শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

শামসুর রাহমানের অগ্রন্থিত গদ্য

সংগ্রহ ও ভূমিকা : শেখ মেহেদী হাসান

শামসুর রাহমানের অগ্রন্থিত গদ্য

শামসুর রাহমান (২৩ অক্টোবর ১৯২৯-১৭ আগস্ট ২০০৬)। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। তাঁর জন্ম ঢাকার মাহুতটুলি। বাবা মুখলেসুর রহমান চৌধুরী, মা আমেনা বেগম। ঢাকা নগরেই তাঁর বেড়ে ওঠা। নাগরিক কষ্ট, দুঃখ-সুখ তাঁর কবিতায় বিশেষভাবে উঠে এসেছে। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে পূর্ববাংলার বাঙালি নিজের পথ খুঁজতে শুরু করল, কবি হিসেবে শামসুর রাহমানের সূচনাও সেখান থেকেই। ১৯৬০-এ তাঁর প্রথম কাব্য, প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে-র প্রকাশ কবিতায় তাঁর অধিকার প্রতিষ্ঠা করে। কলকাতা থেকে বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত কবিতা পত্রিকায় তাঁর রুপালি স্নান প্রকাশের মাধ্যমে কবিতার বৃহত্তর বাংলায় তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে। ১৯৬০ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত তিনি রেডিও-তে কাজ করার পর মর্নিং নিউজ, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রা-য় সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

স্বাধীনতার পরও শিক্ষিত মধ্যবিত্তের সোচ্চার আন্দোলনে শামসুর রাহমান নিজের কবিতা সমর্পণ করেছিলেন। গত শতকের সত্তর এবং আশির দশকে তাঁর কবিতা ওই সময়ের রাজনৈতিক আন্দোলনে মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছিল। প্রথম জীবনে রোমান্টিকতাই তাঁর কবিতার অন্যতম প্রধান বিষয়বস্তু হলেও পরবর্তীতে রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয় নিয়ে তিনি লিখেছেন। তাঁর কবিতার ভাষা আড়ালের নয়। বাঙালি মধ্যবিত্তের প্রতিবাদ নায্যতা দেশ রাজনীতি ও নৈতিকতা ভাষা। নিম্নমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত, প্রগতিশীল তার কবিতার পঙ্ক্তির কাছে যেন দুমড়ে পড়ে। তিনি হয়ে ওঠেন আশার প্রতীক। বাংলা সাহিত্যের পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে তাঁর কবিতা, গান, গল্প ও গদ্য। বাঙালির সব আন্দোলন-সংগ্রামের গৌরবদীপ্ত অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে তাঁর কবিতায়। বিদ্রোহ থেকে শুরু করে প্রেমের অনুভূতি-শব্দকে হাতিয়ার করে সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় অনায়াস বিচরণ করেছেন বাংলা সাহিত্যের এই মহিরুহ। জীবনের সত্য-সুন্দরকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অনন্য।

শামসুর রাহমানের প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা শতাধিক। তাঁর রচনা বহুল পঠিত, প্রশংসিত। তিনি নিজের অভিজ্ঞতা-অনুভূতি-স্বপ্ন-কল্পনার সঙ্গে নতুন একটা বোঝাপড়ায় নেমেছিলেন, যা থেকে তৈরি হয়েছে কবিতার নতুন আঙ্গিক, ভাষাশৈলী। কবিতার পাশাপাশি তাঁর গদ্য, গানে তৈরি হয়েছে নতুন ব্যঞ্জনা। আর এ কাজটি নিরন্তর করে গেছেন তিনি।

বাংলা ভাষার মহত্তম কবি শামসুর রাহমানের সঙ্গে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পর্কের সূত্রে তাঁর একাধিক রচনা, চিঠিপত্র আমার হস্তগত হয়। ‘ভাবনার খোলা আকাশে কিছু চলমান মেঘ’ রচনাটি কবি ২০০২ সালের ডিসেম্বর মাসে রচনা করেন। যা অতিত্রাক্ষর নামে একটি লিটল ম্যাগাজিনে ছাপা হয়। এ লেখা কোনো সংকলনে স্থান পায়নি।  তাঁর লেখা ‘আমার বাবার মত’, ‘হৃদয়ে হাহাকার’ ও ‘বর্ষার কবিতা’ কবিতা তিনটি ১৯৯৮ সালের বিভিন্ন সময় রচিত। দুটি কবিতাই অপ্রকাশিত। কবির প্রয়াণ দিবসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এ রচনাগুলো মুদ্রণ করা হলো।

সর্বশেষ খবর