বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নতুন সোপানে পদার্পণ করতে যাচ্ছে অন্তর্র্বর্তী সরকারের আমলেই। আশা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এবং সে দেশের রাজস্ব দপ্তরের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট ম্যানের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফরে অর্থনৈতিক সংস্কার নিয়ে দুই পক্ষের আলোচনার ফলশ্রুতিতে নতুন ভবিষ্যতের দিকে চোখ রাখছে দুই দেশ। ইতোমধ্যে ঢাকায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় উঠে এসেছে, সঠিক অর্থনৈতিক সংস্কার হলে বাংলাদেশে উন্নয়ন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনে বেসরকারি খাতে মার্কিন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহায়তা বাড়বে। বৈঠক শেষে মার্কিন দূতাবাসের বার্তায় জানানো হয়েছে, জ্বালানি নিরাপত্তা থেকে শুরু করে ডেটা সেন্টার এবং পরিবহন খাতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে। অর্থনৈতিক সংস্কার যথাযথভাবে সম্পন্ন হলে মার্কিন বেসরকারি খাত বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে শিল্পোন্নত দেশ। স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময়ে দুই পক্ষের সম্পর্কের টানাপোড়েন সত্ত্বেও নানা ক্ষেত্রে মানবিক সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে এগিয়ে এসেছে। করোনাকালে বাংলাদেশ ভারত ও চীনের কাছ থেকে ভ্যাকসিন কিনেছে বিপুল অর্থ ব্যয় করে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র বিনামূল্যে হাজার হাজার কোটি টাকার ভ্যাকসিন অনুদান হিসেবে দিয়েছে মানবিক চেতনার প্রতিফলন ঘটিয়ে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রথম থেকেই সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে। এক্ষেত্রে অগ্রগতির নিশ্চয়তা দিয়েছে দীর্ঘ পৌনে ১৬ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতন। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সংস্কার হলে অর্থাৎ আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা এবং ঘুষ দুর্নীতির থাবা থামাতে পারলে মার্কিন বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশমুখী হতে উদ্বুদ্ধ হবে। বিশ্বের সবচেয়ে অগ্রসর দেশ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিষয়ে আগ্রহী হলে অন্যান্য দেশের বিনিয়োগও বাড়বে যৌক্তিক কারণে। যা নিশ্চিতকরণে অর্থনৈতিক সংস্কারের বিষয়টি সরকারের কাছে আরও গুরুত্ব পাবে এমনটিই প্রত্যাশিত।