যাংকাররা নিজেরা সৎ থাকলে নিয়মনীতি না মেনে শত শত কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার বিষয়টি রোধ করা যেত। প্রতিটি বড় ঋণের ক্ষেত্রে শুধু পরিচালনা পর্ষদের সদস্য নয় ব্যাংকারদের পকেটও যে স্ফীত হয় এটি একটি সর্বজন জ্ঞাত বিষয়। ফলে খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংকারদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর