পদার্র্থবিজ্ঞান ও আইনস্টাইন দুটো একে অন্যের পরিপূরক। আইনস্টাইনহীন পদার্থবিজ্ঞানের কোনো মূল্য নেই বললেই চলে। ১০০ বছরের বেশি সময় আগে ১৯০৫ সালে সুইজারল্যান্ডের পেটেন্ট অফিসের এক কেরানিকে নিয়ে বিজ্ঞান বিশ্বে তুমুল হইচই পড়ে যায়। আইজ্যাক নিউটনের পরে পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাসে এ এক অন্যতম বিস্ময়কর সাফল্য। স্থান-কালের পরিধি ভেঙে এক অসাধারণ জ্ঞানের অধিকারী মনীষী ছিলেন এলবার্ট আইনস্টাইন। ১৮৭৯ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত ছিল আইনস্টাইনের বিজ্ঞানের জয়জয়কার। ১৯০৫ সালে এ মহান বিজ্ঞানী বেশকটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করে বিজ্ঞানের জয়যাত্রার এক গৌরবজনক অধ্যায়ের সূচনা করেন। সে কালজয়ী তত্ত্বের মাধ্যমেই আইনস্টাইন বর্তমানেও বিজ্ঞান দুনিয়ার শীর্ষতম স্থানে অধিষ্ঠিত আছেন। কারণ আইনস্টাইনের পরবর্তী সময়ে তাঁর মতো অসাধারণ ধীরশক্তিস¤পন্ন জ্ঞানী ব্যক্তি বিজ্ঞানের জটিলতার গভীরতায় প্রবেশ করার কোনো খবর নেই, যদিও বিশ্বব্রহ্মান্ডের রহস্য উদঘাটনের কিছু কাজে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আরেক কিংবদন্তি পদার্থবিদ স্টিফেন হকিংকে বিজ্ঞানীমহল আইনস্টাইনের পরবর্তী স্থান দেওয়ার ভাবনাচিন্তা করেছেন। তবে খুব শিগগিরই মগজের সৃজনশক্তির সাহায্যে কেউ বিজ্ঞান দুনিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারবে, এ ভাবনাও ভুল। এর জন্য কতদিন অপেক্ষা করতে হবে তা অনুমান করাও দুঃসাধ্য।
 ১৯০৫ সালে বিখ্যাত জার্মান পত্রিকা ‘এনালেন ডার ফিজিক’-এ আইনস্টাইনের যুগান্তকারী গবেষণাপত্রগুলো প্রকাশিত হয়। এ নিবন্ধগুলোই ধ্রুবপদী পদার্থবিজ্ঞানের জগতে এক নবজাগরণের সূচনা করে। আইনস্টাইন নিউটন, ডারউইনের সারিতেই সম্মানজনক জায়গা করে নেন। এনালেন ডার ফিজিকে প্রকাশিত তাঁর প্রথম নিবন্ধটি ছিল আলোকবিদ্যুৎ প্রভাব সম্পর্কিত। ১৯০৫ সালের ৯ জুন প্রকাশিত এ নিবন্ধটি ছিল কোয়ান্টাম বিপ্লব সম্বন্ধীয়। আইনস্টাইন কোয়ান্টাম তত্ত্বের সফল প্রয়োগে আলোকবিদ্যুৎ প্রভাবের সমীকরণ গঠন করেছিলেন। কিছু ধাতব পদার্থের উচ্চ প্রাবল্যের সমীকরণই গঠন করা হয়েছিল এ গবেষণাপত্রে। এ তত্ত্বে কিছু ধাতব পদার্থের আলোকরশ্মি পতিত হলে ওই পদার্থের পৃষ্ঠভাগের বন্ধনশক্তি অতিক্রম করে ইলেকট্রন নির্গত হয়। এ বেরিয়ে পড়া ইলেকট্রন বিদ্যুৎ প্রবাহের সৃষ্টি করে। অর্থাৎ প্রক্রিয়ার সহায়তায় আলোকশক্তিকে বিদ্যুৎশক্তিতে রূপান্তরিত করা হলো। এটাই হলো আলোকবিদ্যুৎ প্রভাব। পরবর্তীকালে এ ঘটনার জন্য ১৯২১ সালে আইনস্টাইনকে পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়।
১৯০৫ সালে বিখ্যাত জার্মান পত্রিকা ‘এনালেন ডার ফিজিক’-এ আইনস্টাইনের যুগান্তকারী গবেষণাপত্রগুলো প্রকাশিত হয়। এ নিবন্ধগুলোই ধ্রুবপদী পদার্থবিজ্ঞানের জগতে এক নবজাগরণের সূচনা করে। আইনস্টাইন নিউটন, ডারউইনের সারিতেই সম্মানজনক জায়গা করে নেন। এনালেন ডার ফিজিকে প্রকাশিত তাঁর প্রথম নিবন্ধটি ছিল আলোকবিদ্যুৎ প্রভাব সম্পর্কিত। ১৯০৫ সালের ৯ জুন প্রকাশিত এ নিবন্ধটি ছিল কোয়ান্টাম বিপ্লব সম্বন্ধীয়। আইনস্টাইন কোয়ান্টাম তত্ত্বের সফল প্রয়োগে আলোকবিদ্যুৎ প্রভাবের সমীকরণ গঠন করেছিলেন। কিছু ধাতব পদার্থের উচ্চ প্রাবল্যের সমীকরণই গঠন করা হয়েছিল এ গবেষণাপত্রে। এ তত্ত্বে কিছু ধাতব পদার্থের আলোকরশ্মি পতিত হলে ওই পদার্থের পৃষ্ঠভাগের বন্ধনশক্তি অতিক্রম করে ইলেকট্রন নির্গত হয়। এ বেরিয়ে পড়া ইলেকট্রন বিদ্যুৎ প্রবাহের সৃষ্টি করে। অর্থাৎ প্রক্রিয়ার সহায়তায় আলোকশক্তিকে বিদ্যুৎশক্তিতে রূপান্তরিত করা হলো। এটাই হলো আলোকবিদ্যুৎ প্রভাব। পরবর্তীকালে এ ঘটনার জন্য ১৯২১ সালে আইনস্টাইনকে পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়।
আইনস্টাইনের দ্বিতীয় নিবন্ধ প্রকাশ পায় ১৮ জুলাই। নিবন্ধের শিরোনাম ছিল “On the motion of small particles suspended in liquid at rest required by the Molecular kinetic Theory of Heat?”
ব্রাউনের গতিতত্ত্ব নামে পরিচিত এ তত্ত্ব রবার্ট ব্রাউন ১৮২৭ সালে প্রকাশ করা তত্ত্বের মতোই বলা যায়। ব্রাউন তাঁর সূত্রের ব্যাখ্যা করেন এভাবে কোনো জলীয় পদার্থে মিশ্রিত অণুবীক্ষণযোগ্য কণিকাগুলো তরল পদার্থের তালিকায় এক গতিদান করে। ধোঁয়ায় কণিকার ক্ষেত্রেও এ গতি ধরা পড়ে। আইনস্টাইন এ ব্রাউনীয় তাত্ত্বিক বিশ্লেষণকে আরও এগিয়ে নিয়ে যান। এর ফলস্বরূপ আইনস্টাইন জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।
আইনস্টাইনের তৃতীয় ও চতুর্থ গবেষণাপত্র ছিল ‘বিশেষ আপেক্ষিকতাবাদ’ সম্পর্কীয়। বিশেষ আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্বের মাধ্যমে আইনস্টাইন বোঝাতে চান যে স্থান নিরপেক্ষ পরম সময় বা সময় নিরপেক্ষ পরম স্থানের ধারণার কোনো বিশ্বজনীন ভিত্তি নেই, গতিশীল পদার্থের ভর ধ্রুব রাশি নয় ও পদার্থ ভরশক্তি থেকে এবং শক্তি ভর থেকে রূপান্তরিত হতে পারে। এ ব্যাখ্যা তিনি শুধু এক সমীকরণের সহায়তায় প্রকাশ করেছিলেন। পদার্থবিজ্ঞানের বিস্মৃতি ঘটানোর ক্ষেত্রে তার সাধারণ সমীকরণটি হলো E=Mc2। এতে ই-শক্তি, এম- ভর ও সি হলো আলোর বেগ (সি এক বিশ্বজনীন ধ্রুব)। মজার ব্যাপার হলো এ আপেক্ষিকতাবাদের ব্যাপারটি আইনস্টাইনের মাথায় এসেছিল ছেলেবেলায়। সে সময়ে তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। বিশেষ আপেক্ষিকতাবাদের ঘোষণার পরে ১৯১৬ সালে তিনি ‘সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব’ General Theory of Relativity বা ‘আপেক্ষিক মহাকর্ষণ তত্ত্ব’ (Relativistic of Gravitation) ঘোষণা করেন। এ তত্ত্বের সাহায্যে তিনি দেখিয়েছিলেন যে মহাকর্ষণ, নিউটনের মতে একটি বল বা শক্তি নয়। এ তত্ত্বই বিশ্বজুড়ে আলোড়নের সৃষ্টি করে। ১৯১৯ সালে এ মহাকর্ষণ তত্ত্ব সঠিক প্রমাণিত হওয়ায় আইনস্টাইন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। মহান বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের চারটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হওয়ার শতবর্ষ পূর্ণ হলো এ বছরে। শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে জনসাধারণের মধ্যে পদার্থবিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান বিষয়ে সজাগতা সৃষ্টির উদ্দেশে ২০০৫ বর্ষকে বিশ্ব পদার্থবিজ্ঞান বর্ষ হিসেবে উদযাপনের আয়োজন চলছে। ইউনেস্কোও পৃথকভাবে এ বর্ষ উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। উল্লেখ্য, এ বছর আইনস্টাইনের মৃত্যুর অর্ধশতবার্ষিকীও। ১৯৫৫ সালের ১৮ এপ্রিল এ মনীষীর প্রয়াণ ঘটে। ইউনেস্কোর ২০০৫ বর্ষকে পদার্থবিজ্ঞান বর্ষ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অন্য কারণও রয়েছে। তার মধ্যে (ক্ষ) পদার্থবিজ্ঞান প্রকৃতির রহস্য উন্মোচনে উল্লেখযোগ্য ভিত্তি প্রস্তুত করেছে। (ক্ষ) মানব সভ্যতার প্রগতির জন্য বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্র তৈরিতে পদার্থবিজ্ঞান শিক্ষা যথেষ্ট সহায়তা করেছে। যদিও বেশির ভাগ প্রযুক্তিই গড়ে উঠেছে মূলত পদার্থবিজ্ঞান গবেষণা ও প্রয়োগের ওপর ভিত্তি করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং আমাদের দেশেও বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক মহাজ্ঞানী আইনস্টাইনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এ বর্ষ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
 
                         
                                     
                                                             
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                        